ইংরেজি Quota শব্দটির অর্থ Proportional Share যার বাংলা অর্থ আনুপাতিক অংশ। ইংরেজি Quota শব্দটি বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহারের কারণে এটি বিদেশী শব্দ হিসেবে বাংলায় এর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। Quota শব্দটির বহুল ব্যবহারের কারণে শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিভেদে সবাই এ শব্দটি ব্যবহারের আবশ্যকতা দেখা দিলে Proportional Share বা আনুপাতিক অংশ উল্লেখ না করে পূর্বক কোটা উল্লেখ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ সরকারের নীতির একটি অংশ। তবে যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কোটা সংক্রান্ত নীতির প্রয়োগ গণতন্ত্রের বিধানাবলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং এটি দীর্ঘ দিন অনুসৃত হওয়া কাম্য নয়।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী গণতন্ত্রের প্রতি প্রথম আঘাত রাজনীতিকদের পক্ষ থেকেই আসে। পরে সামরিক ও রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ উভয়ের দ্বারা গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হয়। যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মৌলিক মানবাধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধানসহ মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত করা হয়। আমাদের বড় রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গৃহীত না হওয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনায় এর প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়।
আমাদের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যেসব মূলনীতির কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে সুযোগের সমতা। সুযোগের সমতা বিষয়ে সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদের (১), (২) ও (৩) নং দফায় পর্যায়ক্রমিকভাবে বলা হয়েছেÑ ০১. সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হবেন। ০২. মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমানস্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধা দান নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ০৩. জাতীয় জীবনে সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবেন।
সংবিধানের তৃতীয় ভাগে যেসব মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা। সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা বিষয়ে ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদের ০১ ও ০২ দফা এবং ০৩ নম্বর দফার (ক), (খ) ও (গ) উপদফায় পর্যায়ক্রমিকভাবে বলা হয়েছেÑ ০১. প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে। ০২. কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্ম স্থানের কারণে কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের অযোগ্য হবেন না কিংবা সে ক্ষেত্রে তার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাবে না। ০৩. এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুইÑ (ক) নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে তাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হতে, (খ) কোনো ধর্মীয় বা উপসম্প্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মাবলম্বী বা উপসম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান সম্বলিত যেকোনো আইন কার্যকর করা হতে, (গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেরূপ যেকোনো শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না।
সংবিধানের ১৯ ও ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদ্বয়ের বিধানাবলির প্রতি আলোকপাত করলে পরিলক্ষিত হয় ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সাধারণ অর্থে অর্থাৎ সব ক্ষেত্রে সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে। অপর দিকে, ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বিশেষ অর্থে অর্থাৎ সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে এবং এর পাশাপাশি নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ বিষয়ে রাষ্ট্রকে বিশেষ বিধান প্রণয়ন বিষয়ে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের বাংলাদেশেও সমাজ গতিশীল। গতিশীল সমাজে যেকোনো স্থবির আইন সময় ও যুগের চাহিদা মেটাতে পারে না। তাই সময় ও যুগের পরিবর্তনের সাথে তাল রেখে বিভিন্ন সময় আইনকে সময় উপযোগী করার আবশ্যকতা দেখা দেয়। দেশের প্রচলিত অন্যান্য আইনের মতো সংবিধানও একটি আইন। তবে প্রচলিত অন্যান্য আইনের সাথে সংবিধানের পার্থক্য হচ্ছে এটি সর্বোচ্চ আইন এবং সংবিধানের সাথে অন্যান্য আইন সাংঘর্ষিক হলে সংবিধান প্রাধান্য পায়।
সংবিধান প্রণয়ন পরবর্তী এ যাবৎকাল পর্যন্ত সংবিধানে ১৬টি সংশোধনী আনয়ন করা হলেও ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে উপদফা (৩) সন্নিবেশন ব্যতীত ১৯ ও ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদদ্বয় এখন পর্যন্ত অক্ষত আছে।
বর্তমানে প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন বেসামরিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে কোটা পদ্ধতি অনুসৃত হয় তা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা শতকরা ৩০ ভাগ, জেলা ১০ ভাগ, মহিলা ১০ ভাগ, উপজাতি পাঁচ ভাগ এবং প্রতিবন্ধী এক ভাগসহ সর্বমোট ৫৬ ভাগ। এ ধরনের কোটা সংরক্ষণ মেধা লালনের ক্ষেত্রে কতটুকু সহায়ক তা অতি সহজেই অনুমেয়।
প্রজাতন্ত্রের বেসামরিক পদে নিয়োগের দায়িত্ব সাংবিধানিকভাবে সরকারি কর্ম কমিশনের ওপর ন্যস্ত। তবে বিভিন্ন সরকারি দফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দফতরগুলোকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি প্রবেশ পদে নিয়োগের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা দেয়া আছে এবং এ ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ধারিত যোগ্যতা যাদের আছে তারাই আবেদন করতে পারে। যোগ্যতাপূরণ সাপেক্ষে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়ার কথা; কিন্তু কোটার কারণে মেধা মূল্যায়নের সুযোগ কি থাকছে?
