১২ মে ২০২৪, রবিবার, ৬:০১

জীবনযাত্রা আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে

গেল বেশ কয়েক মাস ধরেই ডলারের বাড়তি দামের কারণে খুচরা বাজারে বেড়েছে আমদানি করা নিত্যপণ্যের দাম। দেশে খাদ্যশস্য এবং অন্য পণ্য আমদানি করতে হয় পুরোপুরি জোগান মেটাতে। যে কারণে দেশের বাজারে পণ্যের দামে ডলারের সবচেয়ে বড় প্রভাব থাকে। বিশেষ করে চিনি, পাম তেল, সয়াবিন তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, আদা, মরিচ, গম, চাল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, তেলবীজ রয়েছে শীর্ষ খাদ্যসামগ্রী আমদানির মধ্যে। এছাড়া সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাবান, শ্যাম্পু থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বাড়বে। ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ডলারের দাম বাড়ায় সবচেয়ে বড় বিপদে পড়েছেন আমদানিকারকরা। ডলারের অপ্রতুলতায় বেশিরভাগ ব্যাংকই এলসি খুলতে অনীহা প্রকাশ করছে। এ প্রবণতা বাড়বে। আমদানি কমে গেলে পণ্যের দামও বাড়বে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে ডলারের দর বৃদ্ধি পণ্যমূল্যে বিরূপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি আরেক দফা জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।

সূত্রমতে, গত ৮ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি ডলারে ৭ টাকা বাড়িয়ে মধ্যবর্তী দর ১১৭ টাকা ঠিক করেছে। তবে খোলাবাজারে ডলার কেনাবেচা হয়েছে ১২৫ টাকা পর্যন্ত। একই সাথে ‘স্মার্ট’ ব্যবস্থা তুলে দিয়ে সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাড়ানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার দেয়া অর্থের সুদহার বা নীতি সুদহার। নতুন পদ্ধতি চালুর আগে সর্বশেষ ডলারের ঘোষিত দর ছিল ১১০ টাকা। বাস্তবে দর ছিল আরো বেশি। ডলার বিনিময়ে চালু করা হয়েছে ‘ক্রলিং পেগ’। এটি এমন পদ্ধতি, যার মাধ্যমে মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করে তা একটি সীমার মধ্যে ওঠানামা করতে বলা হয়। ডলারের দর পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার আগের এ পদ্ধতিতে বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের পরামর্শে কেন্দ্র্রীয় ব্যাংক এটি কার্যকর করল। দেখা গেছে, আইএমএফের পরামর্শে বিভিন্ন দেশ এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করেছে। এতে সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি হয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা মনে করেন, ডলারের দর বৃদ্ধিতে আমদানি খরচ বাড়বে। এতে আমদানি আরো নিরুৎসাহিত হবে। বৈধপথে প্রবাসী আয় ও রফতানিতে উৎসাহিত হবেন ব্যবসায়ীরা। এভাবে ডলারের প্রবাহ বেড়ে সঙ্কট কেটে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

দেশের ইতিহাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা ঠিক করার পরই নিত্য পণ্যের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে। মানি এক্সচেঞ্জ এবং এর সঙ্গে যুক্ত প্রতিনিধিরা খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। খোলাবাজারের পাশাপাশি ব্যাংকে আমদানি-রপ্তানি, রেমিট্যান্স, আন্তঃব্যাংকসহ সব পর্যায়ে ডলারের দর বেড়েছে। এরপরও অনেকে ডলার পাননি। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো হয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। সূত্রমতে, হঠাৎ ডলারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে দুই ধরনের মতামত তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দলীয়রা এর বিরুপ প্রভাব নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, ডলারের দাম বাড়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর কোনো চাপ পড়বে না। কারণ কৃষি খাতে দেশ অনেক ভালো করছে। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছি।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অর্থনীতি চাপে আছে। এখন হঠাৎ করে ডলারের দাম খুব বেশি হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে আমদানিতে। ডলারের বেশি দাম বৃদ্ধির এমন সিদ্ধান্তে চাপে পড়বেন ভোক্তারা। মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে, মানুষ কষ্ট পাবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে বাড়বে আমদানি খরচ। আমদানিনির্ভর পণ্য কিনতে হবে বেশি দামে।

