১৬ মার্চ ২০২৪, শনিবার, ১২:৫৬

লাগাম টানা যাচ্ছে না মাছ-গোশতের দামে

আলুর কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা

রাজধানীর বাজারে এক দিনের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার সকালে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে আলু। আর গতকাল শুক্রবার প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গোল আলুর পাশাপাশি বেড়েছে লাল আলুর দামও। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৪০ টাকা। এ দিকে বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকার পরেও কমছে না সবজির দাম। আলু ছাড়া ৬০ টাকার নিচে মিলছে না তেমন কোনো সবজি।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ পিস, একই দামে বাঁধাকপি। শিম ৬০ থেকে ৭০, টমেটো ৬০ থেকে ৭০, করল্লা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা মান ও আকারভেদে লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০, মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শাকের মধ্যে সরিষা শাক আঁটি ১৫ টাকা, ডাঁটা শাক ১৫ টাকা, পালং ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০, লাল শাক ১৫ টাকা, বথুয়া শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাথের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে কিছুটা কমছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। প্রতি কেজি দেশ পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা-রসুন। নতুন রসুন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অপর দিকে অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ- গোশতের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। আবারো কোথাও তা ২৪০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। আবারও ৭৫০ টাকা ছাড়িয়েছে গরুর গোশতের দাম।
গোশতের মতো মাছের বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সাইজ ভেদে তেলাপিয়া ২২০-২৩০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গেল সপ্তাহেও কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে শুরু করে সাইজ ভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ। মাছ যত বড় সেটি তত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার রোজায় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার শুল্ক কমানোসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে সেই সুবিধাগুলো ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁচ্ছাছে না। তবে সরকার পাইকারি থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকিতে জোর দিলে সামনে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতির কারণে এখন দাম বাড়তি। প্রতি বছরই বড় এই ঘাটতি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। যখনই এসব পণ্যের আমদানি ব্যাহত হয়, তখনই দেশের বাজারে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়ে দাম বেড়ে যায়। এবারো তাই হচ্ছে। বাজারে দাম কমাতে হলে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে এবং সরবরাহ বাড়াতে হলে আমদানির বিকল্প নেই। সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে; কিন্তু এখনো আমদানি শুরু হয়নি। যার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম তেমন কমছে না।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/821724