১ জুন ২০২৪, শনিবার, ৪:৩৩

৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী নগরে জলাবদ্ধতা

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিলেটের সীমান্তবর্তী সাতটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলো হলো- জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ। এসব এলাকার ৫ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

এ দিকে সুরমা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে মহানগরের তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে পানি উঠতে শুরু করে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপশহর, সোবহানীঘাট, তালতলা ও মেন্দিবাগ-মাছিমপুর সড়কে গিয়ে দেখা যায় সড়কে প্রায় হাঁটু পানি জমে গেছে। অন্য দিকে, নগরের তালতলাস্থ সিলেটের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়েও পানি প্রবেশ করেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্য মতে, গতকাল সকাল ৬টায় সিলেটের কানাইঘাট সুরমা পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর অমলসিদ পয়েন্টে ২০৯ সেন্টিমিটার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য দুটি পয়েন্ট গোয়াইনঘাটের জাফলং ডাউকি পয়েন্ট ও সারি গোয়াইন পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ দিকে, জেলায় ৫৪৭টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি উপজেলার ৩৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যাকবলিত এলাকার ৪ হাজার ৮০২ জন লোক আশ্রয় নিয়েছে। প্লাবিত উপজেলাগুলোর মধ্যে কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শুকনো খাবার ও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিলেট জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দুর্গত মানুষের খোঁজ নিতে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান উপজেলাগুলোতে পরিদর্শন করেছেন। সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫টি উপজেলার মানুষের জন্য ২০০ বস্তা করে মোট ১ হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ মেট্রিক টন করে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্লাবিত এলাকা ছাড়াও আশপাশের উপজেলাগুলোকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন জানান, বন্যাকবলিত উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল-রুম খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/839365