২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৫

অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো বিদ্যুৎ প্রকল্প

তোলপাড় সর্বত্র, জোরালো হচ্ছে তদন্তের দাবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা * বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে সরকারের লোকসান ৬ বছরে ৪৫ হাজার কোটি টাকা * শুল্কমুক্ত তেল আমদানি ও ৯ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আদায়ের নামে তেল আমদানিতে বছরে সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে ৯০০ কোটি টাকা
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভিত্তিহীন অতিরিক্ত প্রকল্প ব্যয় দেখানোর খবরে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ভুক্তভোগীসহ সচেতন সাধারণ মানুষ গুরুতর এ অভিযোগের বিষয়ে দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন। এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। তাদের দাবি, ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পকে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেখিয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা দেশের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ। বেসরকারি সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিতে বিদ্যুৎ বিভাগ কোনোভাবেই এটা করতে পারে না। এর একটা বিহিত হতেই হবে। কেননা অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো বিপুল অঙ্কের টাকার পুরোটায় ভাগবাটোয়ারা হয়, যা ভয়াবহ দুর্নীতি। আর এ কারণে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ট্যারিফ বা ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম বেশি পড়ে। বাড়তি এ টাকা গুনতে হয় সাধারণ মানুষ ও শিল্পোদ্যোক্তাদের।

অভিযোগ আছে, খোদ পিডিবির একটি সিন্ডিকেট আছে যারা বেশি দামে বেশি বিদ্যুৎ কিনতে আগ্রহী। এ কারণে গত ৬ বছরে লোকসান হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ। যেসব পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুতের দাম যত বেশি, সেসব কেন্দ্রের বিদ্যুৎ কিনতে তত বেশি আগ্রহী পিডিবি। রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি সব ধরনের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহারে উৎসাহী হয়ে উঠেছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্যই রাষ্ট্রীয় অর্থের নয়ছয় হচ্ছে। দরপত্র ছাড়াই ওয়ান টু ওয়ান পদ্ধতিতে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা হয়। এ কারণে কম দামে বিদ্যুৎ কেনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বেশি দামে কেনার প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি থাকে। এর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের অনেকে জড়িত। যে কারণে এটা বন্ধ হচ্ছে না। বরং বিদ্যুতের দাম আরও বাড়াতে সরকারকে চাপ দিচ্ছে। তিনি বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি খাত থেকে বিদ্যুৎ কেনা উচিত। একই সঙ্গে যারা কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে আগ্রহী, তাদেরই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ দেয়া এবং তাদের কাছ থেকে কম দামে বিদ্যুৎ কেনা উচিত। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। তার মতে, এটা সম্ভব হলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না।

