২৯ মে ২০২৪, বুধবার, ৪:৩৫

রাজধানীর সড়কে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সোমবার রাজধানীর প্রায় সব সড়কে হাঁটুপানি ছিল। কোন গাড়ি চললেই পানির ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে আশেপাশের ফুটপাথে। মূল সড়ক থেকে নিচু এলাকার ঘর, দোকানেও পানি ঢুকে যায়। অপরিসীম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। দুই সিটি করপোরেশনের প্রচেষ্টায় গতকাল জলাবদ্ধতা কমেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে সড়কে সড়কে। আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি করায় সেখান দিয়ে চলতে গিয়ে অনেকদিন ধরেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এর সাথে সোমবারের দিনভর প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে দুর্ভোগ আরো বেড়েছে নগরবাসীর।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে সারা দেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সোমবারও সারা দিন বৃষ্টিপাত চলে। এর সাথে ছিল প্রবল বাতাস। একটানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। প্রায় সারা দিনই সড়কে পানি জমে ছিল। এতে বিভিন্ন সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেক সড়ক থেকে ইট-খোয়া-পিচ উঠে গেছে। সেগুলো এখন রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। টিকাটুলি ইত্তেফাক মোড়ে অনেক দিন ধরেই সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। বিশেষ করে মতিঝিল থেকে টিকাটুলি যেতে রাস্তার পশ্চিম লেনের দুই দিকে বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছে। এর সাথে কোথাও কোথাও রাস্তার মাঝখানে আড়াআড়ি কেটে রাখা হয়েছে। বৃষ্টির পানির কারণে এসব সড়কে কাদাপানি হয়ে গেছে। আড়াআড়ি কেটে রাখা স্থানে আগে পুটিং দিলেও বৃষ্টির পর তা সরে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। টিকাটুলি থেকে হানিফ ফ্লাইওভারগামী সড়কেও একই অবস্থা। রাস্তা কেটে রাখায় এ সড়কে রাতদিন যানজট লেগেই থাকছে। মতিঝিল শাপলা চত্বরে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। শাপলা চত্বরের পশ্চিম প্রান্তে দৈনিক বাংলা যাওয়ার পথে আগে থেকেই গর্ত ছিল। বৃষ্টির পর তা আরো বেড়েছে। এ ছাড়া মেট্রোস্টেশনের নিচে নতুন করে আরো গর্ত তৈরি হয়েছে। আরামবাগ থেকে ফকিরাপুল এবং ফকিরাপুল থেকে দৈনিক বাংলা যাওয়ার সড়কেও কোথাও কোথাও গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্ত থেকে জনগণকে সচেতন করতে লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া কমলাপুর, বাসাবো, মুগদা, মানিকনগর ওয়াসা রোড, মুগদা হাসপাতালের সামনের সড়কসহ আশপাশের সড়ক, টিটিপাড়া বিশ্বরোডে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আরকে মিশন রোড অনেক দিন ধরেই বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। এবার বৃষ্টির পর সড়কটির অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। পল্টন, বিজয়নগর, গুলিস্তান এলাকার অনেক সড়কের মধ্যেও গর্ত তৈরি হয়েছে। একইভাবে মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক, গাবতলীর আশপাশের সড়ক, মোহাম্মদপুর, উত্তরার বিভিন্ন সড়ক, বাড্ডা, রামপুরা এলাকার বিভিন্ন সড়কে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে মানুষের চলাচলে বিঘœ ঘটছে। কোথাও কোথাও দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে ভ্যান-রিকশা, মোটরসাইকেল থেকে বড় গাড়িও। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে গত দুইদিন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা এখন প্রায় নেই বললেই চলে। এছাড়া প্রায় দুই শতাধিক গাছ ভেঙে রাস্তার ওপর পড়ায় সেগুলোও অপসারণ করেছে তারা। তবে রাস্তায় গর্ত হলেও মেরামত করা হয়নি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন রাস্তা ভেজা থাকায় এখনই মেরামত করা যাচ্ছে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের নয়া দিগন্তকে বলেন, ঢাকা ওয়াসা আমাদের কাছ থেকে অনুমিত নিয়ে রাস্তা কেটেছে। যেসব জায়গায় রাস্তা কাটা হয়েছে সেখানে কিছুটা সমস্যা আছে। তা ছাড়া তেমন সমস্যা নেই। আর রাস্তা কাটার পর মেরামতের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এজন্য আমাদের টিমও রয়েছে। তবে রাস্তা না শুকালে মেরামত করা যাবে না। রাস্তা শুকালেই মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/838562