১৩ অক্টোবর ২০১৭, শুক্রবার, ৩:৫৬

সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। সরকারের রক্তচক্ষু, হুমকি-ধামকির পরও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততায় হরতাল হয়েছে। হরতালকে মানুষ নিরব সমর্থন দিয়েছে। হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটসহ সারা দেশেই শান্তিপূর্ণ মিছিল পিকেটিং করেছে জামায়াতে ইসলামী। রাজধানীতে যান চলাচল ছিল সীমিত। দূরপাল্লার গাড়ি চলেনি। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। অফিস বা বিপণী বিতানে ক্রেতা ছিল কম। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছিল আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়া নজরদারী। হরতাল চলাকালে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, গাজীপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে ২১১ জন নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গ্রেফতার অভিযান উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফল করায় দেশবাসীকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের নেতাদের পুলিশের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমা-ে নেয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। হরতালে হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং ওষুধের দোকান আওতামুক্ত ছিল। গতকাল বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানানো হয়।
রাজধানীর হরতাল চিত্র: হরতালের পক্ষে রাজধানীতে মিছিল পিকেটিং হলেও কোথায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোথাও গাড়ি ভাংচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেনি। তবে সফলভাবেই হরতাল পালিত হয়েছে।

সকালেই হরতালের কারণে অফিসগামী মানুষরা নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। মতিঝিলের এনসিসি ব্যাংকের কর্পোরেট শাখায় চাকরি করেন ইয়ার আহমেদ। তিনি পাবলিক বাসে চড়েই অফিসে আসা যাওয়া করেন। প্রতি দিনের মত গতকালও বাসের অপেক্ষায় দাঁড়ান যাত্রাবাড়িতে। কিন্তু অপেক্ষা শেষ হয় না। তার ধারণা ছিল হরতাল হলেও বাস পাবেন তিনি। অবশেষে বাস না পেয়ে রিক্সায় চড়ে অফিসে যান তিনি। ইয়ার আহমেদের মত অনেকে রিক্সায় কিংবা পায়ে হেঁটে অফিসে যেতে দেখা গেছে।
সকাল থেকে পাবলিক বাসের সংখ্যা ছিল খুবই কম। সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এসময় বিভিন্ন স্থানে পিকেটিংও করেন তারা।
রাজধানীর প্রবেশদ্বার যাত্রাবাড়িতে সকালে তেমন পাবলিক পরিবহন দেখা যায়নি। একইভাবে প্রাইভেটকারের সংখ্যা একেবারেই ছিল না। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ। হরতালের কারণে এখান থেকে দূরপাল্লার কোন যান ছেড়ে যায়নি। একইভাবে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়েও যায়নি। দূরপাল্লার যান প্রস্তুত থাকলেও যাত্রীর অভাবে কোন বাস ছাড়তে পারেনি বাস মালিকরা।
তারা জানান, নিরাপত্তার সমস্যা রয়েছে। তারপরেও যাত্রী পেলে আমরা বাস ছাড়তে রাজি রয়েছি। কিন্তু সারা দিনেও কোন যাত্রী পাইনি। তাই বাস ছাড়া যায়নি। দূরপাল্লার বাস টার্মিনালে সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে। একই অবস্থা দেখা গেছে গাবতলী,মহাখালীসহ কয়টি টার্মিনালে।
সকালের দিকে তেমন কোন যান চলাচল করতে দেখা যায়নি। এতে বুঝা যায় হরতালের প্রতি সাধারণ মানুষের নীরব সমর্থন ছিল। হরতালের কারণে অধিকাংশ লোকাল গাড়ি গ্যারেজে মেরামত কাজ করতে দেখা গেছে। তুরাগ বাসের ড্রাইভার আব্দুল হালিম দৈনিক সংগ্রামকে বলেন,অনেক দিন পরে হরতাল পেয়েছি। তাই চিন্তা করেছি গাড়ি চালাবো না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গাড়ির অনেক মেরামত কাজ রয়েছে। তাছাড়া হরতালের প্রতি আমাদের সমর্থনও রয়েছে। কিন্তু তা তো প্রকাশ করা যায় না।
তবে হরতালের কারণে রাজধানীর অধিকাংশ স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। স্কুল কলেজে সব ধরনের পরীক্ষা বন্ধ ছিল। অনেক শিশু সকালে স্কুলে গিয়েও বন্ধ থাকার কারণে ফিরে এসেছে।
হরতালের কারণে সকালে গাড়ি কম চললেও বিকেলে ৩ টার পরে গাড়ি চলাচল বাড়ে। হরতালের কারণে প্রাইভেট কার একেবারেই চলেনি। তবে ফ্রি স্টাইলে চলতে দেখা গেছে রিক্সা। রিক্সাই ছিল হরতালের প্রধান বাহন।
সেখানেই হরতালের মিছিল হয়েছে সেখানে সাধারণ জনগণ করতালি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছে। এতে বুঝা গেছে, হরতালের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে। আর এ কারণেই হরতালে কোন জ্বালাপও পোড়াও না হলেও জনগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতালের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

রাজধানীতে মিছিল পিকেটিং
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেছেন, সরকার দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতেই জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় আমীরে জামায়াত ও বর্ষীয়ান জননেতা মকবুল আহমদসহ শীর্ষনেতাদের আটক করে রিমান্ডের নামে নাজেহাল করছে। কিন্তু সচেতন জনতা জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে এমন অমানবিক আচরণ মেনে নেবে না। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতন পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াতসহ শীর্ষনেতৃবৃন্দকে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারক দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।
রাজধানীতে হরতালের সমর্থনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ইব্রাহিমপুর বাজার থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করীম ও আলাউদ্দীন মোল্লা, জামায়াত নেতা আব্দুল মতিন, শাহ আলম, খান হাবীর, তুহিন, ইকবাল হোসেন, ছাত্রনেতা রফিক ও খালেদা সাইফুল্লাহ ।
মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। সরকারের জুলম-নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে অবৈধ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা হারানোর প্রহর গুণছে। তারা বিরোধী দল নির্মূল করে অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই আমীরে জামায়াত ও বয়োবৃদ্ধ জাতীয় নেতা মকবুল আহমাদসহ শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে নির্যাতন চালাচ্ছে। কিন্তু জনগণ সরকারের সে স্বপ্নবিলাস কখনোই সফল হতে দেবে না বরং জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
মোহাম্মদপুরে মিছিল: জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেছেন, সরকার দেশকে নেতৃত্ব শূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটরি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু দেশপ্রেমী জনতা সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় রাজপথে নেমে এসেছে। তারা সর্বাত্মকভাবে হরতাল সফল করে জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে লালবার্তা পাঠিয়েছে। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতন পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত সহ শীর্ষনেতৃবৃন্দকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

হরতালের সমর্থনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি একথা বলেন। মিছিলটি মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা আবু নাঈম, সৈয়দ কামরুল হাসান, এনামুল হক ও ছাত্রনেতা আব্দুর রহিম ।
মাওলানা দেলাওয়ার বলেন, জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও বৈধ রাজনৈতিক সংগঠন। জামায়াত দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় দেশের আইন, সংবিধান ও প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু পুলিশ সম্পূর্ণ ন্যাক্কারজনকভাবে আমীরে জামায়াতের নেতৃত্বে ঘরোয়া বৈঠক চলাকালে তিনিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃব্ন্দৃকে গ্রেফতার করেছে। যা আইনের শাসন, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রীয় সংবিধানের মারাত্মক লঙ্ঘন। তিনি সরকারকে বিরাজনীতিকরণের পথ পরিহার করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক শাসনে ফিরে আসার আহবান জানান। অন্যথায় জনগণ ফ্যাসীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
মিরপুর পূর্ব থানা: মিরপুর পূর্ব থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলটি মিরপুর ২ নং থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ৬০ ফুট রাস্তায় বারেক মোল্লা মোড়ে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমীর আব্দুল্লাহ জোবায়ের। উপস্থিতি ছিলেন থানা সেক্রেটারি টুটুল, জামায়াত নেতা আব্দুল মান্নান, ফিরোজ, আবু জায়েদ ও ছাত্রনেতা রমজান আলী ।

পল্লবী-রূপনগর থানা: পল্লবী ও রূপনগর থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মিরপুর ১১ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পল্লবী থানা আমীর আশরাফুল আলম। উপস্থিত ছিলেন রূপনগর থানা আমীর নাসির উদ্দীন, জামায়াত নেতা সাইফুল কাদের, জামাল উদ্দীন, মোশাররফ হোসেন, লিয়াকত আলী, সুলতান হোসেন ও সাইফুল ইসলাম ।
তেজগাঁও থানা: তেজগাঁও থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিজয় সরণী থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন থানার নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি সহ স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ। পরে নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করে।
উত্তরা পূর্ব থানা: উত্তরা পূর্ব থানার উদ্যোগে উত্তরা ৬ নং সেক্টর থেকে একটি মিছিল বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমীর প্রফেসর মাহবুব মুকুল। উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি এম রহমান ফেরদৌসীসহ স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
উত্তরা পূর্ব থানার উদ্যোগে আরও একটি মিছিল উত্তরার ৪নং সেক্টরের মাটির মসজিদ এলাকা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট এম রহমান। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মুজিব, ই আলী ও এম এ রাজু ভূঁইয়া ।
বিমানবন্দর থানা: বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা বাজার থেকে হরতালের সমর্থনে বিমানবন্দর থানার উদ্যোগে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পরে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমীর এডভোকেট ইব্রাহিম খলিল। উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি শিপন মোল্লা, জামায়াত নেতা আবুল হাসেম, হামিদ হোসাইন আযাদ, শাহ আলম, শামীম হোসেন ও ছাত্রনেতা মীর শিহাব ।

তুরাগ থানা: ন তুরাগ থানার উদ্যোগে যাত্রাবাড়ী থেকে একটি মিছিল বের হয় এবং তা সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমীর মেসবাহ উদ্দীন নাঈম। উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর এস আর মোল্লা, সেক্রেটারি গাজী মনির হোসেনসহ স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
শাহ আলী থানা: শাহ আলী থানার উদ্যোগে স্থানীয় বাজার থেকে একটি মিছিল বের হয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
মিরপুর পশ্চিম থানা: মিরপুর পশ্চিম থানার উদ্যোগে নগরীর ছাপাখানা মোড় থেকে একটি মিছিল বের হয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি নাজমুস সা’দাত। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা সুলতান মাহমুদ রিপন, হাসানুর রশীদ রজব ও রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

রমনা থানা: রমনা থানার উদ্যোগে মগবাজার, নয়াটোলা ও ওয়্যারলেস মোড়ে পিকেটিং ও মিছিল করা হয়। পিকেটিং ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও থানা আমীর আহসান হাবীব। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর এম জে রহমান, সেক্রেটারি এম এ রহমান, জামায়াত নেতা রুহুল আমীন, সুলতান মাহমুদ ও ছাত্রনেতা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
রামপুরা থানা: রামপুরা থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রামপুরা কাঁচা বাজার থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাজী পাড়া এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এইচ ঈমাম। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা এস ইসলাম, এফ এ ফজলু, সিরাজুল ইসলাম, এম শামীম, এ সবুর ফরহাদ, এস এম মনির, জেড এ স্বাধীন, এইচ রহমান, শিবিরের রামপুরা থানা সভাপতি ফারুক, বনশ্রী সভাপতি মোরতজা, জামায়াত নেতা এ এইচ পাটোয়ারী, এ কে সোহেল ও এ আজিজ প্রমুখ।

দক্ষিণখান থানা: দক্ষিণখান থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি চৈতি গার্মেন্টের সামানে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি মহোদয়। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মো. জামাল উদ্দীন, নজরুল ইসলাম, শহীদ সহ স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
দক্ষিণখান থানার উদ্যোগে আরও একটি মিছিল মাটির মসজিদ এলাকা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মার্কেট মোড়ে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোনের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি মাওলানা এম আর আমীন, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ আলী, ছাত্রনেতা মামুন ও রফিক ।
উত্তরা পশ্চিম থানা: উত্তরা পশ্চিম থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি সোনারগাঁও জনপথ রোড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি মো. শাহাজাহান। উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন থানা অফিস সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ রেজা, জামায়াত নেতা মশিউর রহমান, বদিউজ্জামান, মাজহারুল ইসলাম, মাসুদুর রহমান ও ছাত্রনেতা ইমরান । পরে নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করে। এছাড়াও বাড্ডা, ভাটারা, শেরেবাংলানগর, উত্তরখান, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, খিলক্ষেত, আদাবর, মোহাম্মদপুর, দারুসসালাম, কাফরুল, ভাষানটেক, তেজগাঁও শিল্পঞ্চল, গুলশান ও উত্তরখান থানায় হরতালের সমর্থনে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণঃ সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল এর সমর্থনে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও পিকেটিং করেছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য শামসুর রহমান বলেন, সরকার অপশাসন-দুঃশাসনের কারণে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনতা তাদের সেই ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দেবে না। এছাড়া মিছিল ও পিকেটিং এ জামায়াত নেতৃবৃন্দ ঢাকাবাসীর প্রতি সকাল সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ন ভাবে সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
শাহজাহানপুর থানা : শাহজাহানপুর থানার উদ্যোগে থানা আমীর ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য শামসুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ সরোয়ার হোসেন, মাহমুদুর রহমান লাবু, শহিদুল ইসলাম, মোশাররফ হোসাইন, মোস্তাক আহমেদ, ছাত্রনেতা হাসান মাহফুজ ও মোহাইমিনুল ইসলাম প্রমুখ। মিছিলটি আমতলা মোড় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাগিচা ঝিলপাড়ে গিয়ে শেষ হয়।
নিউ মার্কেট ও কলাবাগান থানা : সকালে সেন্ট্রাল রোড আইডিয়াল কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাতিরপুল সড়ক মোড়ে এসে শেষ হয়। মিছিলে নিউমার্কেট থানা আমীর মাওলানা মহিব্বুল হক, থানা সেক্রেটারি গোলাম সরওয়ার, কলাবাগান থানা সেক্রেটারী আক্তারুজ্জামান ও স্হানীয় নেতৃবৃন্দসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ করেন। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে ১ জনকে গ্রেফতার করে ও কয়েকজনকে ধাওয়া করে পিটিয়ে আহত করে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিনা উস্কানীতে পুলিসের ন্যক্কারজনক হামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানান।
খিলগাঁও থানা : খিলগাঁও থানার উদ্যোগে খিলগাঁও রেলগেট থেকে থানা সেক্রেটারির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন শিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্ব সভাপতি সোহেল রানা মিঠু, জামায়াত নেতা জুলফিকার আলী, গোলাম মুর্তজা, রেজাউল করিম, আশরাফুল আলম ইমন, আবু রাইহান যাবায়ের, মাহফুজ, আব্দুল হাদী ।
কোতয়ালী থানা : কোতয়ালি থানার উদ্যোগে থানা সেক্রেটারি এ কে নাইমের নেতৃত্বে বাবুবাজার থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন আবুবকর, মুহাম্মদ ইদ্রিস, আলাউদ্দিন, শাহজাহান ছাত্রনেতা তানভীর, মুহিব্বুল্লাহ মুহিব, উজ্জ্বল ।

ডেমরা : ডেমরা থানার উদ্যোগে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি ডেমরা থানার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
কদমতলী পশ্চিম : কদমতলী পশ্চিম থানা জুরাইন কমিশনার রোডে সকাল ৭টায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ করে। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থি’ত ছিলেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
বংশাল : বংশাল থানার উদ্যোগে একটি মিছিল এস.সি.সি রোড থেকে নয়া বাজার গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মনির হোসেন মিজি, সিদ্দিক উল্লাহ, সা’আদ উল্লাহ ও মো: নাসির প্রমুখ।
যাত্রাবাড়ী পশ্চিম : যাত্রাবাড়ী পশ্চিম শহীদ ফারুক রোডে সকালে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
হাজারীবাগ-ধানমন্ডি : মিছিল করে হাজারীবাগ-ধানমন্ডি থানা জামায়াত ও শিবির। থানা আমীর এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়। আরো উপস্থিত ছিল থানা জামায়াত-শিবিরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
কদমতলী পূর্ব থানা : কদমতলি পুর্ব থানার উদ্যোগে গোয়াল বাড়ি মোড়ে থানা আমীর মীর বাহারের নেতৃত্বে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ জুনায়েদসহ স্থানীয় জামায়াত ও শিবির নেতৃবৃন্দ।
শ্যামপুর থানা : শ্যামপুর থানার উদ্যোগে সকালে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি জুরাইন রেলগেট থেকে শুরু হয়ে শ্যামপুর থানার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।

