১১ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ১০:৪৫

চালের দামে অস্বস্তি

রাজধানীর বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চড়া পিয়াজের দাম আরো একধাপ কমেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পিয়াজে ৭-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে চালের দাম বাড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। অবশ্য বিক্রেতাদের দাবি, চালের বাড়তি দাম মনে হলেও নতুন করে আর বাড়েনি। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, এখনো সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী।

আগের অবস্থায় আসেনি। এর মাঝে মাস দু’য়েক পর রমজান মাস শুরু হবে। রমজান শুরু হলে তখন বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে দর কোথায় গিয়ে ঠেকবে। কাওরান বাজারে মিনিকেট প্রতিকেজি ৬৩ থেকে ৬৪ টাকা, বিআর আটাশ ৫০ টাকা, মোটা চাল (স্বর্ণা) ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, জিরা শাইল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা মূল্য অনুযায়ী, কেজি প্রতি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা, ১ নম্বর মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা ও স্বর্ণা এবং পারিজা ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছ। কাওরান বাজারের চাল বিক্রেতা শফিক বলেন, আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কাওরান বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেটের দাম বেড়েছে ১/২ টাকা করে। অন্য চালের দামও বেড়েছে। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছিল। এই সপ্তাহে নতুন করে আর দাম বাড়েনি। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি ও দেশি পিয়াজের দাম কেজিতে অন্তত ৭-১০ টাকা কমেছে। খুচরামূল্য অনুযায়ী, দেশি পিয়াজ কেজি প্রতি ৪৪-৫০ টাকা ও আমদানি করা পিয়াজ ৪১-৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজ বিক্রেতা আমিনুল বলেন, গত শুক্রবার দেশি ও ভারতীয় পিয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে এই সপ্তাহে দেশি পিয়াজের পাল্লা ১৮০ টাকায় নেমেছে। ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এদিকে হাতিরপুল কাঁচাবাজারে ৪৫ টাকায় প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্যে দেখা গেছে, প্রতিকেজি ৩৫ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে গত এক মাসে পণ্যটির দাম কমেছে ১৯ শতাংশ। এছাড়া কেজি প্রতি আমদানি করা রসুন দাম বেড়ে ১০০ টাকা ও দেশি রসুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারে পিয়াজের দাম কমলেও আমদানি রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিনি ৬০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৭০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সবজির খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিকেজি টমেটো ১০-১৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, মূলা ১৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা, ধনিয়াপাতা ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ২০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, প্রতিজোড়া বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২৫ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ও ডাঁটা শাক ৩ আঁটি ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রতিকেজি ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শসা ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে যা স্বাভাবিক দামের থেকে বেশি বলেই ক্রেতারা মনে করছেন।
কাওরান বাজারে এসব সবজির দাম প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। হাতিরপুলে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে করলা ও পটল। কাওরান বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম আগের মতোই প্রতিকেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। হাতিরপুল বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১৩৫ টাকা।
প্রতি ডজন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। বাজারে ৭০০ গ্রাম ওজনের মাঝারি মানের একটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে একই আকারের মাছ সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে এক বিক্রেতা দাবি করেন।

এছাড়া রুই কাতলের দাম আকার ভেদে বেশ পার্থক্য রয়েছে। বড় আকারের রই মাছের কেজি যেখানে সাড়ে ৩শ থেকে চারশ’ টাকা, সেখানেই ছোট রুই মাছগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে আড়াশই টাকা। কারওয়ান বাজারে বাতাসি মাছ প্রতিকেজি আড়াশ টাকা, বাইম মাছ ৭শ’ টাকা, টেংরা ৪শ’ টাকা এবং শোল মাছ ৪০০ টাকা করে দাম চাচ্ছিলেন বিক্রেতারা।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=108559