১১ নভেম্বর ২০১৭, শনিবার, ১১:৪৪

নতুন নীতিমালা চূড়ান্ত

স্কুলে ভর্তির প্রশ্ন পাঠ্যবই থেকে করতে হবে

আগামী শিক্ষাবর্ষের স্কুলে ভর্তির নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবার নতুন কয়েকটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। সেখানে স্কুল ভর্তিতে দুই ভাগ কোটা স্কুল ও মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা প্রশাসনের সবার জন্য উন্মুক্ত, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন অবশ্যই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তালিকাভুক্ত বই থেকে করা এবং অঞ্চলভিত্তিক ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। আগামী রোববার এটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে, নীতিমালা লঙ্ঘন করলে শাস্তি কী হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। খসড়ায় বলা হয়েছে, ভর্তি ফি একমাসের বেতনের সমান, ভর্তি হওয়া মাসের বেতন, বার্ষিক সেশন চার্জ, উন্নয়ন ও বিবিধ ফিসহ টিউশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে মফস্বল এলাকার এমপিওভুক্ত স্কুলে পাঁচ শত, আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলে ছয় শত, এমপিওবিহীন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে সাত শত, এমপিওবিহীন ইংলিশ ভার্সন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে আট শত টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পৌরসভা ও উপজেলা সদরের এমপিওভুক্ত স্কুলে একহাজার, আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলে দেড় হাজার, এমপিওবিহীন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে আঠার শত, এমপিওবিহীন ইংলিশ ভার্সন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে দুই হাজার। জেলা শহরের (পৌর সদর) এমপিওভুক্ত স্কুলে দুই হাজার, আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলে দুই হাজার দুই শত, এমপিওবিহীন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে আড়াই হাজার, এমপিওবিহীন ইংলিশ ভার্সন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে আড়াই হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিভাগীয় শহরের (ঢাকা ব্যতীত) এমপিওভুক্ত স্কুলে তিন হাজার, আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলে চার হাজার, এমপিওবিহীন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে সাড়ে চার হাজার, এমপিওবিহীন ইংলিশ ভার্সন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে সাড়ে চারহাজার। ঢাকা শহরের এমপিওভুক্ত স্কুলে পাঁচ হাজার, আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলে আটহাজার, এমপিওবিহীন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে ১০ হাজার, এমপিওবিহীন ইংলিশ ভার্সন (পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত) স্কুলে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত বছরের মতোই টিউশন ফি নির্ধারণ করা হলেও শুধু রাজধানীর এমপিওবিহীন স্কুলে দুই হাজার টাকা বাড়তি প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফরমের দাম গত বছরের চেয়ে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব সালমা জাহান বলেন, সব অভিভাবকই চায় ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে। আসনের চেয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক স্কুল পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে প্রশ্ন করে। ভর্তি মৌসুম আসলে অভিভাবকরা পছন্দের স্কুলে সন্তানকে ক্লাসের পড়া বাদ কোচিংএ ভর্তি করে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠ্যবই থেকে করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের অনুরোধে ভর্তি ফরমের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ১২ই নভেম্বর নীতিমালার সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সন্তানকে পছন্দের স্কুলে ভর্তি করাতে বেশিরভাগ অভিভাবকের পছন্দের শীর্ষে থাকে সরকারি হাইস্কুল। রাজধানীর সরকারি হাইস্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয় প্রতি বছর। শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব ফ্রান্সে অবস্থান করায় সরকারি স্কুলে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি। সরকারি স্কুলে ভর্তি খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, এবার সব সরকারি হাইস্কুলে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে, যেসব স্কুলে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা নেই সেখানে আগের মতো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভর্তি করা হবে। আগের মতোই এবারো মোট আসনের ৫৯ শতাংশ কোটায় ভর্তির প্রস্তাব আছে। এগুলো হচ্ছে, স্কুলের ক্যাচমেন্ট এলাকা কোটা ৪০ শতাংশ, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী’ কোটা। বাকি আসনে অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=91388