৪ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার, ৫:৫৮

সমাজের প্রয়োজনে শিক্ষাব্যবস্থা কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ

-ইকতেদার আহমেদ

শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। একটি জাতি বা দেশকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ। পৃথিবীতে উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের প্রায় শতভাগ নাগরিক শিক্ষার আলোয় আলোকিত। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব নাগরিকের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।

আমাদের দেশ একটি স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র। আশা করা যায়, বর্তমান অর্থনৈতিক ধারা অব্যাহত থাকলে বর্তমান দশকের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হবে। আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার বিষয়টি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে স্থান পেয়েছে। এ বিষয়ে সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র (ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সব বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য; (খ) সমাজের প্রয়োজনের সাথে শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করতে এবং সে প্রয়োজন সিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য; (গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

যদিও দাবি করা হয়ে থাকে-দেশের শতভাগ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনা হয়েছে কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্নধর্মী। এখনো গ্রামের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক এবং শহরে ও উপ-শহরের বস্তিতে বসবাসরত শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমনকি বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে এমন অনেক আছেন যাদের সন্তানরা মা-বাবার অক্ষমতায় শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না।

আমাদের জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম প্রথমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করা হলেও বর্তমানে এটি শহর ও গ্রামাঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয় নির্বিভেদে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থী সরকারের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে যেসব পাঠ্যপুস্তক পায়; তার মূল্যমান ৩০০ থেকে তিন হাজার টাকা। বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের শতভাগ শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে যে বই বিতরণ করা হচ্ছে তা আমাদের দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় শতভাগ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে বিতরণ সমর্থনযোগ্য কি না তা বিবেচনার দাবি রাখে। অনেক অভিভাবকের প্রশ্ন- বিনামূল্যে বই বিতরণ কি প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সন্তোষজনক শিক্ষাদান নিশ্চিত করে কোচিংবিমুখতা রোধ করতে পেরেছে? আর রোধ করতে না পারলে যেসব অভিভাবক কোচিংয়ের পেছনে মাসিক আয়ভেদে ৫০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করছেন তাদের সন্তানকে বার্ষিক ৩০০ থেকে তিন হাজার টাকার পুস্তক বিনামূল্যে দিয়ে আর্থিক সমর্থন দেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

বিনামূল্যে পুস্তক বিতরণে যে অর্থ ব্যয় হয় তা দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যয় করা হলে দেশ ও জাতি বেশি হারে লাভবান হবে।
সরকারের প্রাথমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপনী কার্যক্রম চালু পরবর্তী দেখা গেছে, সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতির আওতায় কোচিংকে নিরুৎসাহিত করার প্রয়াস নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ঠিক উল্টো। প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক সমাপনী পরীক্ষা দু’টি প্রতিযোগিতামূলক ছিল বিধায় অভিভাবকরা সন্তানদের সব বিষয়ে ‘এ প্লাস’ নিশ্চিতকরণে কাছে অতীতে দ্বারস্থ না হলেও এ দুটি পরীক্ষা বহাল থাকা পর্যন্ত অনেকটা বাধ্য হয়ে কোচিংয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। এতে করে শিক্ষা গ্রহণের ব্যয়ভার বেড়ে যায়; যা অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মেটানো কষ্টসাধ্য ছিল।

সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি চালু পূর্ববর্তী সরকারি-বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব স্তরে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদানের আবশ্যকতা ছিল। কিন্তু অল্প কিছুসংখ্যক শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে কার্যক্রমটি চালু করায় এর সফলতা মেধা বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি তা শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা অনুধাবন করতে পেরেছেন।

প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক সমাপনী পরীক্ষায় শতকরা পাসের হার শতভাগের কাছাকাছি দেখিয়ে যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়- সৃজনশীল পদ্ধতির সুফল এ সফলতার ভাগিদার। কিন্তু অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন চিত্র। প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক সমাপনী পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে দেখা যায়, পাসের হারের এবং ‘এ প্লাস’ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যে কৃতিত্বের দাবি করা হয় তা আদৌ ঠিক নয়।