ওয়ারী থানা : ওয়ারী থানার উদ্যোগে সকালে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি টিকাটুলি থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা জেলা উত্তর : সাভারে মিছিল-পিকেটিং মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী সাভার পৌরসভা শাখা। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা ফজল আহমদ, আবদুল কাদের, ঢাকা জেলা উত্তর শাখার সভাপতি নাইমুর রহমান, শিবির নেতা নাহিদ আল হাসান, রাসেদুল ইসলাম প্রমুখ। গ্রেফতার ১ জন। এছাড়াও আশুলিয়া, ধামরাই এলাকায় পৃথক পৃথক ভাবে মিছিল পিকেটিং করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।
চট্টগ্রাম অফিস : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশের ন্যায় বৃহওর চট্টগ্রামেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সকাল সন্ধ্যা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী, রাউজান, রাংগুনিয়া, সীতাকুন্ড, মিরসরাই, সন্দীপ, ফটিকছড়ি, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, কর্ণফুলী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলায়ও হরতাল পালনের খবর জানিয়েছে সংবাদদাতারা।
হরতালের কারণে দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। নগরীতে রিক্সা চলাচল করলেও গনপরিবহনের সংখ্যা ছিল কম। ব্যক্তিগত গাড়ি কম ছিল। বেশীরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি। দোকানপাট বেলা ১০টার পর খুলেছে। নিরাপওার জন্য পুলিশ, র্যা ব, এপিবিএন মোতায়েন ছিল। হরতালে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ৮০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন ছিল। নগরীতে সাদা পোশাকধারী বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন ছিল। নগর পুলিসের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) সালেহ মোহাম্মদ তানভির বলছে, সকাল থেকে কোথাও কোন বিশৃঙ্খলতার খবর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চলাচল করছে। যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ প্রস্তত রাখা হয়েছে।

পুুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হরতালের আগের রাতে অভিযান চালিয়ে নগরীর বাকলিয়া থানা জামায়াতের আমিরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত গভীর রাতে বাকলিয়ার কালামিয়া বাজার এলাকায় বাকলিয়া জামায়াত আমির আবুল মনছুরের বাসায় অভিযান চালানো হয়।বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, হরতালে আবুল মনছুরের নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ব্যাপক নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে এবং আরও দুই জামায়াত কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তিনজনের বিরুদ্ধে আগের মামলা আছে কিনা যাচাইবাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
জানা গেছে, সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্র শিবির-নেতাকর্মীরা। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
হরতাল চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃবৃন্দএ চট্টগ্রাম মহানগরীতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য জামায়াত নেতৃবৃন্দ গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, জামায়াত নেতাদের হত্যা করে, গ্রেফতার ও জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ধ্বংস করা যাবে না। নেতৃবৃন্দ জামায়াত ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বন্ধ করে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানান।

সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী, ডবলমুরিং, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, বায়েজিদ, চকবাজার, খুলশী, সদরঘাট, আকবরশাহ ও পাহাড়তলী থানার উদ্যোগে পৃথক পৃথক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াত নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। জামায়াত নেতা এম.এ. আব্দুল্লাহ্, এফ.কে. আজম, আবু জাওয়াদ, এম.এন, আলম, এ.ইউ, চৌধুরী, এম.আর. করিম, এম.কে. আনোয়ার, এম.জহির এর নেতৃত্বে পৃথক পৃথক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা এম.কবির, শামসুল হক সিকদার,ছাত্রনেতা বি.ইউ.কাতেবী, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদমান হোসাইন, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ লোকমান, এম.এ. গফুর, রায়হান মাহমুদ, আমিনুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, নগর দক্ষিণ শিবিরের সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান, চান্দগাঁও থানার ইবনে হোসাইন, আবু নাহিদ,মাহমুদুল ইসলাম, মাহবুবুল হাসান, আলমগীর হোসাইন, দুলাল, বাবু, ছাত্রনেতা শাহাদাত হোসাইন, মুহাম্মদ জাফর, আবদুল করিম, ছাত্রশিবির নেতা মো. লোকমান, জাহিদ, নরুল হক, আবু সহিদ,শাহরিয়ার আলম প্রমুখ।
রাজশাহী অফিস : জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং তাদের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী ডাকা সকাল-সন্ধা হরতাল রাজশাহীতেও শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। হরতালের সমর্থনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী ও সাগরপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন জামায়াত নেতা-কর্মীরা। তবে হরতালকে কেন্দ্র করে নগরী ও জেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, হরতালের কারণে রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল ছিল সীমিত। সকালে রাস্তাঘাটে পরিবহণ ও জনচলাচল কম ছিলো। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খোলে দেরিতে। কাঁচা বাজারে আমদানী ছিলো খুবই কম। তবে বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা স্বাভাবিক হয় রাজশাহীর প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। হরতালের কারণে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারী। র্যা বের টহল অব্যাহত থাকে। হরতাল সফল করতে বুধবার রাতে নগরীর তালাইমারীতে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত।

