১ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১২:৫৩

শিক্ষাক্রমে একের পর এক পরিবর্তন

দিশেহারা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার কোনো বিষয় ঢালাওভাবে বাস্তবায়ন না করে আগে পাইলটিং করে দেখা জরুরি-রাশেদা কে চৌধুরী

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একের পর এক শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হচ্ছে। পালটে যায় শ্রেণিকক্ষের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো সময় শিক্ষকরাও সুস্পষ্টভাবে বুঝে উঠতে পারেন না-কীভাবে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের অভ্যস্ত করে তুলবেন। সেই সঙ্গে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অভিভাবকরাও।

এ পর্যন্ত ৭ বার শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। এ সময়ে মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে গত দেড় দশকে। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেন শিক্ষার্থীদের এক ধরনের ‘গিনিপিগ’ বানানো হচ্ছে। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো পদ্ধতিই পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন হয়নি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যথাযথ পাইলটিং ও গবেষণা ছাড়াই আবার নতুন করে মূল্যায়ন পদ্ধতির কথা ভাবা হচ্ছে। যা নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে-এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবার।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, স্বাধীনতার ৫ দশকেরও অধিক সময় পার হলেও দেশের শিক্ষাক্রম কী হবে-তা এখনো দেশের বাস্তবতার নিরিখে সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই ঘন ঘন শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপর। একটি নতুন শিক্ষাক্রমে অভ্যস্ত হতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেক সময় চলে যায়। এভাবে একের পর এক নতুন শিক্ষাক্রমের সঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।

অভিভাবকদের অভিযোগ-২০২৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জন্য প্রণীত নতুন শিক্ষাক্রমে শ্রেণি শিক্ষকের হাতে মূল্যায়ন রাখায় তাদের (শিক্ষক) কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। বাধ্য হয়েই শিক্ষকদের কাছে কোচিংয়ে দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শুধু তাই নয়, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কয়েক দফা পরিবর্তন এবং এখন পর্যন্ত সেটি চূড়ান্ত না হওয়ায় অস্বস্তিতে আছে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া বিষয়ভিত্তিক বই কমিয়ে আনায় বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সংশ্লিষ্টদের আরও অভিযোগ-নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি, যা পাঠদানে ঘাটতির শঙ্কা থাকছে। পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়নে আনুষঙ্গিক খাত ব্যয়বহুল করা হয়েছে। এতে অভিভাবকদের ওপর সৃষ্টি হয়েছে বাড়তি আর্থিক চাপ।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় যে শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি তার বড় সমস্যা হলো ধারাক্রম অনুসরণ না করা। ১৯৭৪ সালের প্রথম কুদরাত-ই-খুদার শিক্ষানীতি অনুসরণ করলে এত বড় ক্ষতি হতো না। বিশেষ করে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে স্টেকহোল্ডার (অংশীজন)-শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। তাদের দূরে ঠেলে দিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষায় আমাদের বাজেট অনেক কম। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি। এছাড়া শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবও আছে। এসব কারণে আমাদের শিক্ষাক্রম যথাযথ বাস্তবায়ন করা যায়নি বলে আজ শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, শিক্ষাক্রমকে কেন্দ্র করে নোটবই, গাইড বই ও কোচিং বাণিজ্যে একটা সিন্ডিকেট হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করছে। শিক্ষকদের প্রভাবিত করে নোটবই কিনতে বাধ্য করেছে শিক্ষার্থীদের। এরাই শিক্ষাব্যবস্থাকে গ্রাস করে ফেলেছে।

স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী কুদরাত-ই-খুদাকে প্রধান করে দেশে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিল। কমিশন প্রতিবেদন জমা দিলেও ওই শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর নানা সরকারের সময় সব মিলিয়ে কমপক্ষে আটটি শিক্ষা কমিশন ও কমিটি হলেও কোনোটিই আর আলোর মুখ দেখেনি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমলে মজিদ উদ্দিন শিক্ষা কমিশন, ১৯৯৭ সালে শামসুল হক শিক্ষা কমিশন, ২০০২ সালে এমএ বারী কমিশন ও ২০০৩ সালে মনিরুজ্জামান মিঞা কমিশন গঠন করা হয়।

সর্বশেষ ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর (বর্তমানে প্রয়াত) নেতৃত্বে সর্বশেষ শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি হয়। ২০১০ সালের মে মাসে কমিটির সুপারিশ করা শিক্ষানীতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। এ শিক্ষানীতির বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। যেমন-প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত আজও বাস্তবায়ন হয়নি, স্থায়ী শিক্ষা কমিশনও হয়নি।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে প্রথম শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে প্রথম শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জন করা হয়। এছাড়া ১৯৯২ সালে প্রাথমিক স্তরে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে রূপান্তর করা হয় আর ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক স্তরে উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হয়। এর মধ্যে ২০০২ সালে প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের কিছু পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন করা হয়। এরপর ২০১২ সালে উদ্দেশ্যভিত্তিক (সৃজনশীল) শিক্ষাক্রমকে বিশ্বের সবচেয়ে যুগোপযোগী লেখাপড়া বলে এ দেশে চালু করা হয়েছিল।
এক দশকের বেশি সময় পর সে পদ্ধতি আবার মূল্যহীন হয়ে গেছে। ২০২২ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সর্বশেষ তদারকি প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ৪৫ শতাংশ শিক্ষক ঠিকভাবে সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন করতে পারেন না। পরে ২০২২ সালে এই শিক্ষাক্রমের আবারও ব্যবচ্ছেদ করা হয় এবং বর্তমানে ২০২৩ সালে (শিখনকালীন) নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়।

