২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫:৪৭

বেড়েছে মুরগির দাম, পেঁয়াজও ঊর্ধ্বমুখী

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারভেদে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। বাজারভেদে উভয় ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বাড়তি দেখা গেছে। বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, দেশি আদা ও আলুর দামও। এ ছাড়া বেগুন, শসা, কাঁচা মরিচসহ কিছু সবজির দাম এ সময়ে বেড়েছে।

পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তীব্র তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে সবজি ও মুরগির বাজারে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাজীপাড়া, আগারগাঁও তালতলা, তেজকুনীপাড়া ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
হঠাৎ পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বেড়ে গেছে। গরমে মুরগি কিনে বেশি সময় দোকানে রাখা যাচ্ছে না।

তালতলা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. আলী হোসেন
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৮০-২০০ টাকা। গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। অর্থাৎ কেজিতে অন্তত ২০ টাকা দাম বেড়েছে। যদিও সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের গতকালের বাজারদরের হিসাবে ব্রয়লার মুরগির দাম কমার কথা জানিয়েছে। টিসিবির হিসাবে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ১৮৫-২০০ টাকা।

অন্যদিকে সাত দিন আগে খুচরা বাজারে সোনালি মুরগির কেজি ছিল ৩৪০-৩৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৩৭০-৩৯০ টাকা। অর্থাৎ সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। তবে রাজধানীর কোনো কোনো বাজারে ৪০০ টাকার ওপরেও সোনালি মুরগি বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। তালতলা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. আলী হোসেন বলেন, হঠাৎ পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বেড়ে গেছে। গরমে মুরগি কিনে বেশি সময় দোকানে রাখা যাচ্ছে না।

বাজারে মুরগির সরবরাহ ঠিক আছে। এ সময় দাম বাড়ার কথা নয়। বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক খামারিরা বেশি দামে বাজারে মুরগি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন এই খামারি।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতিরিক্ত তাপ সহ্য করতে না পেরে প্রান্তিক খামারিদের কয়েক লাখ মুরগি মারা গেছে। অসহনীয় গরমের পাশাপাশি বিদ্যুতের লোডশেডিংও মুরগি মারা যাওয়ার কারণ বলে জানান প্রান্তিক খামারিরা।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে মুরগির সরবরাহ ঠিক আছে। এ সময় দাম বাড়ার কথা নয়। বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক খামারিরা বেশি দামে বাজারে মুরগি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন এই খামারি।

সুমন হাওলাদার জানান, বাড়তি গরমের কারণে গত দুই সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক খামারিদের কয়েক লাখ মুরগি মারা যায়। এতে অনেক খামারি বাজারে মুরগি বিক্রি করে দেন। তাতে সরবরাহ বাড়ায় মুরগির দাম কমে যায়। তবে দু-তিন দিন ধরে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক খামারিরা বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি শুরু করেছেন। মুরগির পাশাপাশি তাঁরা ডিমের দামও বাড়িয়েছেন।
গতকাল বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা। বিক্রেতারা জানান, ১০০ ডিমে পাইকারিতে ৫ টাকা করে দাম বেড়েছে। তবে খুচরা বাজারে এখনো দাম বাড়ানো হয়নি।

বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আলুর দাম
মুরগির পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর দামও বেড়েছে। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজই বেশি বিক্রি হয়। টিসিবির বাজার দর অনুযায়ী, ঈদের সপ্তাহখানেক আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৫-৫৫ টাকা কেজি। সেই দাম বেড়ে গতকাল বাজারভেদে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে কেজিতে পেঁয়াজের দাম ৫-১০ টাকা দাম বেড়েছে।

রান্নাঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় আরেক মসলা পণ্য রসুনের দাম বেড়েছে। বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা উভয় প্রকার রসুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল বাজারভেদে দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২৩০-২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। দেশি আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া আলুর দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়েছে। গতকাল বিভিন্ন খুচরা বাজারে ৫০-৫৫ টাকা কেজি আলু বিক্রি হতে দেখা গেছে।

https://www.prothomalo.com/business/490h7umzbf