২৪ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৬:১৭

বাড়ছেই বন্যার্তদের দুর্ভোগ

১৬ নদ-নদী ২৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে : নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারাচ্ছে অগণিত মানুষ খাদ্য পানিসহ ত্রাণের অভাবে হাহাকার থামছে না : ত্রাণসামগ্রী এখনও খুবই অপ্রতুল

দেশের প্রধান প্রধান নদীগুলোর পানি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। তবে নাটোরে আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে এখনও বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার, ফরিদপুরে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানি ৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দেখা দিয়েছে ভাঙন ও দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকায় বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু, বৃদ্ধরা। দেখা দিয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও গো-খাদ্যের চরম সঙ্কট। অপরদিকে অপ্রতুল হওয়ায় সবার ভাগ্যে জুটছে না ত্রাণের চাল। ত্রাণের জন্য চারদিকে হাহাকার চলছে। দুর্গতরা জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে ত্রাণের আশায়। দুমুঠো খাবারের জন্য থালা বাটি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চাতক পাখির মতো লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করেছে দুর্গত মানুষগুলো। মানবিক সাহায্যার্থে কে কখন খাবার বিতরণ করবেন এনিয়ে অপেক্ষার শেষ নেই তাদের। বানভাসীদের শুরু হয়েছে হাহাকার। পাশাপাশি বন্যায় বিভিন্ন জেলা-উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী কম থাকায় এখনো দুর্ভোগে রয়েছেন বাসভাসী মানুষরা। পানি কমলেও চরম দুর্দশায় জীবন কাটাচ্ছেন বন্যার্ত মানুষগুলো। গৃহপালিত পশু গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। নিজেদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করতেই ত্রাহি অবস্থা, সেখানে এগুলো নিয়ে কী করবেন। তাই ‘পানির দরে’ বিক্রি করে দিচ্ছেন গবাদিপশু। এর মধ্যে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও সরকারিভাবে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

এদিকে বন্যার দুর্ভোগ কাটতে না কাটতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। মানুষের তিল তিল পরিশ্রমে গড়ে ওঠা সংসার, ঘরবাড়ি, পশুপাখি এবং সহায় সম্বল এক নিমিষেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে । ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। এসব মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য নিয়ে রিপোর্ট:

শফিউল আলম চট্টগ্রাম থেকে জানান, উজানভাগ থেকে বানের পানি তীব্রবেগে নামছে। এরফলে ভাটিতে ও মোহনায় বানের পানির আরো চাপ সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর জনপদ, ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চল, মধ্য-দক্ষিণাঞ্চল এমনকি দক্ষিণে খুলনার নদ-নদীগুলো পর্যন্ত উপচে পড়ছে পানির চাপে। নাব্যতা হারিয়ে বেশিরভাগ নদ-নদীর তলদেশ এমনিতেই অনেক উঁচু। তদুপরি ঢল-বানের পানিতে ভাটি ও মোহনায় নদী সংলগ্ন অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বানের পানি নামছে, আর ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ৬টি বিভাগের অন্তত ২৬টি জেলায় অর্ধকোটিরও বেশি বন্যার্ত অসহায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। বন্যার পানি নামার সঙ্গে নদীভাঙনও ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি হারাচ্ছে অগণিত মানুষ। এ মুহূর্তে খাদ্য, ওষুধ, পানিসহ জরুরী ত্রাণের অভাবে বন্যার্তদের মাঝে হাহাকার থামছে না। সরকারি ত্রাণ সামগ্রী এখনও খুবই অপ্রতুল। আর সারাবছর গ্রামে-গঞ্জে ঋণ ও সুদের কাজ-কারবার নিয়ে ‘অতিব্যস্ত’ থাকা এনজিওগুলোসহ বেসরকারি ত্রাণ সহায়তার দেখাই মিলছে না।
গতকাল (বুধবার) সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তে ১৬ নদ-নদী ২৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছিল। প্রধান তিন নদ-নদী অববাহিকা গঙ্গা-পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও মেঘনায় (সুরমা-কুশিয়ারাসহ) পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। দেশের নদ-নদীগুলোর ৯০টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে পানি হ্রাস-বৃদ্ধির সূচক ছিল আগের দিনের মতোই। ৩৭টি পয়েন্টে বৃদ্ধি, ৪৯টিতে হ্রাস ও অপরিবর্তিত থাকে ৪টিতে।

