৩১ জানুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ১২:৫৬

আবারো শুরু হয়েছে ব্যাপক ধড়পাকড়

আবু সালেহ আকন

রাজধানীসহ সারা দেশে আবারো শুরু হয়েছে ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান। ৮ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে এই অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ৮ ফেব্রুয়ারির পরিস্থিতির পর এই অভিযান আরো কঠোর হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

গত সোমবার সন্ধ্যার পরে রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা আনিসুর রহমান খোকনকে। পরে গতকাল সন্ধ্যায় তাকে রমনা থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। থানা সূত্র জানায়, খোকনের বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হতে পারে।
গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে যাতে আইনজীবীদের সমাবেশ আয়োজন করা না যায় সেজন্যই এগুলো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ দিকে গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে পথে পথে বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। বিএনপি অভিযোগ করেছে, তাদের ২০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রদলের সাবেক তিন নেতাকে প্রিজনভ্যানে তোলার পরে বিএনপির কর্মীরা প্রিজন ভ্যান থেকে ওই তিনজনকে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খবর পাওয়া গেছে, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। গত রাতে রমনা থেকে বিএনপির এক নেতা অভিযোগ করেছেন, তার বাড়িতে কয়েক দফায় পুলিশ গিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে। মুºা থানা এলাকার এক নেতা বলেছেন, পুলিশ তার বাসায় গিয়ে দেখা করতে বলে এসেছে। এভাবে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, উত্তরা, উত্তরখান ও দক্ষিণখানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে খবর পাওয়া গেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
এ দিকে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোর দিকেও কঠোর নজরদারি চলছে বলে জানা গেছে। নির্দেশ দেয়া হয়েছে হোটেলগুলোতে কারা অবস্থান করছে সে সম্পর্কে কঠোর মনিটরিংয়ের। ঢাকার বাইরে থেকে ৮ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে যাতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে জড়ো হতে না পারেন সে জন্যই এ নির্দেশনা বলে জানা যায়। ফকিরাপুলের এক হোটেল মালিক গতকাল বলেছেন, পুলিশ হোটেলে এসে প্রতিদিনের বোর্ডারদের তালিকা সরবরাহের জন্য বলে গেছে।

রাজধানীসহ সারা দেশে আবারো গ্রেফতার অভিযান শুরু হওয়ায় অনেক নেতাকর্মী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছেন। অনেকেই গত কয়েক দিন ধরে ঘরবাড়িতে যাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। ওই গ্রেফতার অভিযান সম্পর্কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের ডিসি মাসুদুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, যারা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/289776