স্বাধীনভাবে কাজ করা অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের মূল্য ও সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক অভিঘাত থাকবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনা জোরদার করা জরুরি। সাথে সাথে সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নয়নে বেশি নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে সব দিক বিবেচনায় নেয়া। তা না হলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যয় বেড়ে তাদের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডলারের সঙ্গে অন্য সব বৈদেশিক মুদ্রার দরও বেড়েছে। হজ্ব মওসুমে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে সৌদি রিয়ালের। এক দিনে প্রতি সৌদি রিয়ালে ১ টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে খোলাবাজারে ৩২ টাকা ২০ থেকে ৫০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। আগের দিন যা ছিল ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকভেদে ডলারের দর ভিন্ন ছিল। তারা এতদিন আমদানিকারকদের কাছ থেকে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকায় নিতেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণার পর সব ব্যাংক মোটামুটিভাবে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করেছে। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়ানোকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন না। তারা বলছেন, ডলারের বাজার আটকে রাখায় যেমন ইতিবাচক দিক নেই, একইভাবে একবারে বেশি দাম বাড়ানোতেও যুক্তি নেই। ধীরে ধীরে দাম বাড়ালে বাজারে অস্থিরতা হতো না। সূত্র মতে, গ্রাহকের হাতে থাকা ডলার বাজারে ফিরিয়ে আনতে গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে তিন দফায় মার্কিন মুদ্রাটির বিনিময় হার উল্টো ১ টাকা কমানো হয়েছিল। এর গত ২৩ নভেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা ও ২৯ নভেম্বর প্রতি ডলারে ২৫ পয়সা কমানো হয়। আর ডিসেম্বরে কমানো হয় আরও ২৫ পয়সা। এ নিয়ে বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর ব্যাংকখাতে ছিল সর্বোচ্চ ১১০ টাকা। যদিও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন ব্যাংক থেকে আমদানি পর্যায়ে ডলার কিনতে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছিল তাদের। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি মার্কিন এ মুদ্রাটির দর ছিল ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা। এর একবছর পর ২০২১ সালের ১ জানুয়ারিতে দাম ১০ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এর পরই মুদ্রাটির বিপরীতে টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারিতে মুদ্রাটির দর বাড়তে বাড়তে ১০৫ টাকায় ওঠে। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে মুদ্রাটির দাম ওঠে ১১০ টাকায়। সবশেষ দাম একলাফে ৭ টাকা বাড়ানো হলো।

এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডলারের দাম বাড়াই ছিল। এতদিন ধরে রাখা ঠিক হয়নি। কারণ আমদানিকারক কখনই নির্ধারিত দামে ডলার পায়নি। তাহলে তো ঊর্ধ্বমুখীই ছিল বাজার। এখন একবারে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে রেট আরও বাড়বে। এতে বাজারও অস্থির হবে। কারণ অনেকেই দাম বেশি পাওয়ার আশায় ডলার ধরে রাখতে চাইবে। আমার আশঙ্কা ছিল বাজারব্যবস্থা নিয়ে (অস্থিরতা)। ডলারের রেট কোথায় গিয়ে স্থির হবে এটা বলার সুযোগ নেই।

এ নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ডলারের রেট ১১৭ টাকা নির্ধারণ ক্রলিং পেগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা গেলে ভালো। তবে এক ধাপে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়ানো ঠিক হয়নি। ভারসাম্য করা যেত। ধীরে ধীরে বাড়ানো হলে প্রভাব পড়তো না বাজারে। এক লাফে বেশি বাড়ানোর ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডলারের দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই প্রয়োজন ছিল। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে, যা আমাদের কমানো দরকার। একই সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর কোনো চাপ পড়বে না। কারণ কৃষিখাতে দেশ অনেক ভালো করছে। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পন্ন হতে পেরেছি।

