১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার

গণ-আন্দোলন দমনের সব মামলা ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের। গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এ গণ-আন্দোলন জুলাই বিপ্লব নামেও পরিচিত। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান দমনে শেখ হাসিনা সরকারের করা ফৌজদারি মামলা আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। গতকাল শনিবার সচিবালয়ে আইন ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সভায় মোট পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- জুলাই-আগস্টে গণ-আন্দোলন দমন করার জন্য যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেগুলোর সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে; গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন দমন করতে যেসব ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে, সেগুলো আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে; শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে যেসব শিশু-কিশোর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় আটক রয়েছে, তাদের আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে; সন্ত্রাস দমন আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা করা এবং আইন ও বিচার বিভাগের ‘১৬৪৩০’ নম্বরে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় ভিকটিম সাপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সংস্কার-নির্বাচনের প্রয়োজনে যতদিন থাকার থাকবে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারের মেয়াদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘মেয়াদের ব্যাপারে এখনো কোনো কথা হয়নি। দু’টি জিনিস আপনারা মাথায় রাখবেন দয়া করে- রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন। আবার এ দেশের সাধারণ মানুষের যে সংস্কার আকাক্সক্ষা সেখান থেকে প্রত্যাশা থাকবে এ সরকার যেন জরুরি কিছু সংস্কার করে যায়।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অতীতে দেখেছি পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জনগণকে নির্যাতনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু কিছু ভালো সার্ভিস পেয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু ভালো মানুষ আছেন; কিন্তু সিস্টেমটা এমনভাবে দাঁড় করিয়েছিল যে, ভিন্নমত পোষণকারী মানুষ, মৌলিক অধিকার চর্চাকারী মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘এগুলোর সংস্কারের আকাক্সক্ষা মানুষের আছে। সংস্কারের আকাক্সক্ষা ও নতুন নির্বাচনের আকাক্সক্ষার মধ্যে সমন্বয় করে যতদিন থাকার কথা ততদিন আমরা থাকব। বেশিও না কমও না।’ তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা জীবন মিস করি। আমি আমার উন্মুক্ত জীবন মিস করি। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে- যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শেষ করে আমি আমার সেই জীবনে ফিরে যেতে পারব, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য অনেক বেশি উপভোগ্য।’

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/854745