২৩ জুলাই ২০১৭, রবিবার, ১১:০৬

অবকাঠামো ও দক্ষতার অভাব

২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম বন্দর সচলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন

বেসামাল জটে অচলদশা : যন্ত্রপাতি জেটি-বার্থ টার্মিনাল ঘাটতি : বন্দরজট নিরসনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জটমুক্ত রাখা অপরিহার্য
সাত দিন ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম বন্দর থাকবে সচল। আগামী ১ আগস্ট থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বন্দর শিপিং কাস্টমস চেম্বার পরিবহন খাতসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এখন প্রস্তুতিকে ঘিরে তোড়জোড় ব্যস্ততা। শীর্ষ কর্মকর্তাদের এতকাল পর যেন টনক নড়েছে। আমদানি-রফতানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্য ও রাজস্ব আহরণ গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ জুলাই সচিবদের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউসের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার নির্দেশ দেন। এই সিদ্ধান্তের প্রতি দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
তারা বলেছেন, জাতীয় অর্থনৈতিক স্বার্থে আরও অনেক আগেই এ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি ছিল। শুক্র-শনিবারসহ ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা বন্দর কার্যক্রম সচলের উদ্যোগের পাশাপাশি এর গোড়া থেকেই ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি-অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, হয়রানি, বকশিশ আর স্পিডমানির নামে ঘুষের ‘হাট’ কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে এমনটি তাগিদ দিয়েছেন পোর্ট-শিপিং সংশ্লিষ্টরা। পণ্যসামগ্রী খালাস, জাহাজীকরণ ও ডেলিভারি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বন্দর কাস্টমস ও শিপিং বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের আওতায় আনার গুরুত্বের দিকটি এক দশক পর আবারও সামনে এসেছে। সার্বক্ষণিক বন্দর সচলের পদক্ষেপ ফলপ্রসূ করতে হলে এসব ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত পরিবর্তন ও অবকাঠামোর পূরণে পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রয়োজন মনে করেন বন্দর শিপিং বিশেষজ্ঞরা। সার্বক্ষণিক (২৪/৭) বন্দর কার্যক্রম সচলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যখন কন্টেইনার ও জাহাজের বেসামাল জটে বন্দরজুড়ে অচলদশা বিরাজ করছে। কাজের গতি থমকে গেছে। বন্দরজটে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও অসন্তোষ প্রকাশ এবং অবিলম্বে জট নিরসনের জন্য নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। জটের মুখে স্টকলট ও অর্ডার বাতিলের আশঙ্কায় গার্মেন্টস শিল্প মালিকসহ রফতানিকারকরা ত্যক্ত-বিরক্ত। বন্দরে কন্টেইনারের মজুদ স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় ৪ হাজার টিইইউএস ছাড়িয়ে গেছে। গত দু’মাস ধরে ধারাবাহিক জটে আটকে পড়ছে দৈনিক গড়ে ৮ থেকে ১৫টি পর্যন্ত জাহাজ। একেকটি জাহাজ জেটিতে ভিড়ার জন্য বহির্নোঙরে অলস অপেক্ষায় থাকছে ৮ থেকে ১৪ দিন। যা স্বাভাবিক নিয়মে হওয়ার কথা এক থেকে তিন দিন। বেড়েছে জাহাজের গড় অবস্থানকাল (টার্ন এরাউন্ড টাইম)। ঈদের ছুটির আগে থেকেই বন্দর কার্যক্রমে লাগাতার উদাসীনতা, বৈরী আবহাওয়া এবং ২৫ জুন বিদেশি জাহাজ ‘এমভি এক্সপ্রেস সুয়েজ’র আঘাতে সিসিটির দু’টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন বিধ্বস্ত হয়ে জট পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। ইতোমধ্যে বিদেশি অপারেটররা (এমএলও) চট্টগ্রাম বন্দরমুখী কন্টেইনারের উপর কনজেশন সারচার্জ আরোপ করেছে। বিদেশের বিভিন্ন বন্দরে চট্টগ্রামমুখী কন্টেইনারের মজুদ বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রেও জটের বাড়তি মাসুল বসবে। এতে করে অব্যাহতভাবেই বেড়ে যাচ্ছে ডেমারেজ, লোকসান, আমদানি-রফতানি ও বন্দর ব্যয় মিলিয়ে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের এই বাড়তি মূল্য দিতে হলেও নিত্য বা ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে তা ঠিকই পুষিয়ে তোলা হয় আরও বেশিহারে। ফলে বাস্তবে খেসারত দিতে হয় সারাদেশের ভোক্তা সাধারণকেই।