সংবিধানে নাগরিকদের অনগ্রসর অংশের জন্য কোটা সংরক্ষণ বিষয়ে বলা হয়েছে। অনগ্রসর অংশ হচ্ছে পশ্চাৎপদ শ্রেণী। যেকোনো পশ্চাৎপদ শ্রেণীর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা যায়। কিন্তু তারা যে মুহূর্তে সমাজের অপর সব শ্রেণীর সমকক্ষের পর্যায়ে পৌঁছে যাবে তখন থেকে তাদের জন্য কোটা সংরক্ষণ অযৌক্তিক।
সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ২৩ক অনুচ্ছেদ সংযোজনপূর্বক উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি বিষয়ে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র এদের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা করবেন। সংবিধানের ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে নাগরিকদের অনগ্রসর অংশ বলতে যাদের বোঝানো হয়েছে মূলত তারা নব সংযোজিত ২৩ক অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়।
আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন ছিল। সম্প্রতি প্রণীত ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটির সংজ্ঞা পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অজস্র তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অথবা নাতি-নাতনী কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অথবা নাতি-নাতনী দাবিদার হয়ে মেধাবীদের পিষ্ট করে দুর্লভ চাকরি বাগিয়ে নিচ্ছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের সবাই দেশকে শক্রমুক্ত করে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার অভিপ্রায় নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। এ অংশগ্রহণে কোনো বিনিময় প্রত্যাশিত ছিল না। তবে কেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবিতে বিনিময় প্রত্যাশা? তা ছাড়া বাবার অবদানের জন্য সন্তানকে পুরস্কৃত করা নীতি ও নৈতিকতা দ্বারা সমর্থিত কি না তা দেখার বিষয়। সন্তানের মতাদর্শ তো বাবা থেকে ভিন্নধর্মী হতে পারে। আর ভিন্নধর্মী মতামতকে মেনে না নিলে বাকস্বাধীনতার হানি হচ্ছে কি না সেটিও দেখার বিষয়। বাবা সরকারের সচিব বা গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হলে মেধা ও জ্যেষ্ঠতার হানি ঘটিয়ে সন্তানকে সচিব বা অধ্যাপক পদ দিয়ে দেয়া কতটুকু যৌক্তিক?
