২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১২:১৯

ফের ২০ বিলিয়নের ঘরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ডলার সংকটে সম্প্রতি সার্বিক রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছিল। তবে ঈদের পর রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার পাশাপাশি আমদানির চাপে আবারো কমতে শুরু করেছে অর্থনীতির অন্যতম এই সূচকটি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত এখন কমে ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। রিজার্ভ থেকে ক্রমাগত ডলার বিক্রি ও ব্যাংকগুলো তাদের জমা রাখা ডলার ফেরত নেয়ায় রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে রিজার্ভ কমার তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, ১৭ই এপ্রিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯.৮৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮ কোটি ডলারে। একইদিনে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার। এর আগে ৮ই এপ্রিল বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০.১০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০ কোটি ডলার। ওইদিন মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৩৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত ১০ দিনে বিপিএম৬ মান অনুযায়ী রিজার্ভ কমেছে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার।

গত বছরের এই সময়ে মোট রিজার্ভের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল (৩১.১৮ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১১৮ কোটি ডলার)।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৯.৭৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ অনুযায়ী ছিল ২৩.৩৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা আইএমএফের কাছে প্রকাশ করতে হয়। এ ছাড়া, আইএমএফের ঋণচুক্তি অনুসারে প্রতি তিন মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ সংরক্ষণের হিসাব দিতে হয়। তবে, এ তথ্য প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে আছে। প্রতি মাসে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। প্রকৃত রিজার্ভের হিসাব কীভাবে নির্ণয় করতে হবে, ঋণ দেয়ার সময় বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছিল আইএমএফ। সংস্থাটি ঋণের শর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রকৃত রিজার্ভ কী পরিমাণে থাকতে হবে, তা ঠিক করে দেয়। সে অনুযায়ী প্রতি তিন মাস পরপর আইএমএফের শর্ত মেনে বাংলাদেশকে রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার শর্ত অনুযায়ী গত মার্চ মাস শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা ১ হাজার ৯২৬ কোটি ডলার। কিন্তু ওই সময় প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ১৫০০ কোটি ডলারের কম।

https://mzamin.com/news.php?news=106302