২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৬:৪২

দীর্ঘ ৭ বছরেও ফেলানী হত্যার বিচার পাইনি -বাবা

আমরা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিলাম। আমার চোখের সামনে বিএসএফ ফেলানীকে গুলী করে মারে। সে কাঁটাতারে অনেকক্ষণ ঝুলে ছিল। মেয়ে আমার অনেকক্ষণ পানি পানি করেছে আমার সামনে। মেয়েকে আমি বাঁচাইতে পারি নাই। অনেক চেষ্টা করেছি।

গতকাল রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এভাবেই স্মৃতিচারণ করছিলেন ফেলানী খাতুনের বাবা নুরুল ইসলাম। ফেলানী হত্যার বিচার ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবিতে ওই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে নাগরিক পরিষদ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালনের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া সীমান্ত হত্যা বন্ধে কয়েক দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

মানববন্ধনে নুরুল ইসলাম বলেন, দেখতে দেখতে সাত বছর হয়ে গেল, আমি এখনো বিচার পাই নাই। আমি কিছুই চাই না, শুধু আমার মেয়ে ফেলানী হত্যার বিচার চাই। শুনলাম সোমবার (আজ সোমবার) ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিচারের শুনানি আছে। ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি, এই বিচার যেন গুরুত্ব পায়।
ফেলানীর বাবা আরও বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি বাংলাদেশে ভাত পাই না, এ জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। উনারা বলেন, আমি অবৈধ পথে গেছি। অবৈধ পথে কেন যায়, যখন পেটে ভাত থাকে না তখন। পেটের দায়ে নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে গেছি।
প্রসঙ্গত, ফেলানী খাতুন ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি তার বাবার সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিলেন। একটি বাঁশের মইয়ের সাহায্যে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া টপকে ফেলানীর বাবা পেরিয়ে যান। ফেলানী পার হওয়ার সময় তাকে গুলী করা হয়। ফেলানীর লাশ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঝুলেছিল কাঁটাতারের বেড়াতে।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, বিএসএফের ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল অমিয় ঘোষ তার মেয়ে ফেলানীকে গুলী করে মারে। পরে বিএসএফের নিজস্ব আদালতে এর বিচার হয়। অমিয় ঘোষ দোষ স্বীকারও করেছিলেন। তবে বিএসএফের আদালত অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে পরে নির্দোষ ঘোষণা করেন। ফেলানী খাতুন কুড়ি গ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা।

http://www.dailysangram.com/post/300973