২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:২২

মাধ্যমিকে ৪২ শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক

দেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক আছেন। প্রাথমিকে এই হার ২৮, কলেজে ৩৬ ও বিশ্ববিদালয়পর্যায়ে ২৬। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৬ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে আছেন একজন শিক্ষক। ২০১৭ সালের বার্ষিক শিক্ষা জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) কর্মশালায় এ কথা জানান জরিপের প্রধান সমন্বয়কারী শামসুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির হার কমেছে। ২০১৬ সালে প্রাথমিকে ভর্তি হয়েছিল এক কোটি ৮৬ লাখ শিশু। ২০১৭ সালে ভর্তিকৃত শিশুর সংখ্যা এক কোটি ৭২ লাখ। ঝরে পড়ার হার কমলেও মাধ্যমিকে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। মাধ্যমিকে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার ৪১ দশমিক ৫২ শতাংশ ও ছেলেদের ৩৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্য দিকে কলেজপর্যায়ে ঝরে পড়ার হার ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যেখানে ২০১৬ সালে এ হার ছিল ২০ দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে শিক্ষায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়েছে। দেশের বেশির ভাগ জেলায় ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
সারা দেশে ২০ হাজার সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা দুর্যোগকবলিত হওয়ায় অচল অবস্থায় রয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, ১০ ধরনের দুর্যোগকবলিত হয়ে প্রায় ১৮ হাজার ৬৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সরকারি ৬১৮টি ও বেসরকারি ১৮ হাজার ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিল ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০১৭ সালে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, আর ২০১৬ সালে পাসের হার ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
সারা দেশে স্কুলপর্যায়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ৫১ হাজার ২১১ জন, কলেজে তিন হাজার ৬৪৩ জন, মাদরাসাপর্যায়ে ৯ হাজার ৯৩৬ জন। এ তিন স্তরে বাকপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীসহ মোট ২৮ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বাল্যবিবাহ ও দারিদ্র্যের কারণে মাধ্যমিকে মেয়েরা ঝরে পড়ছে। শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার কমাতে দুই কোটি তিন লাখ ছেলেমেয়েকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাপর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্তরের প্রতিবন্ধী ৮০ হাজার ছাত্রছাত্রীকেও বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এতে করে বিগত বছরের তুলনায় ঝরে পড়ার হার কমেছে বলে মন্ত্রী দাবি করেন।
ব্যানবেইসের পরিচালক মো: ফসিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেনÑ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো: আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মহিউদ্দীন খান প্রমুখ।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/297569