নদ-নদী পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা এই তিন অববাহিকার মধ্যে গঙ্গার ভারতীয় অংশে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার ভারতীয় ও বাংলাদেশ অংশে পানি হ্রাস অব্যাহত আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের ভারতীয় অংশের গোহাটিতে ১০ সেমি, পান্ডুতে ৫ সেমি, গোয়ালপাড়ায় ১১ সেমি এবং ধুবরীতে ১৬ সেমি পানির সমতল হ্রাস পায়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানির সমতল উত্তর জনপদের নুনখাওয়া, চিলমারী, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি হ্রাস অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি বজায় থাকবে। গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে গঙ্গা নদী বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেমি থেকে ১০২ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গঙ্গার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানিও হ্রাস পাচ্ছে এবং তা আগামী ৭২ ঘন্টায়ও অব্যাহত থাকবে। মেঘনা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক উন্নতির দিকে থাকবে।

পূর্বাভাসে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারতীয় অংশে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় গড়ে ১৪ সেমি পানি হ্রাস পেতে পারে। বাংলাদেশ অংশে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার বিভিন্ন পয়েন্টে আগামী ৭২ ঘণ্টায় পানি হ্রাস অব্যাহত থাকবে। গঙ্গার পানির সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। আর পদ্মা নদীর পানি সমতল হ্রাস আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও বজায় থাকবে। মেঘনা অববাহিকার নদ-নদীসমূহের পানি আগামী ২৪ ঘন্টায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। পদ্মা নদীর পানির সমতল হ্রাসের ফলে দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের বিশেষ করে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুঞ্জিগঞ্জ ও শরীয়তপুরসহ নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি শুরু হবে। গঙ্গার পানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং পরবর্তীতে হ্রাস পাবে। মধ্যাঞ্চলে ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলোর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ, টঙ্গী খাল বিপদসীমা থেকে যথাক্রমে ৮৮ সেমি, ১৫ সেমি, ৮ সেমি এবং ১৫ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে শীতলক্ষ্যা নদী নারায়ণগঞ্জে বিপদসীমার ১২ সেমি উপরে রয়েছে।

দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর গতকাল সর্বশেষ অবস্থান ছিল উত্তরের জনপদের যমুনা নদে পানি আরও হ্রাস পেয়ে বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও ভাটিতে আরিচায় বিপদসীমার ২ থেকে ৪৯ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। চকরহিমপুরে করতোয়া নদী গতকাল বিপদসীমার নিচে নেমে গেছে (৫ সেমি)। আত্রাই নদীর পানি আরও কমে গিয়ে বাঘাবাড়িতে বিপদসীমার ৭১ সেমি এবং ধলেশ্বরী নদী টাঙ্গাইলের এলাসিনে ৭০ সেমি উপরে প্রবাহিত হয়। মহানন্দা নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকায় রোহনপুরে বিপদসীমার ৭০ সেমি উপরে এবং চাপাইনবাগঞ্জে ১৬ সেমি উপরে ছিল। পদ্মা নদীর পানি গতকালও আরও হ্রাস পেয়ে গোয়ালন্দ, ভাগ্যকুল ও সুরেশ্বরে যথাক্রমে বিপদসীমার ৬৬, ২৭ ও ২১ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্যদিকে মেঘনা অববাহিকায় সিলেটের সুরমা নদীর পানি গতকাল কিছুটা বৃদ্ধি পায় এবং কানাইঘাটে বিপদসীমার ৭ সেমি উপরে ছিল। কুশিয়ারা নদী ৩টি পয়েন্টে পানি কিছুটা কমে গিয়ে বিপদসীমার ৬ থেকে ৩০ সেমি উপরে প্রবাহিত হয়। দিরাইয়ে পুরাতন সুরমা নদী বিপদসীমার ২১ সেমি উপরে, নেত্রকোণা জেলায় কংস নদীর পানি আরো হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৫৮ সেমি উপরে এবং ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় তিতাস নদীর পানি বিপদসীমার ৪৭ সেমি উপরে অপরিবর্তিত থাকে। অন্যদিকে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে খুলনায় পশুর নদী বিপদসীমার ৩১ সেমি উপরে প্রবাহিত হয়। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর পানি ব্যাপক বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার মাত্র ৯ সেমি নিচে বইছিল। তবে কর্ণফুলী ও পশুর নদী দু’টিই জোয়ার-ভাটা নির্ভর হওয়ার (ফ্লাশি রিভার) কারণে এই পানি বৃদ্ধি সাময়িক।
এমদাদুল হক সুমন নওগাঁ থেকে জানান, নওগাঁ সদরসহ জেলার ১১ টি উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার আত্রাই, ছোট যমুনা ও পূনর্ভবা নদীর বাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি। গত ১০ দিনে বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে শিশুসহ ৭ জনের।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ভেড়ী বাঁধ ভেঙে গিয়ে ওইসব অঞ্চল প্লাবিত হয়। বন্ধ হয়ে যায় জেলা সদরের সাথে আত্রাই উপজেলার ও নাটোর জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। ভেসে গেছে কয়েক হাজার পুকুরের মাছ।
মো.ওমর ফারুক, ফেনী থেকে জানান, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের পূর্বের ভাঙ্গা অংশগুলো দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করে। এতে ৭টি গ্রাম আবারো বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ফুলগাজী সদর ও মুন্সীরহাট ইউনিয়নেরও কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকেছে। সড়কে পানি উঠায় ফুলগাজী থেকে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রোপনকৃত হাজার হাজার হেক্টর আমনের বীজতলা।
মোঃ আজিজুল হক টুকু, নাটোর থেকে জানান, নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। বন্যা কবলিত গ্রাম গুলোর বাসিন্দারা গৃহপালিত পশু গুলো নিয়ে পরেছেন বিপাকে। সরকারীভাবে দুই উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ১২ হাজার পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

