২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:১২

ইসরাইলী অবরোধে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ে হাজারো ফিলিস্তিনীর মৃত্যু

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান অবরোধের কারণে সহস্রাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থা। গাজার অধিবাসীদের নিয়মিত বিদ্যুৎ ও পানি ঘাটতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। ওষুধের অভাবে চিকিৎসকরা রোগীদের অস্ত্রোপচার করতে পারছেন না।

এসব সংস্থার সমন্বয়ক আহমাদ আল কুর্দ রবিবার বলেন, চিকিৎসার অভাবে গত কয়েক দিনে যথাসময়ের আগেই পাঁচটি শিশু জন্ম নিয়ে মারা গেছে। আর স্বাস্থ্য খাতের অবনতির কারণে ৪৫০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসকরা যখন রোগীদের গাজার বাইরে নিয়ে চিকিৎসার সুপারিশ করেন, তখনই তারা সংকটে পড়ে যান। বাইরে গিয়ে চিকিৎসার অনুমোদন পান।
কুর্দ বলেন, গাজাবাসী ২০০৬ সাল থেকে বিদ্যুতের বিকল্পব্যবস্থা মেনে নিয়েছেন। এ কারণে অন্তত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তারা মোম, কাঠ ও জেনারেটর ব্যবহার করছেন। এতে কখনও কখনও তাদের বাড়িঘরে আগুন লেগে যেতে দেখা গেছে। অগ্নিকা-ে শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি, মাছ ধরতে গিয়ে ও বাণিজ্যিক সুড়ঙ্গে ৩৫০-এর বেশি মানুষ মারা গেছেন।

রবিবার ইসরাইলী নৌবাহিনীর গোলাবর্ষণে এক মৎস্যজীবী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও দুজন আহত হন।
ফিলিস্তিনি মৎস্যজীবী ইউনিয়নের মুখপাত্র বলেন, মৎস্যজীবীরা গাজা বন্দরে ফেরার সময় ইসরাইলী গোলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই মৎস্যজীবীর নাম ইসমাইল আবু রিয়ালাহ। এ ছাড়া আহেদ আবু আলী ও মাহমুদ আবু রিয়ালাহকে ধরে নিয়ে যায় দখলদার বাহিনী।
প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (পিসিএইচআর) জানায়, ফিলিস্তিনি মৎস্যজীবীদের ওপর ইসলাইলের সব হামলা ছয় নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ঘটছে।
হামাসের মুখপাত্র আব্দুল লতিফ আল কুয়ানো বলেন, ইসরাইলি নৌবাহিনী কর্তৃক ফিলিস্তিনি মৎস্যজীবীদের হত্যা ঘৃণ্য অপরাধ। ইসরাইলি দখলদারদের এই হত্যার দায় নিতে হবে।

ইসরাইলি নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মৎস্য অঞ্চল ছাড়িয়ে ওই নৌকাটি বাইরে চলে গিয়েছিল। নৌকার তিন আরোহীকে গ্রেপ্তার করতে নৌবাহিনী সব নির্দেশনা মেলে চলেছে। তাদের সতর্ক করা হয়েছে। ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। পরে তাদের নৌকা লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।
অসলো চুক্তি অনুসারে ফিলিস্তিনিরা গাজা উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যেতে পারবেন। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে ইসরাইলিরা সেটিকে জবরদস্তিমূলক ছয় নটিক্যালের মধ্যে সীমিত করে রেখেছেন।
গাজা উপত্যকায় অর্ধ লাখ মানুষের জন্য চার হাজার মৎস্যজীবী। ২০ লাখ মানুষের গাজা উপত্যকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারাগার হিসেবে উল্লেখ করেন কুর্দ। তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে গাজায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। স্বাস্থ্য, পরিবেশ, সামাজিক ও জ্বালানিসহ সব ক্ষেত্রে মহাবিপর্যয় চলছে।

http://www.dailysangram.com/post/320613