সৃজনশীল পদ্ধতি চালু-পরবর্তী নোট বই ও গাইড বই সৃজনশীলতা বিকাশে অন্তরায়- এ কথা বলে এগুলোর প্রকাশনা ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখন বাস্তব অবস্থা হচ্ছে নোট বই ও গাইড বইয়ের অনুপস্থিতিতে শতভাগ শিক্ষার্থী কোচিংনির্ভর হয়ে পড়ে। এতে করে শিক্ষার ব্যয়ভার বহুগুণ বেড়ে যায়। তা ছাড়া সৃজনশীল পদ্ধতি প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ভিন্নধর্মী হওয়ায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কোচিং ফি’র অতিরিক্ত মডেল টেস্টে অবতীর্ণ হয়ে নিজের সক্ষমতা যাচাই করে দেখতে হতো। এতে শিক্ষার ব্যয় কি পরিমাণ বেড়েছে তা সহজে অনুমেয়।

আমাদের দেশে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রতিটি শ্রেণীর প্রতি শাখায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ন্যূনতম ৮০। একজন শিক্ষকের পক্ষে ৩৫-৪০ মিনিট ব্যাপ্তির ক্লাসে এত বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রীর প্রতি মনোনিবেশ কতটুকু সম্ভব তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।

সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা হিসেবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে যে অর্থ পান তা চার সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিবারের মাসিক ব্যয় নির্বাহে যথেষ্ট কি না? যথেষ্ট না হয়ে থাকলে জীবন ধারণের তাগিদে স্বভাবত শিক্ষকরা বিকল্প আয়ের পথ খুঁজবেন। শিক্ষকদের বিকল্প আয়ের পথ হিসেবে কোচিং সেন্টারে শিক্ষাদান অথবা নিজ গৃহে অথবা ছাত্রছাত্রীদের গৃহে শিক্ষাদান হতে পারে নীতি-নৈতিকতাকে সমুন্নত রেখে কিছু বাড়তি আয়ের মাধ্যমে জীবনযাপন ব্যয় নির্বাহের ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা। শেষোক্ত দু’টি পথে অর্থ উপার্জন শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয়বহুল এবং শিক্ষকদের জন্য তুলনামূলক বিচারে অসুবিধাজনক বিবেচনায় কোচিং সেন্টারই শিক্ষকরা বিকল্প পথে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু সরকার সম্প্রতি যে কোচিং নীতিমালা ঘোষণা করেছে; তাতে ভালো স্কুলের শিক্ষকদের কোচিংয়ের মাধ্যমে জীবনযাপনে অবশিষ্ট আয়ের পথ রুদ্ধ হয়েছে, অন্যদিকে কম মেধাবী শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিচালিত নামসর্বস্ব কোচিং সেন্টারের অর্থ উপার্জনের পথ হয়েছে প্রশস্ত। এসব নামসর্বস্ব কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। ভালো স্কুলের শিক্ষকদের দিয়ে পরিচালিত কোচিং সেন্টারে যে মানের শিক্ষা দেয়া হয়; তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাঠ সমাপ্ত করেছে এমন বিজ্ঞাপননির্ভর নামসর্বস্ব কোচিং সেন্টারে শিক্ষার মান অনেক নি¤েœর। কিন্তু অধিকাংশ অভিভাবক যাদের তুলনামূলক মান যাচাইয়ের সুযোগ ঘটেনি, অবশেষে দেখা যায়, তাদের সন্তানরা আশানুরূপ ফল না করায় তারা ব্যথিত হচ্ছেন। ভালো স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং মান নিয়ে সন্তুষ্ট এবং কোচিং ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায় অনেক অভিভাবকের প্রশ্ন- শিক্ষকদের কোচিং বন্ধ করা হয়েছে কিন্তু শিক্ষকতা পেশার সাথে সম্পৃক্ত নন এমন অনেকে যারা কোচিং সেন্টার চালাচ্ছেন তারা কি কোচিং ব্যবসায় গুটিয়ে নিয়েছেন?

