২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১০:৪১

পানি আর বিদ্যুতের দুর্ভোগ

দাবদাহের মধ্যে ঢাকায় পানির সংকট

সারা দেশের মতো রাজধানীতেও চলছে তীব্র দাবদাহ। তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা ছাড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। ফলে এ সময়ে সুপেয় পানির পাশাপাশি গোসল, বারবার হাত-মুখ ধোয়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের জন্য পানি অপরিহার্য।

ভুক্তভোগীরা জানান, তীব্র গরমে পানি না পেয়ে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন তারা। বিকল্প পানির গাড়ি চেয়েও সহজে পানি পাচ্ছেন না তারা। যদিও ঢাকা ওয়াসার দাবি-পানি সংকটের কথা জানামাত্রই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন তারা। পাশাপাশি পথচারীদের সুবিধার জন্য মহানগরীর জনসমাগমস্থলে বিনামূল্যে খাবার পানির ব্যবস্থা করেছেন তারা।

নগরবাসীর অভিযোগ, মোহাম্মদপুর, ভাষানটেক ও আগারগাঁও এলাকায় তীব্র পানি সংকট চলছে। এলাকাবাসী বলছে, বিশ দিনের বেশি সময় ধরে পানি সংকট থাকলেও ঢাকা ওয়াসা এর সমাধান করছে না। পাশাপাশি গুলশান, নন্দীপাড়া, ইব্রাহিমপুর, মনিপুর, সোলমাইদ, মাটিকাটা, জুরাইন এবং আগারগাঁওয়ের ৬ তলা গার্মেন্ট এলাকার বিভিন্ন গলিতে পানি সংকট চলছে।

এছাড়া ঢাকা ওয়াসার অঞ্চল-২ এর নবাবগঞ্জ, ঢুরি আঙুলি লেন, জাফরাবাদ ও কাঁটাসুর, অঞ্চল-৪ এর বড়বাগ, মনিপুর, আগারগাঁও ও মিরপুর ১২, জোন-৫ এর মালিবাগ বাজার রোডের গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী পানি পাচ্ছেন না। অঞ্চল-৬ এর বনশ্রীর এফ ব্লক, অঞ্চল-৭ এর রসুলপুর, পাগলা, শাহী মহল্লা, নুরবাগ, আদর্শনগর, নামা শ্যামপুর, নিশ্চিন্তপুর, দেলপাড়া, শান্তিধারা ও দৌলতপুর এবং অঞ্চল-১০ এর ইব্রাহিমপুর, পূর্ব শেওড়াপাড়া, মিরপুর ১১ নম্বরের মদিনানগর, বাইগারটেক, মাটিকাটা এবং উত্তরা ১৫, ১৬, ১৭ নম্বর সেক্টরে পানির সংকটে নাকাল বাসিন্দারা।

ঢাকা ওয়াসা জানায়, রাজধানীর প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের পানির চাহিদা পূরণ করে আসছে তারা। এজন্য ঢাকা ওয়াসা ৯৬০টি গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন করছে। পাশাপাশি চাঁদনীঘাট, সায়েদাবাদ, পদ্মা, সাভারের ভাকুর্তা-তেতুলঝোড়া ও মেঘনা পানি শোধনাগার থেকে পানি সরবরাহ করছে।

তারা আরও জানায়, ঢাকা ওয়াসা দৈনিক ২২০ থেকে ২৩০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে। অথচ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ কোটি লিটার পর্যন্ত। গ্রীষ্মকালে পানির চাহিদা ৩০০ কোটি লিটারের বেশি চলে যায়। এজন্য ঢাকা ওয়াসার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।

ঢাকা ওয়াসার এক প্রকৌশলী জানান, ওয়াসা পানির চাহিদা হিসাব করে একজন মানুষ দিনে একবার গোসলে কতটুকু পানি ব্যবহার করেন। পাশাপাশি খাবার, রান্না, কাপড় ধোয়া এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে কতটুকু ব্যবহার করেন সে হিসাব ধরে। বাস্তবতা হলো-গ্রীষ্মে পানির ব্যবহার অনেক বেড়ে যায়। মানুষ বেশি পরিমাণে পানি পান করে এবং ২ থেকে তিনবার গোসল করে। ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম সহিদ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, তীব্র গরম চলছে। এই অবস্থায় পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। এরপরও কোনো কোনো এলাকায় পানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। খবর পাওয়ামাত্রই তা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কর্মজীবী ও দিনমজুররা বাইরে বের হয়ে যাতে পানির কষ্টে না পড়েন, সেজন্য বিনামূল্যে নগরীর ব্যস্ততম পয়েন্টে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো এলাকায় পানির সংকট হলে সুনির্দিষ্টভাবে ঢাকা ওয়াসাকে জানালে তাৎক্ষণিক তা সমাধানে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এজন্য গ্রাহকরা ঢাকা ওয়াসার হটলাইন নম্বর এবং অন্যান্য মাধ্যমে জানাতে পারেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/798607