১০ মার্চ ২০১৮, শনিবার, ১০:০২

গরমের শুরুতেই সবজির মূল্যবৃদ্ধি

গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকায় গরমের তীব্রতা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঘরে ঘরে বেড়েছে রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব। স্বাভাবিক কারণেই দাম বেড়েছে ওষুধি শাকসবজির। বিশেষ করে করল্লা, লাউ, পেঁপে, কাঁচকলা, লেবু প্রভৃতির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। অব্যাহত রয়েছে চালের মূল্যবৃদ্ধিও। চলতি সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। এ ছাড়া মাছ, মুরগি, ডিম, তেল, চিনি, গরুর গোশত ও অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত আছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা।

গতকাল রাজধানীর কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ওষুধি সবজি হিসেবে পরিচিত করল্লা, লাউ, পেঁপে, কাঁচকলা, লেবু প্রভৃতির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। ৫০ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি কেজি করল্লা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা। গত সপ্তাহে যে টক টমেটো ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গতকাল একই মানের টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। পেঁপের কেজি ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। লেবুর হালি ৫০ টাকা ছুঁয়েছে। একেকটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কাঁচকলার হালি ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

তবে অন্যান্য সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা, গ্রানুলা ১২ থেকে ১৪ টাকা ও মটরশুঁটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। লালশাক, পালংশাক, লাউশাকসহ অন্যান্য সবজি গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে দেখা যায়।

গত এক সপ্তাহে বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয় ৬২ থেকে ৬৬ টাকায়। মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫৩ টাকায়। অন্যান্য চালের মধ্যে মাঝারি মানের নাজিরশাইল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা ও ভালো মানের নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, আমন মওসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভারকার্প ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। তবে দেশী মাছের দাম অনেক বেশি। প্রতি কেজি ট্যাংরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়। শোল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া সাগরের মাছের মধ্যে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা, কোরাল প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, রূপচাঁদা আকারভেদে ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশী মাছের চাহিদা বেশি, তাই দামও বেশি।

বাজারে গতকাল পেঁয়াজের দর কিছুটা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত বছরে এই সময়ে ছিল দেশী পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৮ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৪ টাকা। দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রসুন ও আদার দাম। এখন প্রতি কেজি দেশী রসুন ৫০ থেকে ৮০ এবং আমদানি করা রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। এখন লবণের মওসুম থাকলেও এর দাম কমছে না। সুপার লবণ ৩৮ থেকে ৪০ ও সাধারণ লবণ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/300425