১০ মার্চ ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৯

রোহিঙ্গা মালিকানাধীন জমিতে সরকারি স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার

বৈশ্বিক চাপের মুখে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা চলছে, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা জায়গাজমিতে এবার সরকারি স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার সরকার। ওই সব এলাকায় রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা বসতবাড়ি প্রথমে বোলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর এসব জায়গায় কাঁটাতারের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরাও দেয়া হয়। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযান চরম নিষ্ঠুরতায় পৌঁছলে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ বসতবাড়ি এবং কৃষিজমি ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
এরপর রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হলে বৈশ্বিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশের সাথে চুক্তি স্বার করতে সম্মত হয়। গত বছরের ২৩ নভেম্বর প্রথম বাংলাদেশ ও মিয়ানমার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসংক্রান্ত অ্যারেঞ্জমেন্টে স্বার করেন। ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও এর কার্যপ্রণালী ঠিক করা হয় এবং সবশেষ ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ের চুক্তির ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্টও চূড়ান্ত স্বারিত হন।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সূত্র জানায়, রাখাইনের আইল্লাংপাড়া এবং আজলিপাড়ার প্রায় এক হাজার ১০০ একর জায়গা দখল করে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু করেছে মিয়ানমার সরকার। এত বড় বিস্তৃত এলাকার মধ্যে ৫০০ একর জমি কৃষি জমি। এসব জমিতে রোহিঙ্গারা শস্য উৎপাদন করে দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহ করত।

রোহিঙ্গা মালিকানাধীন এত বিস্তৃত এলাকা এখন পরিণত হয়েছে বিস্তৃত মরুভূমি। ওই এলাকার রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ি প্রথমে বোলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তার পরে কৃষিজমির আইল সম্পূর্ণভাবে কেটে দিয়ে কৃষিজমিকে পরিণত করা হয়েছে খেলার মাঠের মতো। সূত্র আরো জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থাপনায় ইতোমধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরো কিছু স্থাপনা নির্মাণের জন্য অবশিষ্ট জায়গা প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে।
রোহিঙ্গারা মনে করছে, তাদের ফিরিয়ে নিলে যাতে নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা না হয় সে জন্য আগেভাগে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি বিনষ্ট করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করছে। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ির চিহ্ন এবং বিশ্বকে যেন জানান দিতে পারে যে, আদতে এখানে রোহিঙ্গাদের কোনো বসতবাড়ি ছিল না।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/300420