পুঠিয়ায় জামায়াত নেতা গ্রেফতার : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আরিফুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার বানেশ্বরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আরিফুল ইসলাম বানেশ্বর ইউনিয়নের নামাজগ্রাম এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে। পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে জামায়াতের ডাকা হরতালে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে।
ফেনী সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার সহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ফেনীতেও শান্তিপূণভাবে পালিত হয়েছে। স্কুল, কলেজ মাদরাসাগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। ব্যাংক, বীমা ও সরকারী-বেসরকারী অফিসগুলোতে অন্যদিনে তুলনায় অনেকটা ফাকা ছিলো। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা ছাড়া অন্য কোন যান চলাচল করেনি। দূরপাল্লার গাড়িগুলো ছেড়ে যায়নি। রাস্তা-ঘাটে মানুষকে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। জেলা শহর ছাড়াও উপজেলাগুলোতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা অফিস : জামায়াতে ইসলামীর আমির মকুবুল আহম্মেদ ও সেক্রেটারী জেনারেল ডা.শফিকুর রহমানসহ আটক নেতৃবৃন্দেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার হরতালের সমর্থনে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে খন্ড খন্ড মিছিল ও পিকেটিং এর মধ্য দিয়ে হরতাল পালন করেছে কুমিল্লা মহানগরী ও কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এসময় জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৯ জনকে আটক কওে পুলিশ।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর চকবাজার, শাসনগাছা, কোটবাড়ি বিশ^রোড, টমচমব্রীজ, নোয়াগাঁ চৌমুহনী এলাকায় খ- খ- মিছিল পিকেটিং টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে বিক্ষোভ করে। এছাড়া জেলার লাকসাম নাতের পেটুয়া,বরুড়া উপজেলায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে।

জেলার লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দৈনিক সংগ্রামকে জানান, জামায়াত শিবির সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে।এর মধ্য জামায়াতের রুকন মহিউদ্দিন (৪৫) মাজারুল ইসলাম (২৫) শিবির কর্মী যাবের ইবনে মোতা (২৭) আবু তাহের (৩৮), সালেহ আহম্মেদ (২২) ও জামায়াত নেতা নুরে আলম।
এছাড়া নগরীর কান্দিরপাড় এলাকা থেকে জামায়াত নেতা হাজী মোতালেব,জসিম উদ্দিনসহ ৩জনকে আটক করে জেলা ডিবি পুলিশ।

এই দিকে নগরীর ৩টি বাসস্ট্যন্ড থেকে কোন দূও পাল্লার বাস ছেড়ে যায় নি।অন্য দিনের চেয়ে যানচলাচল ছিল স্বাভাবিক। দোকনপাট ছিল বন্ধ। তবে দুপুর থেকে নগরীর বিভিন্ন বিপনী বিতান ছিল খুলতে শুরু করেছে।
এদিকে জামায়াতের ডাকা হরতালের পুরো নগর জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছিল তৎপরতা ছিল। নগরীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ছিল পুলিসের ব্যাপক টহল।
এদিকে হরতাল চলাকালে জামায়াতের ৯ নেতাকর্মীকে আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ,নগর সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন, কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য আবদুস সাত্তার, সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার হোসাইন। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ও পুলিশ বাহিনী সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের নেতাকমীদের আটক করেছে।অবিলম্বে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান তারা।
সিলেট ব্যুরো : সিলেট মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবৈধ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতেই আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রেখেছে। শুধু তাই নয় বর্ষিয়ান ও বয়োবৃদ্ধ রাজনীতিবিদদের রিমান্ডের নামে নির্যাতন চালাচ্ছে। আমীরে জামায়াত-সেক্রেটারি জেনারেল সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে কারাগারে রেখে কোন নির্বাচন জাতি মেনে নিবে না। সিলেটসহ দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ হরতাল পালনের মাধ্যমে দেশবাসী আওয়ামী জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। অবিলম্বে শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে মুক্তি না দিলে অবৈধ সরকারকে কঠোর মূল্য দিতে হবে। দেশ থেকে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী নেতৃত্ব নির্মূলের ষড়যন্ত্র কোনোদিনই সফল হবে না। ফাঁসির রশি যাদের ইসলামী আন্দোলন থেকে একচুলও নড়াতে পারেনি। তাদের জেল-জুলুম-নিপীড়নের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এদেশে বাকশালীদের চূড়ান্ত লজ্জাজনক পতন হবে ইনশাআল্লাহ।

