১১ মার্চ ২০২৪, সোমবার, ১২:৫৬

ইফতারের পানীয়তেও দামের খড়্‌গ

রমজানের ইফতারে শুরুতেই খেজুর আর এক গ্লাস শরবতে রোজা ভাঙেন রোজাদাররা। ইফতারের এই শরবত তৈরি হয় নানা উপকরণে। এবারের নিত্যপণ্যের বাড়তি বাজারে ইফতারের সব পানীয়তেও পড়েছে দামের খড়গ। বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি শরবত বা বাজার থেকে উপকরণ কিনে তৈরি করা শরবত খেতেও গুনতে হবে বাড়তি দাম। ইফতারের সময় অনেকে ইসুবগুলের ভুসি মিশিয়ে শরবত তৈরি করেন। এই ভুসির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এখন এক কেজি ভুসির দাম উঠেছে ২০০০ টাকায়। একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির শরবতের ৩০০ মিলি লিটারের বোতল গত বছর বিক্রি হয় ২১০ টাকায়। এবার এটি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শরবত তