৯ অক্টোবর ২০১৭, সোমবার, ৯:৪৬

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ

মনিরামপুরে ৪ দারোগার বিরুদ্ধে অভিযোগ

যশোরের মনিরামপুরে এক মাদক ব্যবসায়ী ও তার বাবাকে মাদকসহ আটকের পর ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে ৪ দারোগার বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শিরালী মদনপুর গ্রাম থেকে মাদক ব্যবসায়ী মিকাইল হোসেন ও তার বাবা মাহবুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে ৫ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে বাবা মাহবুর রহমানকে ছেড়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের ওই গ্রামের বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ মিকাইল হোসেন ও তার বাবা মাহবুর রহমানকে আটক করে মনিরামপুর থানার এসআই ইউনুস আলী গাজী, এএসআই শফিকুল ইসলাম, এএসআই সেলিম হোসেন ও এএসআই জয়ন্ত। মাদক ব্যবসায়ী মিকাইল ও তার বাবাকে আটকের পর হাতকড়া পরিয়ে দরকষাকষির এক পর্যায়ে ওই গ্রামের বটতলা নামক স্থানে এনে ৫ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে বাবা মাহবুর রহমানকে ছেড়ে দিয়ে মিকাইল হোসেনকে থানায় আনা হয়। থানায় আনার পর মিকাইলকে মারধর করার এক পর্যায়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করা হয়। পরদিন শনিবার ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাইয়ের মধ্যস্থতায় তা ১ লাখ ২০ টাকায় রফা হয়। মিকাইলের বাবা সুদে ও ধার-কর্য করে ১ লাখ টাকা আবদুল হাইয়ের মাধ্যমে ওই দারাগোদের হাতে তুলে দেন। ওই দিনই মাত্র ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে মিকাইলকে আদালতে চালান দেয়া হয়।

সরেজমিন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে শনিবার বিকালে মিকাইল হোসেনের শিরালী মদনপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার (মিকাইল) স্ত্রী সাবিনা বেগম ও মা সালমা বেগমের সঙ্গে। মিকাইলের মা সালমা বেগম বলেন, কয়েক দিন আগে তার ছেলেকে একদল পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় ছাড়িয়ে আনা হয়। শুক্রবার গভীর রাতে তার ছেলে ও ছেলের বাবাকে মনিরামপুর থানা পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এ সময় কাকুতি-মিনতি করে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ছেলের বাবাকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। পরদিন ছেলে মিকাইল হোসেনকে থানায় নিয়ে মারধর করে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে অনেক টাকা দাবি করে ওই পুলিশ সদস্যরা। এক পর্যায়ে সুদে ও ধারকর্য করে পাশের বাড়ির হাই সাহেবের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা দিলে ছেলেকে চালান দেয় পুলিশ। বাকি আরও ২০ হাজার টাকা ছেলে বাড়ি এলে দিতে হবে বলে কথা হয়েছে ওই পুলিশদের সঙ্গে।

এসআই ইউনুস গাজী ও এএসআই সেলিম আহম্মেদ দাবি করেন, ওরা সব বানিয়ে বলছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকাররম হোসেন বলেন, টাকার বিষয়টি তার জানা নেই। এ প্রসঙ্গে মনিরামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু নাসের আল জামাল বলেন, টাকা উৎকোচ গ্রহণের ঘটনায় অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

https://www.jugantor.com/news/2017/10/08/161504