চলমান কারফিউয়ের প্রভাবে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে। তবে কোটা আন্দোলনের প্রভাবে বাজারে বৃদ্ধি পাওয়া সবজির দাম কিছুটা কমলেও এখনো নিত্যপণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। ৬০-৮০ টাকার কমে বাজারে কোন ধরনের সবজি নেই। বৃদ্ধি পাওয়া চালের দাম কমেনি। অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও আকাশঁেছায়া। পেয়াঁজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, মুরগির ডিম ৫৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, অন্য সময়ের তুলনায় বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। বিক্রেতারা অপেক্ষায় ছিলেন ক্রেতা সমাগমের। বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে কিছুটা কম দামে। তবে টমেটো, গাজর ও পেঁপের মতো কয়েকটি সবজির দাম রয়েছে আগের মতোই। বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৯০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৪০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০-২৮০ টাকা, আর আকার ও মান ভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা।
সবজি বিক্রেতা মো. রাজিব জানান, বাজারে ক্রেতা কম আসায় আমাদের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের বেচাকেনা হচ্ছে না। আমরা সবজি আনছি কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। আবার কারফিউর কারণে বিকাল ৫টা থেকে বেচাকেনা বন্ধ করে দিতে হয়। পুরো সময় চালু রাখতে পারলে আমাদের ব্যবসা হতো, ক্রেতারাও আসতেন। এখন সবজি কম করে আনি। কারণ বেশি আনলে বেচা হয় না; উল্টো সবজি পঁচে গিয়ে লস বেশি হয়।
সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৯০ টাকা, চায়না আদা ৩২০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ২৫০-৩০০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় চায়না রসুনের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৯০থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৪০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গরুর গোশতের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার গোশত ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির গোশত কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৮০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকা।
মাছের বাজারগুলোতে দেখা গেছে, ৫০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছের কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাষের শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা হয়েছে। দেশি মাগুরের কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের পাঙাস ১৯০ থেকে ২২০ টাকা ও চিংড়ির কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
বোয়ালের কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা, বাইম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গতকাল মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এক কেজি প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১১৫ টাকা, মাশকলাইয়ের ডাল ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪৫০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০ টাকা, লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