এম সাঈদ আহমাদ,শিবচর (মাদারীপুর) থেকে জানান, পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে শিবচরের জনবিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল যেন বিধ্বস্ত জনপদে পরিনত হয়েছে। পদ্মা নদীতে পানিতে কমতে থাকায় রাক্ষুসী রুপ ধারন করে চরজানাজাত ও কাঠালবাড়িতে আরো শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। চরজুড়ে এখন কান্নার রোল। ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝূকিতে আক্রান্ত হয়েছে চরের ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ আরো ৪টি প্রাথমিক স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক, আশ্রায়ন প্রকল্প,হাটসহ শত শত বাড়ি ঘর। আক্রান্তরা ঘর বাড়ি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাড়ি জমাচ্ছেন। গত ১৫ দিনে একটি মাদ্রাসাসহ ৪ শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, কমছে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি। মঙ্গলবার শীতলক্ষ্যার পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বুধবার সেটা অন্তত ১০ সেন্টিমিটার কমেছে। ফলে বর্তমানে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাজিম বকাউল, ফরিদপুর থেকে জানান, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত দু’দিনে তীব্র ভাঙনে বিলীন হয়েছে ১৭ বসতভিটে। এর আগের সপ্তাহে পদ্মা নদী গ্রাস করেছে আরও ২৫ বসতভিটে। কবলিত পরিবারের বেশীর ভাগ উপজেলার বিভিন্ন বেড়িবাঁধে এবং ফসলী মাঠের আশপাশে আশ্রয়ন গেড়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। ভাঙন কবলিত আঃ রশিদ মোল্যা (৬৫) ইনকিলাবকে বলেন “ পিপারে কতই তো লেখলেন, কেউ তো আমাগো পদ্মাডারে বাইন্ধা দিলো না”।

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুর শহর ঘেষে বহমান পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়ার নদীর পানি বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে তীরবর্তী ও চরাঞ্চল। সেই সাথে দেখা দিয়েছে মেঘনার ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে স্কুল, নৌ-ফাঁড়ি ও হাট-বাজারসহ ৩ শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর নদীতে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমির সবজি ক্ষেত
জয়নাল আবেদীন জয়, উল্লাপাড়া থেকে জানান, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে গতকাল বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রান বিতরণ করা হয়। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স›দ্বীপ কুমার সরকারের উপস্থিতিতে ত্রান বিতরণের উদ্বোধন করেন পৌরসভার মেয়র এস.এম. নজরুল ইসলাম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যার পানিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। পানির তোড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নিমগাছী ও ভোলাহাট উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
ঈশ^রগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের ঈশ^রগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদে বন্যা পরিস্থিতি গতকাল বিকেল পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকায় এলাকায় কিছু পরিবারে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তবে কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি। পানিবান্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও স্যালাইন বিতরণ করেছেন স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

কেরানীগঞ্জ(ঢাকা)উপজেলা সংবাদদাতাজানান, গতকাল ঢাকার দোহারে উপজেলা জাতীয়তাবাদী অনলাইন গ্রুপ এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে পৃথক পৃথকভাবে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরন করা হয়েছে।
সেনবাগ(নোয়াখালী)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা কেশারপাড় ইউনিয়নে দুই শতাধিক বন্যার্তদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছে খাজুরিয়া প্রবাসী ও যুব সমাজ।
জয়নাল আবেদীন জয়,উল্লাপাড়া থেকে জানান, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রান বিতরণ করা হয়। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স›দ্বীপ কুমার সরকারের উপস্থিতিতে ত্রান বিতরণের উদ্বোধন করেন পৌরসভার মেয়র।

https://www.dailyinqilab.com/article/93184