দৈনিক সংগ্রামের এই কলামে গত ২৩ জুন প্রকাশিত উপ-সম্পাদকীয় নিবন্ধে আমি বলেছিলাম যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত ভারত সফরে ভারসাম্য রক্ষার জন্য স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ঐ কলামে যা বলা হয়েছে তা পূর্ণ সত্য নয়। পশ্চিম পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি এম আর কায়ানী একটি পুস্তক রচনা করেছেন। পুস্তকটির নাম Not the Whole Truth. অর্থাৎ পূর্ণ সত্য নয়। এ ব্যাপারে আরো কিছু অবশিষ্ট রয়েছে। আমার কলামটিও অনুরূপ। কলামটি লিখেছি ২২ জুন। ২২ জুন বিকাল বেলা ১০ দফা সমঝোতা স্মারক প্রকাশিত হয়। ঐ সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে আমি ঐ লেখাটি লিখি। তার দুই দিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিং করেন। প্রেস ব্রিফিংয়ের বিবরণ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের যতগুলো জাতীয় দৈনিক আছে তার সবগুলো প্রধানমন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের পূর্ণ বক্তব্য এবং প্রশ্নোত্তর সম্পূর্ণ প্রকাশ করেনি। অনেকে তার বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এড়িয়ে গেছে। আমি দেশী এবং বিদেশী মাধ্যম খুঁটিনাটিভাবে ভিজিট করি। করার পর বোবা বিস্ময়ে আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করি যে, স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো প্রধানমন্ত্রী এড়িয়ে যাননি। এবং ভারসাম্যও রক্ষা করেননি। তিনি স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন এবং ভারসাম্য রক্ষা না করে সুস্পষ্টভাবে একটি আঞ্চলিক শক্তির দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এসম্পর্কে বিস্তারিত বলার আগে তার প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি কী বলেছেন তার অংশবিশেষ ইংরেজি ডেইলি স্টার এবং বিবিসি বাংলার খবর থেকে নীচে তুলে ধরছি।
গত ২৬ জুন বুধবার ইংরেজি ডেইলি স্টারে প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান খবরের শিরোনাম, ‘Will implement Teesta project with help from India’. অর্থাৎ ভারতের সাহায্যে আমরা তিস্তা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করবো। খবরে বলা হয়েছে, Prime Minister Sheikh Hasina has said her government will implement the Teesta project with assistance from India and it has got assurances from the neighbouring country in this regard. As Bangladesh has a longstanding issue with India over the sharing of Teesta waters, it would be easy for Dhaka if the Teesta project is implemented by Delhi, she said. “As India has come forward, we think if we implement the Teesta project with India, we will not have to face problems regarding water every day. We will have that benefit.
অনুবাদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, বাংলাদেশ ভারতীয় সহায়তায় তিস্তা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করবে। প্রতিবেশী ভারত এই আশ্বাস দিয়েছে। যেহেতু তিস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন একটি সমস্যা (ইস্যু) চলছে তাই যদি ভারত এটি বাস্তবায়ন করে তাহলে আমাদের জন্য অনেক সহজ হবে। যেহেতু ভারত এগিয়ে এসেছে তাই আমরা মনে করি যে, ভারতের সহায়তায় তিস্তা বাস্তবায়ন করলে প্রতিদিন আমাদেরকে পানি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না। আমরা সেই উপকার এখান থেকে পাবো।
॥ দুই ॥
২৫ জুন মঙ্গলবার বিবিসি এসম্পর্কে রিপোর্ট করেছে, “পানি বণ্টনের সঙ্গে যেহেতু ভারত জড়িত এবং দেশটি যেহেতু প্রকল্পে সহযোগিতা করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে, সে কারণে ভারতের সঙ্গে কাজটি করতে পারলে ভালো হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। “ভারত যখন এগিয়ে আসছে, আমরা যদি এটা করি, তাহলে পানি নিয়ে আর প্রতিদিন প্যাঁ প্যাঁ করতে হবে না।” “ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যারই তো সমাধান হয়ে গেল। তো সেটাই আমার জন্য সহজ হল না?,” সাংবাদিকদের বলেন শেখ হাসিনা”।