দুর্নীতির বড় ফাঁদ : ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম বা ট্যারিফ নির্ধারণে দুর্নীতির বড় ফাঁদ পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত আইনের ১৫ ধারায় কৌশলে যা বলা আছে তার সারমর্ম হল- প্রকল্প ব্যয়ের ওপর ট্যারিফ নির্ধারণ নির্ভর করবে। অর্থাৎ যে কোম্পানির প্রকল্প ব্যয় যত বেশি, তার বিদ্যুতের ট্যারিফ মূল্য তত বেশি। এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ আমলাদের তৈরি করা এ ধরনের বিতর্কিত আইনের কারণে যারা সৎভাবে বিদ্যুৎ প্রকল্প করতে চান তারা কোনোভাবেই এগোতে পারছেন না। কেননা তাদের কেউ যদি ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক কোনো বিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যয় ১০ হাজার কোটি টাকা দেখিয়ে প্রস্তাব জমা দেন তাদের প্রথমে বলা হয়, ‘আপনার এটা কোনো দিন হবে না। এ ধরনের প্রজেক্ট যারা পেয়েছেন তাদের মতো করে প্রকল্প ব্যয় দেখিয়ে আবেদন জমা দিতে হবে।’ অর্থাৎ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পকে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেখাতে হবে। দেশের স্বার্থে ও ভবিষ্যতে দুদকের মামলার ভয়ে যারা এভাবে ভুয়া ব্যয় বৃদ্ধির প্রকল্প জমা দিতে চান না তাদের শেষমেশ বলা হয়, ‘আপনাকে দেয়া হবে ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা। কারণ আপনার প্রকল্প ব্যয় তো ওদের ৩ ভাগের ১ ভাগ।’ কিন্তু যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়বে সাড়ে ৫ টাকা সেখানে ৪ টাকা ট্যারিফ নির্ধারণ করা মানেই হল এ সারির কেউ আর এভাবে আগ্রহ দেখাবে না। অথচ যিনি বা যারা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় দেখিয়েছেন, তাদের দেয়া হচ্ছে ইউনিটপ্রতি ৮ টাকা ১৫ পয়সা। এরকম অসংখ্য নজির আছে পিডিবির অধিকাংশ প্রকল্প প্রস্তাবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার কিনবে বিদ্যুৎ। তার তো প্রকল্প ব্যয় দেখার দরকার নেই। কারণ বিদ্যুৎ তো কখনও নকল হয় না। এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হলে যে প্রযুক্তি প্রয়োজন, যে দেশ থেকে যে মানের মেশিনারিজ আনতে হবে, তার সবই যদি একই হয়; তাহলে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যয়ের ব্যবধান এত বেশি কেন হবে? এখানে দুর্নীতির সব রহস্য লুকিয়ে আছে। অথচ পরিবেশ রক্ষাসহ নানা অজুহাত তুলে প্রকল্প ব্যয় দেখে বিদ্যুতের ট্রারিফ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু এ চক্রের মূল উদ্দেশ্য হল- প্রতিটি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া। সেজন্য এ রকম ফাঁদ পাতা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, ১০ হাজার কোটি টাকার যে প্রকল্পকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে সেখানে সহজ হিসাব অতিরিক্ত ব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ টাকা তো প্রকল্পের কাজে কোথাও দৃশ্যমান ব্যয় করার সুযোগ নেই। প্রশ্ন হল- তাহলে এই অতিরিক্ত টাকার কী হবে? এর সহজ উত্তর এটিই দুর্নীতির টাকা। এই টাকা বিশেষভাবে প্রভাবশালী মহলের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়। মূলত এজন্যই প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে না বাড়ালে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের অনুমোদন মেলে না।

জ্বালানি খাতে বিশ্লেষকরা মনে করেন, এভাবে বিদ্যুৎ আইন বা নীতি দিয়ে একটি দেশ কোনো দিন সামনে এগোতে পারবে না। শুধু গুটিকয়েক লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। যারা বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিজেরা ভালো থাকতে পারবেন। কিন্তু দেশ ডুববে অন্ধকারে। দেশের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদন বিদ্যুতের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে দেশি-বিদেশি একটি চক্রের হাতে। ফলে তারা চাইলে যখন তখন দেশকে অন্ধকারে রাখতে পারবে। তাদের মতে, গভীর এই ষড়যন্ত্র ও সংকট থেকে মুক্তি পেতে জাতীয়ভাবে বিদ্যুতের একটি ট্যারিফ নির্ধারণ করতে হবে। এরপর বিদ্যুৎ উৎপাদন উন্মুক্ত করে দিতে হবে। যাদের সক্ষমতা আছে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন, আর সরকার জাতীয়ভাবে নির্ধারিত মূল্যে তা কিনে নেবে।
ফার্নেস অয়েলও দুর্নীতি : ফার্নেস অয়েলে বিদ্যুৎ উপাদন করতে ইউনিটপ্রতি খরচ হয় ১৫ টাকা থেকে ২৯ টাকা। সরকার এই দরে বিদ্যুৎ কিনে জনগণের কাছে বিক্রি করে ৮ টাকা। এর ফলে সরকারকে ৭ টাকা থেকে ২১ টাকা পর্যন্ত ভতুর্কি গুনতে হয়। এটিও পরোক্ষভাবে জনগণের পকেট থেকে যায়। এখানেও বড় ধরনের দুর্নীতি ভর করেছে। সরকার এক শ্রেণীর মুখচেনা পছন্দের লোকজনকে এসব বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দিয়ে থাকে।