কোচিং নীতিমালা অনুযায়ী, ভালো স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে পাঠদানান্তে নিজ স্কুলে কোচিং করালে ছাত্র প্রতি ৩০০ টাকা করে নিতে পারবেন। তা ছাড়া এ নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে- ভালো স্কুলের একজন শিক্ষক নিজ স্কুলবহির্ভূত সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন। উভয় ব্যবস্থা শিক্ষকদের শ্রম, কোচিংসংশ্লিষ্ট ব্যয় ও আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় ভালো স্কুলের শিক্ষকদের এ ব্যবস্থা আকৃষ্ট করতে পারেনি। এর সুযোগ নিচ্ছে অখ্যাত স্কুলের শিক্ষক ও বিজ্ঞাপন-নির্ভর নামসর্বস্ব কোচিং সেন্টারগুলো। এর মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা না পাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।

এ কথা অনস্বীকার্য যে, আধুনিক পদ্ধতিতে সমন্বিতভাবে পাঠদান করা হলে কোচিংয়ের আবশ্যকতা থাকবে না। কিন্তু সে ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা এমন হতে হবে, যাতে ভদ্রোচিত জীবনযাপনে তাদের কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়। এ কথাও ঠিক যে, এমন কিছু শিক্ষক আছেন; কোচিং ব্যবসায় তাদের এমনভাবে পেয়ে বসেছে, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে তারা প্রতিদিন একাধিক ব্যাচে কোচিং করিয়ে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন।

অনেক স্কুলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্কুল উন্নয়নের নামে যে টাকা নেয়া হয় সেই অর্থের সঠিক হিসাব স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা দিতে পারবেন না। রাজধানী, বিভাগীয় ও বিভিন্ন জেলা শহরের ভালো স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে কৃতকার্য হওয়া তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ায় এবং আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় বেশির ভাগ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিফল হয়ে বাঁকা পথে ভর্তির সুযোগ খুঁজতে থাকেন। এতে দেখা যায়, স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সাথে সম্পৃক্তরা বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। আকর্ষণীয় ও লোভনীয় অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকায় ভালো স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে থাকে। নির্বাচনে এমন অনেকে রয়েছেন যাদের ব্যয় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এত বেশি ব্যয়ে নির্বাচিত হওয়ার একটি উদ্দেশ্য আর তা হচ্ছে ছাত্রছাত্রী ভর্তি ও শিক্ষক নিয়োগে অবৈধ প্রাপ্তি। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক নিয়োগে শোনা যায়, পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের মাধ্যমে কার্য সমাধা করা হয়েছে। অবৈধ ভর্তিবাণিজ্য বন্ধে যদিও কিছু স্কুলের ক্ষেত্রে লটারির প্রথা প্রচলন করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রকৃত মেধাবীদের প্রতি একদিকে নিষ্ঠুরতা আর অন্যদিকে এমন সব দুর্বল মেধার শিক্ষার্থীর প্রবেশ ঘটছে যা সার্বিক বিচারে ভালো স্কুলের মানকে নিম্ন মুখী করছে।

আমাদের দেশের প্রতিটি সরকারকেই ক্ষমতা গ্রহণ-পরবর্তী বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা ছাড়াই স্বল্পমেয়াদে আশানুরূপ ফল পাওয়ার অভিপ্রায়ে শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। কিন্তু এ উদ্যোগ উদ্দেশ্যমূলক হওয়ায় সুদূরপ্রসারী ফল দিতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক, বিজ্ঞানসম্মত, গতিশীল, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মেধাবীদের উপযুক্ত বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করা। এর পাশাপাশি অবৈতনিক ও বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সুযোগ এমনভাবে সীমিত করা- যাতে দেশ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত যারা শিক্ষার ব্যয় ও পাঠ্যপুস্তক ব্যয় নির্বাহে অক্ষম একমাত্র তারা যেন এর অন্তর্ভুুক্ত থাকে।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail : iktederahmed@yahoo.com

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/839999