১ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৮:০৪

রোহিঙ্গা নিধন পরিকল্পিত গণহত্যা

সাংবাদিক সম্মেলনে তিন নোবেল বিজয়ী

রোহিঙ্গা নিধনকে পরিকল্পিত গণহত্যা বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তিন নারী। তারা বলেছেন, এ অবস্থায় সু চি চুপ করে থাকতে পারেন না। তাকে নীরবতা ভাঙতে হবে। গণহত্যায় জড়িতদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানান তারা। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের প্রশংসা করেন।

গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা নারীদের পাশে: নোবেল বিজয়ী নারী প্রতিনিধি দল ২০১৮’ শীর্ষক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। নারী পক্ষ ও নোবেল উইমেন ইনিশিয়েটিভ কানাডা এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ৮ দিনের সফরে নোবেল বিজয়ী ইরানের শিরিন এবাদি, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মেরেইড ম্যাগুয়ার এবং ইয়েমেনের তাওয়াক্কল কারমান বাংলাদেশে আসেন। তারা সরেজমিন কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন। নোবেল বিজয়ীরা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে অং সান সু চিকে বোঝাতে মিয়ানমার যাবেন বলেও উল্লেখ করেন। তারা বলেন, এই গণহত্যার দায় এড়াতে পারেন না সু চি ও তার সরকার। দোষীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি তুলেছেন তিন নোবেল বিজয়ী। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপেরও দাবি করেছেন তারা।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নোবেল উইমেন ইনিশিয়েটিভ কানাডার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এলিজাবেথ বার্নেস্টাইন, নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হক।

মেরেইড ম্যাগুয়ার বলেন, ‘যে নারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন। বেশির ভাগ নারীই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এটা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সরকার এবং সেনাবাহিনীর সুস্পষ্ট গণহত্যা।’

তাওয়াক্কল কারমান আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘মিয়ানমারের মিলিটারিরা যেভাবে সে দেশের লাখ লাখ মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করেছে ও তাদের চোখের সামনে স্বামী-সন্তানদেরকে আগুনে পুড়িয়ে, গাছে ঝুলিয়ে এমনকি ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তা সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আমরা ১০০ নারীর সাথে কথা বললে ১০০ নারীই বলেছেন তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। বিশ্ববাসী এ গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানবতার এই চরম অবমাননা সত্ত্বেও বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো এ সংকট নিরসনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

 

http://www.ittefaq.com.bd/capital/2018/02/28/148917.html