২৮ অক্টোবর ২০১৭, শনিবার, ৮:৫০

২৮ অক্টোবরের নৃশংসতা

২৮ অক্টোবর। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কালো দিন। ২০০৬ সালের এ দিনে রাজধানী ঢাকায় পল্টনের রাজপথে কয়েকজন তরুণকে শুধুই রাজনৈতিক কারণে দিবালোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের যে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, তা হিংস্র পশুকেও হার মানায়। মানুষরূপী যারা তাদের নারকীয় কায়দায় হত্যা করেছে, তারাও ছিল রাজনীতির লোক। মানুষ মানুষকে এত পৈশাচিক পন্থায় হত্যা করতে পারে তা বিশ্ববাসী সে দিন দেখতে পেয়েছে। সে দিন শুধু রাজধানী ঢাকা শহরের রাজপথেই নয়, একই অপশক্তি সারা দেশে আরো অনেককে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে সে দিনটি ছিল কলঙ্কিত। মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছিল সে দিন। মানুষের বিবেক কেঁদে উঠেছিল; কিন্তু বড় দুঃখজনক সেই কান্না বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এর কারণ কি এটাই যে, যাদের সে দিন নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, তারা ছিল মুসলমান? অথচ এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দোষীদের বিচার হওয়া জরুরি। গুজরাট ও মিয়ানমারে যারা মুসলমানদের হত্যা করছে, জিন জিয়াং-এ যারা মুসলমানদের হত্যা করেছে তারা এবং ২৮ অক্টোবরের ওই হত্যাকারী একই দলের। যারা ওই বর্বর হত্যাযজ্ঞের আয়োজন করেছিল, যারা এ জন্য নির্দেশ দিয়েছিল, তারা কখনো ক্ষমা পেতে পারে না। ২৮ অক্টোবরের পথ ধরে অনেকে ক্ষমতায় গেছেন। তারা দেশে শান্তি বিরাজ করুক তা আসলে চায় না। পেছনে তাকালে দেখা যাবে, ২৮ অক্টোবর একটা জঘন্য মাস্টারপ্ল্যানের ও মিশনের অংশ। সে সময় যিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন, তিনি দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছিলেন। আমাদের দেশে মিডিয়াগুলো বেশির ভাগই পক্ষপাতদুষ্ট। সেই সূত্রে তারা ২৮ অক্টোবরের বর্বরতাকে কৌশলে ঢেকে রাখার চেষ্টা করেছে এবং কুচক্রীদের অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসার পথ তৈরি করে দিয়েছে। যতই সত্যকে তারা ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হোক না কেন, সত্য একদিন উন্মোচন হবেই। এমন নির্মমতা, বর্বরতার বিচার সর্বশক্তিমান ও মহান আল্লাহ নিশ্চই সঠিকভাবে করবেন। সে দিন বিশ্বমানবতা কেঁদেছিল। কেমন করে পিটিয়ে খুঁচিয়ে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করে, সেই লাশের ওপর উল্লাস করে তা সবাই দেখেছেন। ওই ঘটনা একসময় হয়তো আর চাপা থাকবে না। এ দেশের মানুষ সেই বর্বর শক্তিকে ঘৃণা করতে শিখবে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/263495