বেশ কিছু দিন আগে বিপিসির পক্ষ থেকে পাঠানো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়কে দেয়া এক চিঠিতে বলা হয়, বেসরকারি ১২টি আইপিপি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) শুল্কমুক্ত কোটায় বছরে ১২ থেকে ১৫ লাখ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করছে। এই তেল আমদানিতে তাদের কোনো ধরনের শুল্ক দিতে হচ্ছে না। একই সঙ্গে পোর্ট থেকে বিভিন্ন স্থানে তেল পরিবহনের কথা বলে তারা সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৯ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ পাচ্ছে। এতে বিপিসির আমদানি করা তেলের সঙ্গে বেসরকারিভাবে আনা তেলের দামে লিটারপ্রতি ২০ থেকে ২৪ টাকার ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। যে কারণে বিপিসি বড় ধরনের রাজস্ব হারাচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ১২ লাখ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করেছে। তার আগের অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ৯ লাখ মেট্রিক টন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সংশ্লিষ্ট এই সিন্ডিকেটের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে পড়বে।
বিপিসির বিপুল লোকসান : ২০১০-১১ অর্থবছরে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা শুরু হয়। ওই অর্থবছরই লোকসানে পড়ে পিডিবি। পরবর্তীতে লোকসানের পরিমাণ বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান করে পিডিবি। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, গত ছয় বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থা লোকসান গুনেছে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বেসরকারি পাওয়ার প্লান্ট মালিকরা যে যার ইচ্ছামতো সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। আবার সুযোগ বুঝে বিভিন্ন অজুহাতে এসব কোম্পানি বিদ্যুতের দাম আরও বাড়ানোর জন্য সরকারকে চাপও দিচ্ছে। অভিযোগ আছে, মহলবিশেষের ইন্ধনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বেশি দামের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কিনছে। এতে পিডিবির লোকসানের বোঝা বাড়ছে। কিন্তু গোপনে লাভবান হচ্ছে মহলবিশেষ। পিডিবির সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় করে দেখা যায়, ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ১৫টি বেসরকারি কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ১১ টাকা ৬৭ পয়সা। সবচেয়ে বেশি দাম নিচ্ছে সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড। তাদের বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি দর ২০ টাকা ৪০ পয়সা। আর এ কেন্দ্র থেকেই বেশি বিদ্যুৎ কিনেছে পিডিবি। এছাড়া পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী সামিটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২০১৫ সালে সরকার ইউনিটপ্রতি ২৯ টাকা দরেও বিদ্যুৎ কিনেছে।

অপর এক অভিযোগে জানা যায়, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল (ফার্নেস অয়েল) আমদানির সুযোগ দিয়েও বছরে ৯০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। খোদ বিপিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগকে বলা হয়েছিল বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল আমদানির নামে লুটপাট হচ্ছে। এটা বন্ধ করা দরকার। অভিযোগ আছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য একটি সিন্ডিকেট শুল্কমুক্ত তেল আমদানি ও ৯ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আদায়ের মাধ্যমে তেল আমদানির মাধ্যমে বছরে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, একদিকে তেল নিয়ে লুটপাট চলছে, অপরদিকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করতে গিয়েও সরকারকে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যের ওপর যে ৯ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিচ্ছে তাও অতিরিক্ত ব্যয়। আর এই সার্ভিস চার্জ দেয়ায় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বছরে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে তেল আমদানির নামেও যা হওয়ার তাই হচ্ছে। মূলত তেল নিয়ে তেলেসমাতি করার জন্য আইপিপিগুলো বেসরকারি খাতে তেল আমদানির অনুমতি নিয়েছে। অভিযোগ আছে, এই তেল আমদানির নামে বছরে বিপুল অংকের টাকা পাচার হচ্ছে। আর সরকার এই টাকা সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম যুগান্তরকে বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যে পরিমাণ তেল লাগে গোপনে তার চেয়ে বেশি তেল আমদানি করছে কোম্পানিগুলো। ফার্নেস অয়েলের নামে আনছে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবর্তে এই তেল কম দামে খোলাবাজারে বিক্রি করছে। বিপিসি তেল আমদানি করলেও বাজারে চাহিদা না থাকায় সে তেল বিক্রি হচ্ছে না। দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা বেসরকারিভাবে আসা তেলের দিকে বেশি ঝুঁকছে। এ অবস্থায় সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বেসরকারিভাবে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার চিন্তা করলেও সিন্ডিকেটের চাপে তা থেকে এক পর্যায়ে সরে এসেছে।

https://www.jugantor.com/first-page/2017/09/28/159087