শিগগিরই বন্দরজট থেকে মুক্তির উপায় বের করা এবং এর পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা বন্দর কার্যক্রম সচলের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে প্রতিদিনই ঢাকা ও চট্টগ্রামে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। এ সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে কয়েকজন সচিব চট্টগ্রাম বন্দর কার্যক্রম পরিদর্শন করছেন। গতকালও (শনিবার) অনুষ্ঠিত হয় কাস্টম হাউসে উচ্চপর্যায়ের সমন্বয় সভা। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেছেন, আমদানি-রফতানি গতিশীল করতে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউস ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সমানতালে চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বের আধুনিক বন্দরে পরিণত করতে চাই। তিনি সবার সম্মিলিত প্রয়াস ও সহযোগিতার আহŸান জানিয়ে বলেন, সেবার মান বাড়াতে পারলে ব্যাবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নৌ পরিবহন সচিব অশোক মাধব রায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল এবং বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। আগামীকাল (সোমবার) বন্দরের স্টেকহোল্ডার বা ব্যবহারকারীদের সাথে কর্তৃপক্ষের বড়সড় সমন্বয় সভা ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শাখা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে নির্দেশনা এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। বন্দরে বিদ্যমান জট আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। জটসহ বিভিন্ন সমস্যা-সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। আর সার্বক্ষণিক (২৪/৭) বন্দর কাস্টমস কার্যক্রম সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষ একটি কর্মপরিকল্পনা সম্বলিত মডিউল তৈরি করেছে।
বন্দর সমস্যার মূলে
পোর্ট শিপিং কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের প্রধান সমস্যা-সঙ্কট হচ্ছে চারটি। এক. অত্যাবশ্যকীয় ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জাম, জেটি-বার্থ টার্মিনাল, ইয়ার্ডসহ সীমিত অবকাঠামো। দুই. বন্দর-সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো সংস্থা বা বিভাগ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার চেইন ওয়ার্ক যেখানে বন্দর কার্যক্রমের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে জরুরি সেখানে সমন্বয়হীনতা। তিন. সা¤প্রতিক সময়ে বন্দর ও শিপিং খাতে দক্ষতার অভাব অত্যন্ত প্রকট হয়ে উঠেছে। চার. বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বন্দরমুখী ও বহির্মুখী শিল্প কাঁচামাল, আমদানি-রফতানি কন্টেইনারসহ যাবতীয় পণ্যসামগ্রীর প্রধান গন্তব্য ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকা। তাই বন্দরজট নিরসনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সার্বক্ষণিক জটমুক্ত রাখা এবং অদূর ভবিষ্যতে বিশেষায়িত এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণ করা অপরিহার্য। একই সঙ্গে নৌপথ ও রেলরুটগুলো দিয়ে বন্দরের কন্টেইনারজাত ও খোলা পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি করতে হবে। উভয়পথে যা এখন পরিবাহিত হচ্ছে নামেমাত্র। দেশের মোট আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের শতকরা ৯২ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। প্রধান এই বন্দরে বার্ষিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে প্রায় ১৪ শতাংশ। সদ্যবিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বন্দরে প্রায় ৮ কোটি মেট্রিক টন পণ্যসামগ্রী এবং ২৪ লাখ ১৮ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
বৈদেশিক বাণিজ্যে শিপিং নির্ভরতা একই সাথে কন্টেইনারযোগে পণ্য পরিবহন ব্যয়-সাশ্রয়ী ও সহজ হওয়ায় অধিকাংশ দেশ সেদিকে ঝুঁকেছে। এই ক্রমবর্ধমান চাপ ও সামাল দেয়ার মতো অবকাঠামো এবং সক্ষমতায় পিছিয়ে পড়েছে বন্দর। এর অন্যতম নজির হচ্ছে গত ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে বন্দরে নতুন কোন জেটি-বার্থ, কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপিত হয়নি। প্রায় সাড়ে ১১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬১ ধরনের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের উপযোগী ভারী সরঞ্জাম ক্রয়ের প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। কন্টেইনার টার্মিনাল, বে-টার্মিনালসহ কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। অথচ বছর বছর মুনাফালব্ধ নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়নেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের টার্গেট ধরা হয়। তদুপরি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাত্রাতিরিক্ত হস্তক্ষেপে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তপক্ষের (চবক) স্বাভাবিক কাজকর্ম পদে পদে হচ্ছে ব্যাহত। বন্দরে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাব অতীতের চেয়ে প্রকট। তবে দৃশ্যমান সাফল্য ও অগ্রগতির বড় দিকটি হচ্ছে গত এক দশকের মধ্যে এক ঘণ্টার কোনো অঘটনে বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়নি।
