৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৯

জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় দৈনিক ১৪ জন নিহত

রেলপথে প্রাণহানি ২৮, নৌপথে ৬

এ বছর জানুয়ারিতে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১৪ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে গড়ে ১৩টি। অপর দিকে একই মাসে থেমে থাকেনি রেলপথ ও নৌপথে হতাহতের ঘটনা। জানুয়ারিতে রেলপথে ৩২টি দুর্ঘটনায় চার শিশুসহ ২৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত এবং নৌপথে ১০টি দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি তাদের এ প্রতিবেদন ২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে সারা দেশে ৪০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৩০ শিশুসহ ৪২৫ জন নিহত এবং ৯৫০ জন আহত হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, জাতীয় সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ইঞ্জিন বিকল হয়ে ২৫০ যাত্রীবোঝাই একটি পর্যটক জাহাজ চার ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরে ভেসে বেড়ানোসহ অভ্যন্তরীণ নৌপথে কয়েকটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি না ঘটায় সেসব ঘটনা বেশির ভাগ গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায়নি। এছাড়া রেলপথে নিহতদের বেশির ভাগ পথচারী এবং অসতর্কভাবে রেলপথ পার হতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন বলে পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সড়ক পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর নজরদারির অভাবই দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এই খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো : চাঁদাবাজি বন্ধ, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র ও সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান, বেতনভাতা বৃদ্ধি ও দৈনিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল ও জাল লাইসেন্সধারী চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, চালক ও সহকারীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিতকরণ ও বেহাল সড়ক সংস্কার এবং বিদ্যমান মোটরযান চলাচল আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ। এছাড়া পর্যবেক্ষণে নৌনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নৌপরিবহন অধিদফতর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) এবং রেল ক্রসিংগুলোয় দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করা হয়।

নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, সড়ক, নৌ ও রেলপথে দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত চারটি সংস্থাই বেশি দায়ী। সেগুলো হচ্ছে : বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), নৌপরিবহন অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/290598