১০ আগস্ট ২০২৪, শনিবার

রাজধানীতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘ডাকাত’, সত্যতা মিলছে না সবখানে

রাজধানীতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডাকাত ও ছিনতাইকারী। কয়েকটি স্থানে এমন ঘটনা ঘটলেও সব এলাকায় ডাকাতি বা গণছিনতাই হচ্ছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ না থাকায় বেশির ভাগ এলাকায় বাড়তি সতর্কতার জন্য দেয়া হচ্ছে পাহারা। করা হচ্ছে মাইকিং।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়াচ্ছে এলাকার কিছু ছিচকে সন্ত্রাসী। এরা এতদিন এলাকার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সাথে থেকে নানা ধরনের আপরাধমূলক কাজ করে আসছিল। তাদের মধ্যেই কেউ কেউ অর্থের লোভ অথবা পূর্ব শুত্রুতা কারণে টার্গেটকৃত বাসা-বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলার কিছু বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আবার বেড়িবাঁধ এলাকার কয়েকটি পয়েন্ট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে রাজধানীজুড়ে ডাকাতি হচ্ছে এমন খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তারপরও এলাকাবাসী বাড়তি সতর্কতার জন্য নিজেরাই নিজ নিজ পাড়া, মহল্লায় পাহারা দিচ্ছেন।

এদিকে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ঢাকার ২৯টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব নিয়েই বলেছেন, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিগগিরই মাঠে নামবে পুলিশ।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতন। এরপর থেকে ভেঙে পড়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জেলা ও পাড়া-মহল্লায় ছিনতাই-ডাকাতির অভিযোগ আসতে শুরু করে। পুলিশ না থাকায় জানমাল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। পাড়া মহল্লায় মাইকিং করে ডাকাতি প্রতিরোধে কাজ করছে এলাকার বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ডাকাতকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন জনতা।

স্থানীয়রা বলছেন, যেসব দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে তাদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে, তারা মূলত সুযোগ সন্ধানী ছিচকে সন্ত্রাসী। যখন যে সুযোগ পায় সেই সুযোগ অনুযায়ী অপরাধ করে। এরা বেশির ভাগই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিশনার অথবা আওয়ামী লীগ নেতার কাছের লোক বলে দাবী করে। পৃকতপক্ষে তারা আসলে তার লোক সেটা স্পষ্ট নয়।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মঞ্জুরুল আলম বলেন, ৫ তারিখের পরে বছিলার কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। তবে যেহেতু পুলিশ নেই তাই এলাকার বাসিন্দারা ভয় না পেয়ে নিজেরাই সংঘটিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের দেখে রাজধানীর অনেক এলাকায় বাড়তি সতর্কতা অনুযায়ী বাসিন্দারা পাহারা দিচ্ছে। মিরপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, তিনি কয়েকটি ডাকাতির খবর শুনেছেন। তবে কোন বাড়িতে হয়েছে তার সঠিক তথ্য পাননি। তবে যেহেতু পুলিশ নেই তাই এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখছেন।

ডিএমপির তেজগাঁও জোনের ডিসি আজিমুল হক বলেন, সেনা বাহিনীর সহযোগিতায় ইতোমধ্যে ঢাকার ২৯টি থানা সেবাদান শুরু হয়েছে। সব নাগরিকের কাছে অনুরোধ, আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/854490