১ জুন ২০২৪, শনিবার, ৪:২৫

কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার

কুরবানির ঈদের আরো দুই সপ্তাহ বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই নিত্য পণ্যের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। গোশত রান্না করার যাবতীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। আদা-রসুন, কাঁচা মরিচ পেঁয়াজ-আলু ও মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়েছে শাক-সবজি, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে মসলা, কাঁচা মরিচ, আদা-রসুনসহ আরও বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। তবে চাল, ডাল ও আটা-ময়দার দাম আগের মতোই স্থিতিশীল। মাছ- গোশতের দামও বাড়েনি বা কমেনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়ে চলেছে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম। কুরবানির ঈদে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়ছে। আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে দেখা গেছে, কয়েকটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে, আবার কমেছেও কয়েকটির। তবে বেশিরভাগ সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। বাজারে টমেটো ১০০, দেশী গাজর ৯০, চায়না গাজর ১৪০, লম্বা বেগুন ৭০, সাদা গোল বেগুন ৭০, কালো গোল বেগুন ৭০, শসা ৬০-৮০, উচ্ছে ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৮০, পেঁপে ৫০-৬০, ঢেঁড়স ৬০, পটল ৫০-৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৫০, ঝিঙা ৬, বরবটি ৬০, কচুর লতি ৮০, কচুরমুখী ১০০-১২০, মিষ্টি কুমড়া ৩০, শজনে ১২০, কাঁচা মরিচ ২০০, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৫০-৬০, চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।

এদিকে সবজির অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম। বাজারে মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০, দেশি পেঁয়াজ ৮৫, লাল আলু ৫৫, সাদা আলু ৬০, বগুড়ার আলু ৭০, নতুন দেশী রসুন ২২০, চায়না রসুন ২২০-২৩০, চায়না আদা ২৬০, ভারতীয় আদা ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানেই ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম ১০, দেশী পেঁয়াজের দাম ৫-১০, সাদা আলুর দাম ৫-১০, দেশী রসুনের দাম ২০ এবং চায়না রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলেন, এখন আর দাম কমার সুযোগ নাই। শুধু দাম বাড়বে। ঈদের আগে পর্যন্ত এমন দামই থাকবে। এখন আর দাম কমার কোনও সুযোগ নেই। এখন শুধু দাম বাড়বে।

বাজারে গরুর গোশত কেজি প্রতি ৭০০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার গোশত ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির গোশত কেজি প্রতি ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ টাকায়, দেশী মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

উৎপাদন বাড়ায় চলতি সপ্তাহে ইলিশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেটা গত সপ্তাহেও ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

মাছের বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা , মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাস ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৪০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশী কই ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইককা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮৫ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। কমেছে কক ও লেয়ার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯৫, কক ৩১৫-৩৩০, লেয়ার ৩৩৮-৩৪৫, দেশী মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা। লেয়ার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১২ টাকা এবং কক মুরগির ১০ থেকে ১৫ টাকা।

এদিকে সবকিছুর দাম বাড়লেও মুদিপণ্য রয়েছে অপরিবর্তিত। প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০-১৪০, ছোট মসুর ডাল ১৪০, মোটা মসুর ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৮০, খেসারি ডাল ১২০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭, খোলা সয়াবিন ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০, খোলা ঘি ১২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫, খোলা চিনি ১৩০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://www.dailysangram.info/post/557690