২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ১০:৪৫

এবার বাড়ল চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম

দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকার পর বাড়ল চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম। বাজার দখলে থাকা বড় কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেলের কমিশন তুলে নিয়েছে। এ কারণে পরিবেশকরা লিটারে দুই টাকা দাম বাড়িয়েছে। চিনির দামও কেজিতে একই হারে বেড়েছে। আগে থেকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চাল ও লবণ। কয়েক মাস ধরে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দর কিছুটা কমেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রসুন ও আদার দাম। তবে মৌসুমি শাকসবজি ও আলুর দাম কমেছে। সব মিলিয়ে নিত্যপণ্যের দর বৃদ্ধিতে ক্রেতারা অসন্তুষ্ট।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের বড় অংশের দখল সিটি গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের কাছে। এ দুই গ্রুপের তীর ও রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল প্রতি পাঁচ লিটারের বোতলে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৫১০ টাকা। আগেও এ দর লেখা থাকলেও খুচরায় বিক্রি হয় ৪৯০ টাকায়, যা এখন ৫১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব ব্র্যান্ডের প্রতি লিটার আগে ১০৩ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন তা বেড়ে ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কোম্পানিগুলো আগে প্রতি লিটারে দুই টাকা ছাড় দিত। কিন্তু এখন ছাড় তুলে নিয়েছে। এ কারণে বোতলের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খূচরা মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে।

অনেক দিন ধরে একই দরে বিক্রি হয়ে আসছে চিনি। এমনকি গত রমজানের পর চিনির দর তেমন হেরফের হয়নি। এর পরে পরিশোধিত চিনি রফতানিও করেছে কোম্পানিগুলো। হঠাৎ করে গত সপ্তাহে চিনির দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খুচরায় প্রতি কেজি চিনি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা। এ ছাড়া প্যাকেটজাত আখের চিনি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি আড়তে প্রতি মণ চিনি এক হাজার ৮৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল এক হাজার ৭৭০ টাকা। কারওয়ান বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনি ব্যবসায়ী আবুল কাশেম সমকালকে বলেন, সম্প্রতি সয়াবিন তেলের কমিশন তুলে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চার দিন ধরে চিনির দামও বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। বর্তমানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫৬০ টাকায়, যা আগে ছিল দুই হাজার ৪৫০ টাকা। এ হিসাবে কেজিতে দুই টাকার বেশি বেড়েছে।

সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা সমকালকে বলেন, সম্প্রতি ব্যাংক ঋণের সুদহার বেড়েছে। ডলারের দামও বেড়ে গেছে। এ কারণে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ছে। এই দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। এ কারণে ভোজ্যতেলের কমিশন তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চিনির দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এখনও পুরোপুরি সমন্বয় করা হয়নি। এটি হলে চিনির দাম আরও বাড়বে। বর্তমানে মিলগেটে প্রতি কেজি চিনি ৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম সমন্বয় হলে ৫৩ থেকে ৫৪ টাকায় পৌঁছাতে পারে।

এদিকে, আগের সপ্তাহে মিনিকেট ও বিআর-২৮ চালের দর বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫৩ টাকা। অন্যান্য চালের মধ্যে নাজিরশাইল এখনও ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল স্বর্ণা ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া এখন লবণের মৌসুম থাকলেও দাম কমছে না। এখন সুপার লবণ ৩৮ থেকে ৪০ ও সাধারণ লবণ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত দুই সপ্তাহ পেঁয়াজের দর কমেছে। এখন দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত বছরে এই সময়ে ছিল দেশি পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৮ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৪ টাকা। দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রসুন ও আদার দাম। এখন প্রতি কেজি দেশি রসুন ৫০ থেকে ৮০ ও আমদানি করা রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।

তবে সবজির দাম কমেছে। টাউন হল বাজারের সবজি বিক্রেতা আল মামুন বলেন, বেশির ভাগ সবজি এখন কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকার কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের চেয়ে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। আলু কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কমে ডায়মন্ড আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা ও গ্রানুলা ১২ থেকে ১৪ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

 

http://samakal.com/economics/article/18021089