বেসামরিক পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা যায় মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে লিখিত পরীক্ষার কৃতকার্যতা মূল্যহীন। সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিভিন্ন ক্যাডার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইতঃপূর্বে মৌখিক পরীক্ষা ১০০ নম্বরে সীমাবদ্ধ ছিল। সম্প্রতি এটিকে বাড়িয়ে ২০০ নম্বর করা হয়েছে। অনেকের অভিমত মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ করায় ফলাফলকে প্রভাবিত করে ভালো ক্যাডারের জন্য মনোনীত করার সুযোগ অবারিত যেটি ১০০ নম্বরের ক্ষেত্রে সীমিত। আবার অনেকে বলেন, তারা তো লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছেন তাই এ ক্ষেত্রে একটু রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিতে ক্ষতি কী। কিন্তু প্রশ্নÑ যে দেশে চাকরির বাজারে হাহাকার সে দেশে এ ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা সবারই কাম্য।
সংবিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে যদি একান্তই কোটা সংরক্ষণে সচেষ্ট হতে হয় তবে প্রথমে যে বিষয়টি চলে আসে সেটি হচ্ছে উপজাতিদের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে উচ্চাদালতের বিচারক নিয়োগে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব। উচ্চাদালতের বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৯৫ নম্বর অনুচ্ছেদে আনুপাতিক অংশের উল্লেখ ব্যতিরেকে দুই ধরনের ব্যক্তিবর্গকে যোগ্য করা হয়েছে। এ দুই ধরনের ব্যক্তির প্রথমোক্ত ব্যক্তি হলো এমন ব্যক্তি যিনি ন্যূনপক্ষে উচ্চাদালতে ১০ বছর যাবৎ আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন আর দ্বিতীয় ব্যক্তি হচ্ছেন এমন ব্যক্তি যিনি ১০ বছর যাবৎ বিচার কর্মবিভাগে নিয়োজিত আছেন। এখানে দুই ধরনের ব্যক্তির উল্লেখ থাকায় ধরে নিতে হবে যে, যেকোনো সময় নিয়োগের ক্ষেত্রে উভয় ধরনের ব্যক্তিবর্গ থেকে সমানুপাতিক হারে নিয়োগ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় এক বিঘা জমি তফসিলে অংশ উল্লেখ ব্যতিরেকে দুই ব্যক্তির নামে ক্রয় করা হলে ধরে নিতে হবে যে ওই জমিতে উভয়ের অংশ সমানুপাতিক। অর্থাৎ আধা-আধি। উচ্চাদালতের বিচারক নিয়োগ বিষয়ে ফিরে তাকালে দেখা যায় একমাত্র সামরিক শাসক তথাকথিত স্বৈরাচরী এরশাদ ব্যতীত অপর কেউ সংবিধানের প্রতি সম্মান রেখে ৯৫ নম্বর অনুচ্ছেদের চেতনার আলোকে নিয়োগ দিতে সচেষ্ট ছিলেন না।
পৃথিবীর যেকোনো দেশে কোটা সংরক্ষণ একটি সাময়িক ব্যবস্থা এবং এ সাময়িক ব্যবস্থাটি দীর্ঘ দিন থেকে চলতে থাকলে বেসামরিক জনপ্রশাসন নি¤œ মেধার কর্মকর্তাদের প্রাধান্যে অকার্যকর হয়ে পড়বে, যার প্রভাব আমরা ইতোমধ্যে প্রত্যক্ষ করতে শুরু করেছি।
সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা প্রবেশ পদে নিয়োগে কোটা সংরক্ষণ না থাকায় প্রকৃত মেধবীরা শারীরিক যোগ্যতার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে নিয়োগ লাভের সুযোগ পাচ্ছেন। মেধাকে মুখ্য বিবেচনায় নিয়োগ দেয়ায় সমমর্যাদাসম্পন্ন সেনা কর্মকর্তারা যে বেসামরিক কর্মকর্তার চেয়ে শ্রেয় তা এখন সবাই উপলব্ধি করতে সক্ষম।
কোটার কারণে মেধাবীরা অহেতুক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার তালিকার শুদ্ধতা বিষয়ে সংশয় থাকায় এ তালিকার ওপর নির্ভর করা যৌক্তিক হচ্ছে কি না তা বিবেচনা করা প্রয়োজন। যেকোনো একটি জেলার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শতকরা ৬০-এর ওপর নম্বর পেয়ে নিয়োগ পাচ্ছে না আবার অপর জেলার ক্ষেত্রে দেখা যায় শতকরা ৫০ নম্বর পেয়ে নিয়োগ পেয়ে যাচ্ছে। মহিলারা স্বযোগ্যতায় মেধার কারণে এগিয়ে যাওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ করে পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন আছে কি না তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। বিশেষত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের অথবা নাতি-নাতনীর কোটা ও জেলা কোটা সংবিধানের অনুচ্ছেদ নম্বর ১৯ ও ২৯-এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কি না তা বিবেচনায় নিয়ে কোটা সংক্রান্ত অপর বিষয়গুলো বাস্তবতার নিরিখে সুরাহা করার বিষয়ে সচেষ্ট হলে কোটা সংরক্ষণের মাধ্যমে মেধা হরণের পরিবর্তে মেধা লালনের অবকাশ সৃষ্টি হবে।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com