গতকাল বৃহস্পতিবার জামায়াত কেন্দ্র আহূত দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিুপূর্ণ হরতাল চলাকালে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার রিমান্ড-নির্যাতনের প্রতিবাদে সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পিকেটিং শেষে মিছিল সমাবেশে করেছে সিলেট মহানগর জামায়াত। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন।
নগরীর শাহী ঈদগাহ, সুবিদবাজার, দক্ষিণ সুরমা ও শাহপরান গেইট এলাকাসহ পৃথক স্থানে অনুষ্ঠিত পিকেটিং ও মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী, জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন, হাফিজ মশাহিদ আহমদ, চৌধুরী আব্দুল বাছিত নাহির, মাওলানা ফয়জুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ সারা দেশের ন্যয় সিলেটে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল সফল করায় পরিবহন মালিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সিলেটবাসীকে মোবারকবাদ জানান। অবিলম্বে আমীরে জামায়াত, সেক্রেটারি জেনারেলসহ মিথ্যা মামলায় কারান্তরীন শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি জানান নেতৃবৃন্দ ।
ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের মিছিল সমাবেশ
এদিকে, আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও জামায়াত কেন্দ্র আহূত দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল সমাবেশ করেছে আইনজীবীগণ।
গতকাল বৃহস্পতিবার হরতালের সমর্থনে আদালত চত্বরে মিছিল বের করে ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সিলেট। মিছিলটি ২নং বারের সামনে থেকে শুরু হয়ে আদালত প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ২নং বারের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
কাউন্সিলের সহ-সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও এডভোকেট জামিল আহমদ রাজুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সিলেটের সেক্রেটারি এডভোকেট আলিম উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আব্দুর রব, এডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সোহাগ, এডভোকেট বাবুল মিয়া, এডভোকেট আব্দুল খালিক, এডভোকেট আজিম উদ্দিন, এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন শামীম, এডভোকেট মাসুদ আহমদ মহসিন, এডভোকেট আজহারুল ইসলাম চৌধুরী ও এডভোকেট রহমত আলী প্রমুখ।
খুলনা অফিস : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমদ, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল খুলনায় শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার হরতাল চলাকালে সীমিত আকারে রিক্সা-ভ্যান চলাচল করলেও কোন ধরণের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল করেনি। সোনাডাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। অফিস-আদালত ও ব্যাংক বীমা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও উপস্থিতির সংখ্যা ছিল খুবই কম। হরতাল চলাকালে নগরীর রূপসা, পিটিআই মোড়, থানার মোড়, ডাকবাংলা, সোনাডাঙ্গা, শিববাড়ি, ময়লাপোতা, নতুন রাস্তার মোড়, বৈকালী মোড়, বয়রা মোড়, লিবার্টি মোড়, মহসীন মোড়, সোনাডাঙ্গা বাসষ্টান্ড, টুটথপাড়া কবর খানা মোড়, চানমারী, রূপসা ব্রীজ, বিশ্ব রোড, দৌলতপুর ও খানজাহান এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করতে দেখা গেছে।
খুলনা সদর থানায় বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন মো. অলিউল্লাহ, মনির হোসেন, আবুল হোসেন, আক্তারুজ্জামান, মো. মুরাদ হোসেন, আবুল হাসান, মো. হোসাইন প্রমুখ। সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন মাওলানা আবু তামান্না, মনিরুল ইসলাম পান্না, এম রহমান, মাওলানা জহির উদ্দীন, আবুল বাশার, আব্দুল গফুর, মো. রিয়াজুল ইসলাম, মো. আজিজুর রহমান, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মো. ইকবাল হোসাইন, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা আতাউর রহমান, গাজী আকবর হোসাইন, গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা হাবিবুর রহমান, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

নগরীর দৌলতপুর থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন দৌলতপুর থানা আমীর ইকবাল হোসাইন, সদর থানা আমীর তরিকুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর, মনিরুল ইসলাম পান্না, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মোশাররফ আনসারী, আলী আশরাফ, গোলাম মোস্তফা, আবুল হাসান, শোয়াইব, আঃ মালেক, ইলিয়াস, হেলাল, মেহেদী প্রমুখ।
মিছিল শেষে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবিক ও ধর্মীয় অধিকার ভূলুণ্ঠিত করে সরকার একদলীয় প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। এদেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল এখন রাষ্ট্র সন্ত্রাসের শিকার। প্রতিপক্ষকে গ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন, দমন-পীড়ন এখন রাষ্ট্রের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।যার প্রমান গত ৯ অক্টোবর আমীরে জামায়াতসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সারা দেশব্যাপি অব্যাহত গ্রেফতার অভিযান।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর, নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলসহ সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান।