ওপরে যে দুটি রিপোর্ট করা হলো তার কোনোটিই আমার নয়। তবে তিস্তার পানি উত্তরবঙ্গের তিন কোটি মানুষের জীবন মরণ সমস্যা। তিস্তার পানি নিয়ে তাদের আহাজারি বিবিসিতে রিপোর্টকৃত “প্যাঁ প্যাঁ ” নয়।
ডেইলি স্টার এবং বিবিসির রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ভেতরে ভেতরে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, তিস্তা প্রজেক্ট ইন্ডিয়াকে দেওয়া হবে। এই প্রচেক্ট নিয়ে চীন যে আগ্রহ দেখিয়েছিল এবং যতদূর এগিয়ে এসেছিল সেটি বানচাল হয়ে গেল বলে ধারণা করার কারণ আছে। চীনকে তিস্তা প্রজেক্ট না দিয়ে ভারতকে দেওয়ার পেছনে প্রধান কারণটি হলো ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিষয়টি বুঝতে গেলে একটু পেছনে যাওয়া দরকার।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের পর দুই দিন হয়ে গেল (২৮ জুন এই কলামটি লিখছি)। এরমধ্যে কয়েকটি পত্র পত্রিকায় এসম্পর্কে নিজস্ব ভাষ্য এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর সংক্ষিপ্ত সার নিম্নরূপ:
কূটনীতিকরা মনে করেন, তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যুটি এখন গৌণ। গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নিরাপত্তার প্রশ্নটি। কারণ, তিস্তা প্রকল্পটি যেখানে বাস্তবায়ন হবে, সেটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে। আর সেখানে কোনোভাবেই চীনের উপস্থিতি দেখতে চায় না দিল্লী। বাংলাদেশ এমন সিদ্ধান্ত নেবে না, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে দরকষাকষি চলছে কয়েক দশক ধরে। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পানি বণ্টনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে যাচ্ছিল।
তখন তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত হয় একটি খসড়া চুক্তিও। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত চুক্তিটি সইয়ে ব্যর্থ হয়। তিস্তা চুক্তি সই করতে না পারায় দীর্ঘ এক দশক পানি নিয়ে দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকও করতে দেয়নি ভারত।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ তৈরি করতে পারে এমন কোনো কাজ করবে না বাংলাদেশ। আর তিস্তায় চীন যুক্ত হলে দেশটির প্রচুর নাগরিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেনস নেকের কাছে কাজ করবে। আর সেখানে চীনা নাগরিকের উপস্থিতি কখনোই চাইবে না দিল্লী।
অথচ ২০১৬ থেকেই চীন তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কথা বলছে। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন বাংলাদেশ সফরে আসেন তখনও এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে নদী খনন, ভূমি পুনরুদ্ধারসহ নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয় ঢাকা ও বেইজিং। সেই থেকে তিস্তা নিয়ে কাজ করতে থাকে চীন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের মে মাসে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি ‘প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল’ বা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাব (পিডিপিপি) প্রস্তুত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আনুষ্ঠানিক শিরোনাম তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প (টিআরসিএমআরপি)। ২০১৯ সালের ৩ জুন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত প্রস্তাবটি ২০২০ সালের ২৩ জুলাই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, তিস্তায় বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ‘পাওয়ার চায়না’ নামক একটি চীনা সংস্থার প্রস্তাবিত টিআরসিএমআরপি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে যাওয়ার পর থেকেই মূলত ভারতের দিক থেকে আপত্তি ওঠে।
॥ তিন ॥
