১০ জুন ২০২৪, সোমবার, ১২:৪৫

৯ মাসে অর্ধেক বাজেটও বাস্তবায়ন করা যায়নি

মূল বাজেটের ৪৩.৪৪% ও সংশোধিত বাজেটের ৪৬.৩২% বাস্তবায়ন

নয় মাসে বাজেটের অর্ধেক টাকাও খরচ করা সম্ভব হয়নি। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সংশোধিত বাজেটের মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ তিন লাখ ৩০ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। যদি সংশোধিত বাজেটের পুরো বাস্তবায়ন করতে হয় তবে তিন মাসে ৮৩ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা খরচ করতে হবে, যা অসম্ভব বলে ধরে নেয়া যায়।
বাজেটে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব প্রাপ্তির পরিমাণ ধরা হয়েছিল পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে উভয় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে যথাক্রমে চার লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা এবং চার লাখ ১০ হাজার টাকা কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআরের আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৪৯ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা (গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল দুই লাখ ২২ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা)। এটি মূল লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ এবং সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৬০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাসে এনবিআর-কে এক লাখ ৬০ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে।
বাজেট উপাত্ত দেখানো হয়েছে, সংশোধিত বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ ৪৯ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর বিপরীতে বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আদায় হয়েছে যথাক্রমে ছয় হাজার ৮৪ কোটি টাকা এবং ৩০ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।

বাজেট উপাত্ত অনুযায়ী, সংশোধিত বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ৯ মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা (এটি জিডিপির দশমিক ৯ শতাংশ)। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা।

বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ৯ মাসে বৈদেশিক উৎস থেকে ২৭ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১৭ হাজার ১৫২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।

এদিকে চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ছিল দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কাটছাঁট করে দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, এর বিপরীতে ৯ মাসে মোট ব্যয় হয়েছে ৭৭ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে মূল এডিপির ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও সংশোধিত এডিপির ৩১ দশমিক ৫৪ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) একই সময়ে মূল এডিপির ২২ শতাংশ ও সংশোধিত এডিপির ২৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছিল। অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। ওই বছর ৯ মাসে এডিপি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/841574