ডলারের দাম একলাফে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি আমদানির খরচ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে বিদ্যুৎ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, এ চাপ মোকাবিলায় সরকারকে ভিন্ন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে বিভিন্ন শিল্প খাতের মধ্যে কাঁচামাল আমদানিনির্ভর বড় শিল্প রড ও সিমেন্ট খাত। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশের শীর্ষস্থানীয় রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, এত দিন আমরা কাঁচামাল আমদানিতে ১১৭-১১৮ টাকার কমে ডলার কিনতে পারছিলাম না। নতুন সিদ্ধান্তে যদি ডলারের কার্যকর দাম এটিই থাকে, তাহলে আমাদের আমদানি খরচ খুব বেশি বাড়বে না। তবে এ সিদ্ধান্তে যদি ব্যবসার অন্যান্য খরচ বাড়ে তাহলে হয়তো কিছুটা চাপ তৈরি হবে। উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের দামে বড় বৃদ্ধি দেশিবিদেশি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করবে। এ ছাড়া মুনাফা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, বাংলাদেশ থেকে মুনাফা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে এখন কম অর্থ পাবেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। ডলার সংকটের কারণে বিমান পরিবহন সংস্থার অর্থ এবং বিদেশি বহুজাতিক একাধিক কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ ও মুনাফা লম্বা সময় ধরে আটকে আছে। এসব অর্থ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বেশি দামে ডলার কিনতে হবে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আয় কমবে।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অর্থনীতির ওপর কমবেশি নেতিবাচক প্রভাব রাখবে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলো বিলম্বিত সিদ্ধান্ত। আরও আগে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা ‘কম বেদনাদায়ক’ হতো। তিনি বলেন, সুদের হার বাজারভিত্তিক করার কারণে অর্থ ধার করার খরচ বাড়বে। এর ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রলিং পেগ পদ্ধতি সম্পর্কে অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, তাতে করে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত থাকবে। হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা ঠিক রাখার জন্য ডলারের দাম শুধু বাড়াতেই থাকবে। ফলে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না, তা যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ডলারের দাম বাড়াতে আমদানি খরচ বাড়বে। তাতে করে ব্যবসার উৎপাদন খরচ বাড়বে। ঋণের সুদহারের মতো ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। না হলে ডলারের ফ্লো বাড়বে না। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে।

ভোগ্যপণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার মৌলভীবাজারের একজন ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান বলেন, তারা যেহেতু বেশির ভাগ নিত্যপণ্যই আমদানি করেন সেহেতু আমদানি পণ্যে নিঃসন্দেহে বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর। তারা বেশি টাকায় পণ্য কিনলে বেশি দামে বিক্রি করবে এটাই স্বাভাবিক। সেই সূত্র ধরেই তেলের দাম, শাকসবজি, ভোজ্য তেল ও খাদ্যশস্যসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের পরিবহন খরচ বাড়বে। ফলে সব ধরনের পণ্যের দামও যায় বেড়ে। যা সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে।

ডলারের দাম বেড়ে গেলে টাকার দরপতন হওয়ায় বিদেশি শিক্ষা ও ভ্রমণ হয়ে ওঠে আরও ব্যয়বহুল। টিউশন ফি ও ফ্লাইটের টিকিট ডলারে পরিশোধ করতে হয় বলে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয়। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ডলারের মূল্য সাত টাকা বাড়ায় বাজারে সর্বনাশ হয়ে যাবে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশের মানুষ সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখবে। তিনি বলেন, এখন যে পণ্যটি আমদানি করতে দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা, শুধু ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাড়তি ৭ টাকা ৭০ পয়সা গুনতে হবে। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচও রয়েছে।

https://dailysangram.info/post/555878