ভারতের দিক থেকে আপত্তি ওঠার কারণ হলো ভারতের নিরাপত্তা। ভারতের নিরাপত্তা সম্পর্কে একটি স্বতন্ত্র কলাম না লিখলে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাবে না। তবে আজ আমি নিরাপত্তার ইস্যুটি সামনে আনছি না। আমি তিস্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছি। নিরাপত্তা সম্পর্কে শুধু এটুকু বলা যায় যে, এই প্রকল্পটি যেখানে শেষ হবে তার অদূরে থাকবে ভারতের শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেক। চিকেন নেকের কয়েক কিলোমিটার দূরে চীনাদের উপস্থিতি ভারতের জন্য বিপজ্জনক। সুতরাং তিস্তা প্রকল্পে চীনাদেরকে জড়িত করা যাবে না। তবে প্রায় ৭ বছর ধরে এই প্রকল্পের সাথে জড়িত থেকে এবং প্রকল্পের ওপর Feasibility Report বা সম্ভাব্যতা রিপোর্টের পর চীন কিভাবে সেটা গ্রহণ করবে সেটি ভবিষ্যতই বলবে। তবে চীনকে এভাবে কনুই দিয়ে গুঁতা মেরে আউট করার নজির এই সরকার অতীতেও করেছে। আর সেটা হলো সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প নিয়ে। এসম্পর্কে দৈনিক সমকাল যে রিপোর্ট করেছে তা নিম্নরূপ:
কৌশলগত প্রকল্পগুলোতে চীনের উপস্থিতি কখনোই দেখতে চায় না ভারত। আর বাংলাদেশও ভারতকে অসন্তুষ্ট করে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। যেমনটি হয়েছিল সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে। ২০১২ সালে অনুমোদন দেওয়া এ গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্পটি ছিল সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে এর সম্ভাব্যতা যাচাইও হয়েছিল। এ বন্দরটি নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তিও হওয়ার কথা ছিল। তবে এ প্রকল্পে চীনের যুক্ত হওয়া নিয়ে ভারতের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত ঢাকা ও বেইজিং ওই বন্দর নির্মাণে একমত হয়নি। পরে আর আলোর মুখও দেখেনি প্রকল্পটি। সোনাদিয়ায় যেহেতু চীনের সঙ্গে কথা অনেক দূর এগিয়ে ছিল, ফলে অন্য কোনো দেশকে এখানে যুক্ত করেনি বাংলাদেশ। বরং সোনাদিয়া থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মাতারবাড়ীতে জাপানের সহায়তায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে এগিয়ে যায় ঢাকা।
আজকের এই কলামটি শেষ করছি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাতের মন্তব্য দিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘তিস্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে আমি অত্যন্ত লজ্জিত ও দুঃখিত। সেখানে বলা হয়েছে তিস্তার বাংলাদেশের যে অংশ সে অংশের পানি ব্যবস্থাপনা ও পানি সংরক্ষণে দুই দেশের কারিগরি দল কথাবার্তা বলবে। বলা হচ্ছে আমরা ড্রেজিং করলে সমাধান হবে। কিন্তু ড্রেজিং করলেতো পানি উৎপাদন হবে না। এধরনের সিদ্ধান্ত খুবই দু:খজনক।’
ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করে মমতা ব্যানার্জির ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেয়া চিঠি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনীহার কারণেই তিস্তাচুক্তি হচ্ছে না। ভারতের সংবিধান দেখলে দেখতে পাবেন যে, আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পূর্ণভাবে ফেডারেল সরকারের আওতাভুক্ত। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি থাকলে ভারত সরকার চুক্তি করতে পারবে না এটা যারা মনে করেন তাদের ফেডারেল গভর্নমেন্ট সম্পর্কে ধারণার অভাব আছে। মূলত চুক্তিটা হচ্ছে না ভারত সরকারের কারণে, কোনো রাজ্যের সরকারের জন্য না। বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে পূর্ণ চুক্তি রয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য নদী নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। এমনকি তিস্তা নিয়ে ১৯৮৪ সালের আগ থেকে আলোচনা চলছে কিন্তু আজ পর্যন্ত হয়নি। ২০১১ সালে একটা চুক্তি হতে যাচ্ছিল, কিন্তু হয়নি।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতকে মালবাহী ট্রেনের যাতায়াতের অনুমতি, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে ভারতের প্রবেশ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি থেকে সরে আসার বিষয়গুলোকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে খর্ব করার অভিযোগ করেছে বিরোধী দলগুলো। এসম্পর্কে স্থানাভাবে আজ আর আলোচনা করা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে সুযোগ হলে লিখবো, ইনশাআল্লাহ।
Email: asifarsalan15@gmail.com