এদিকে ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম বন্দর সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উল্লেখ করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ এমপি ইনকিলাবকে বলেন, ব্যবসায়ীমহলের ২৫ বছরের দাবি পূরণ হলো। এরফলে বন্দরে রাতদিন কাজ চলবে। শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য লিড টাইম ঠিক রেখে পণ্য জাহাজীকরণ ও দ্রæত শিল্প কাঁচামাল খালাস গুরুত্বপূর্ণ। এখন রাতদিন রফতানি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। স্টক লট ও অর্ডার বাতিলের মুখে পড়তে হবে না। বন্দরজট প্রসঙ্গে সাবেক চেম্বার সভাপতি এমএ লতিফ বলেন, স্বাধীনতার পর এ যাবত মাত্র ১৩টি জেটি-বার্থ নির্মিত হয়েছে। প্রয়োজন ছিল ৬০ থেকে ৭০টি। চার দশকের ব্যবধানে জাহাজের আগমন বিশ গুণ বেড়েছে। অতীতের অদূরদর্শিতার কারণে বন্দরের অবকাঠামোর উন্নতি না হওয়ায় আজ খেসারত দিতে হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি), কর্ণফুলী কন্টেইনার টার্মিনাল (কেসিটি), বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আযাদ বলেছেন, ২৪ ঘণ্টা বন্দর সচলের সিদ্ধান্ত ভাল দিক। তবে তিন শিফটে কার্যক্রমের জন্য যে বাড়তি পরিচালন ব্যয় মেটাতে হবে সেই তুলনায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে কিনা তার নিবিড় তদারকি নিশ্চিত থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় তেমন সুফল আসবে না। তাছাড়া বন্দরের অবকাঠামো সুবিধা ও যান্ত্রিক সক্ষমতা ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দেয়ার উপযোগী করে তা প্রসারিত করতে হবে।
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ২৪ ঘণ্টা বন্দর সচলের উদ্যোগ সফল ও কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য অনতিবিলম্বে বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় যান্ত্রিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করে ঘাটতি পূরণ এবং সীমিত অবকাঠামোর সমস্যা নিরসন করতে হবে। তাছাড়া এখন বন্দরজট নিরসনে যেভাবে সমন্বয় সভা করা হচ্ছে তা যদি ৩ থেকে ৪ মাস আগে করা হতো তাহলে জটের অবনতি হতো না।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও চিটাগাং চেম্বার পরিচালক একেএম আকতার হোসেন বলেন, বন্দর কাস্টমস কার্যক্রম যাতে ২৪ ঘণ্টা সচল থাকে এরজন্য আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। সেই সঙ্গে বন্দর ও কাস্টমসের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, বিভাগগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে তার সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম জানান, ২৪ ঘণ্টা বন্দর কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্যে বিস্তারিত মডিউল বা কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) বন্দর-কাস্টমস-শিপিং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যবহারকারীদের সাথে সমন্বয় সভায় এ উদ্যোগকে আরও বেগবান করা হবে। বন্দর সূত্র জানায়, কন্টেইনার ও জাহাজের বেসামাল জট স্বল্প সময়ের মধ্যে কমাতে কর্তৃপক্ষ কিছু অ্যাকশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে বন্দরে দীর্ঘদিন খালাস না হওয়া পণ্যসামগ্রী বাইরে সরিয়ে জায়গা খালি করা, নিলামযোগ্য পণ্য শিগগিরই খালাস, কর্ণফুলীর ওপাড়ে কাফকো ও সিইউএফএল জেটিগুলো ব্যবহার করে জাহাজের জট কমানো, রাতের জোয়ারের পালায় আগের চেয়ে বেশি ড্রাফটের জাহাজ জেটিতে ভিড়ানো, দিনরাত ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে পণ্য খালাস ও ছাড়করণ প্রক্রিয়ার দ্রতায়ন, সিসিটির ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন বিদেশি কারিগরি সহায়তায় মেরামত, প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের যান্ত্রিক সরঞ্জাম ধাপে ধাপে সংগ্রহ করা ইত্যাদি। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মাণ কাজ শুরু করা, বে-টার্মিনাল নির্মাণ, লালদিয়া ও কেসিটি টার্মিনাল স্থাপন এবং আরও ভারী সরঞ্জাম সংগ্রহ করা।

 

https://www.dailyinqilab.com/article/88712/