জানা যায়, ফিনল্যান্ড-সিঙ্গাপুরের আদলে নতুন শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজানো হয়েছে। এতে পাঠ্যবই, পাঠদান, তদারকি আর মূল্যায়নসহ সবকিছুতেই আমূল পরিবর্তন এসেছে। গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন না রেখে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বই পড়তে হচ্ছে।

এ শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক শিখনকালীন মূল্যায়ন। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে অর্থাৎ পরীক্ষার ভিত্তিতে। এ মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি হয়। এ নিয়ে অভিভাবকদের একটি অংশ মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়েছেন। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি আমলে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পুনরায় মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া তৈরি করেছে এনসিটিবি।

খসড়া অনুযায়ী, প্রতিটি চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার। ১ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলবে। ৪ ঘণ্টা থাকবে ব্যবহারিক। মিডটার্ম ও বার্ষিক পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা হবে নিজ স্কুলে। তিন বিষয়ে বেশি খারাপ করলে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবে। এ খসড়ার ভিত্তিতে মূল্যায়ন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

মূল্যায়নের খসড়া অনুযায়ী, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাপনার কাজটি এখনকার মতোই শিক্ষা বোর্ডগুলো করবে। এনসিটিবি খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী মূল্যায়ন বা পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রান্সক্রিপ্ট ও রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। এই রিপোর্ট কার্ডই সনদ হিসাবে বিবেচিত হবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বারবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ঠিক নয়। এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। শিক্ষার কোনো বিষয় ঢালাওভাবে বাস্তবায়ন না করে আগে পাইলটিং করে দেখা দরকার কোনটা ইতিবাচক ভূমিকার রাখে। বিগত সময়ে আরও কয়েকটি শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমরা হোঁচট খেয়েছি। তাই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে যে কোনো পরিবর্তন ধাপে ধাপে করা উচিত। এক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু যুগান্তরকে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে একাধিকবার শিক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কোনোটিই কার্যকর সুফল মেলেনি। এ অবস্থার উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। তিনি আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবমুখী। এটার উপকরণ অনেক ব্যয়বহুল। যদি সরকার এসব উপকরণ সরবরাহ না করে, শতভাগ এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এদিকে শিক্ষার্থীদের একটানা মূল্যায়ন পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবা উচিত।

নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তনের ক্ষেত্রে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান। তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষা বা মূল্যায়ন পদ্ধতি কোনো কিছু দীর্ঘস্থায়ী নয়। বিশ্ব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাপদ্ধতির ধরনও বদলে যায়। তাই আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে নতুন কারিকুলামের পরীক্ষার ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে মুখস্থ করে কিছু লিখতে হবে না। অথবা আগের ধারাবাহিক ৩ ঘণ্টার পরীক্ষার মতোও কিছু নয়। এতে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের চাপ থাকবে না।

শিক্ষা ব্যবস্থায় যত পদ্ধতি
এমসিকিউ-দেশে মাধ্যমিকে ১৯৯২ সালে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (এমসিকিউ) ব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু দেশে এই পদ্ধতি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। তখন ‘প্রশ্নব্যাংক’ নামে এমন এক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যা ২০০০ সালে বাতিল হয়।

জিপিএ ও শিখনকালীন মূল্যায়ন-২০০১ সালে পাবলিক পরীক্ষায় নম্বর বা শ্রেণিভিত্তিক সনাতন পদ্ধতির ফলাফল ব্যবস্থা বাদ দিয়ে জিপিএ (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ শুরু হয়। এতে প্রথমদিকে ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক ছিল জিপিএ-৫। ২০২২ সালে তা বাতিল হলেও ২০২৫ সাল পর্যন্ত কয়েকটি পাবলিক পরীক্ষায় এ জিপিএ পদ্ধতি বিদ্যামান থাকবে। এদিকে নতুন শিক্ষাক্রম ৭টি শ্রেণিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। ধাপে ধাপে সব শ্রেণিতে এ মূল্যায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।
সৃজনশীল-২০১২ সালে সৃজনশীল শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আবার ২০২২ সালে এ পদ্ধতি বাতিল হয়ে যায়। এমসিকিউ ও সিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।

এছাড়া ১৯৭২ থেকে ২০০০ সাল এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করে ডিভিশন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরে ২০০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এমসিকিউ, প্রশ্নোত্তর ও সিকিউ (সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি) নিয়মে পরীক্ষা গ্রহণ করে জিপিএ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সাল থেকে শিখনকালীন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করে রিপোর্ট কার্ডে ফলাফল পদ্ধতি চালু করা হয়।

পিইসি ও জেএসসি-২০০৯ সালে অনেকটা হঠাৎ করেই দেশে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা নামে একটি পাবলিক পরীক্ষা চালু করে সরকার। ১১ বছর পর ২০২০ সাল থেকে পিইসি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ২০১০ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) চালু হয়। ১৩ বছর পর ২০২৩ সাল থেকে জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/791059