এদিকে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ হরতাল সফল হওয়ায় নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান।
বরিশাল : জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুর আহমেদ, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ নেতাকর্মীকে আটকের প্রতিবাদে সকাল-সন্ধা হরতাল পালন করায় বরিশালবাসির প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বরিশাল মহানগর জামায়াত। বিবৃতি দাতারা হলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমীর এ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু, সেক্রেটারি জহির উদ্দিন মুহা. বাবর, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্বকে গ্রেফতার করে জালিম সরকার রিমান্ডের নামে নির্যাতন করছে। বিনা অপরাধে তাদের গ্রেফতার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলে প্রশাসন দিয়ে দমনপীড়ন করছে। অবৈধ সরকার দেশে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি করে একদলিয় বাকশাল কায়েরেমর স্বপ্ন পূরণ করতে চাইছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অটক আমীরে জামায়াতসহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় আমীর মকবুল আহমেদ, নায়েবে আমীর মিয়া মোহাম্মাদ গোলাম পরওয়ার ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ ৯জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হরতালের সমর্থনে মিছিল সমাবেশ করেছে ময়মনসিংহ শহর জামায়াত। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর গাঙ্গিনারপাড় থেকে শুরু হয়ে, নতুন বাজার মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ শহর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহিদুল্লাহ কায়সার। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে ১০দিনের রিমান্ডের প্রতিবাদ করে তীব্র নিন্দা জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এভাবে গ্রেফতার করে জামায়াতের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না। সরকারের জুলুম, নির্যাতনের প্রতিবাদে দেশবাসীকে গর্জে উঠতে হবে। নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে জেল-জুলুমের পরিনতি ভাল হে বনা। জনগনের আদালতে একদিন সকল অপকর্মের জবাব অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকারকে দিতে হবে। হরতাল কে সফল করার জন্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্থরের ময়মনসিংহবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন শহর জামায়াত-শিবিরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নীলফামারী সংবাদদাতা : কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নীলফামারীতে শান্তিপূর্ণভাবে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রেলষ্টেশন, বাসষ্ট্যান্ড সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ। এদিকে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে জলঢাকা জামায়াত অফিস হতে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জামায়াত-শিবিরের ৫ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো জামায়াতকর্মী লোকমান হোসেন (৫৫), শিবির কর্মী আল-আমিন (২২), নাজমুল হক (২৪), একরামুল হক ও মনিরুজ্জামান (২৪)।
জলঢাকা থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গাজীপুর সংবাদদাতা : আমীরে জামায়াতসহ গ্রেফতারকৃত সকল শীর্ষ নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ডাকা গতকাল বৃহস্পতিবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল গাজীপুরে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। মিছিল-পিকেটিং হলেও কোথাও সংঘর্ষ বা গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেনি।

সকাল থেকেই জামায়াত-শিবির কর্মীরা হরতালের সমর্থনে রাস্তায় নামে। জয়দেবপুর, তিন সড়ক, বাসন, টঙ্গি , কোনাবাড়ি ও বাইপাসসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত, শিবির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা আমীরে জামায়াতসহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে গগনবিদারি শ্লোগান দিতে দিতে রাজপথ প্রদিক্ষণ করে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন অংশে রাস্তায় পেট্টোল ঢেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে হরতালের পিকেটিং করে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। হরতাল চলাকালে গাজীপুর হয়ে দূর পাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহ ও সেক্রেটারি খায়রুল হাসান হরতাল সফল করায় নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তারা আবারও আমীরে জামায়াতসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, নেতৃবৃন্দকে আটকে রেখে জনতার মুক্তি আন্দোলন দমন করা যাবে না। অবিলম্বে অকার্যকর সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে কেড়ে নেয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বগুড়া অফিস : বগুড়ায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গতকাল বৃহস্পতিবার জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের সমর্থনে কয়েকটি স্থানে মিছিল হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। হরতালের আগের রাতে পুলিশ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
সারিয়াকান্দি সংবাদদাতা জানান, বুধবার রাত ১০টায় উপজেলা সদরের বাসা থেকে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভ্ষাক মাওলানা নজরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ বলছে, তার বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। শিবগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, বুধবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের ৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন বুড়িগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আহসান হাবিব, জামায়াত কর্মী হাফেজ ইয়াসিন, সাজু মিয়া, মামুনুর রশিদ ও আব্দুল আজিজ।
বগুড়া সদর থানা পুলিশ বুধবার রাতে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন নাইম উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক ও আমজাদ হোসেন। তাদেরকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ডিউটি অফিসার এসআই সামছুল হক।

http://www.dailysangram.com/post/303350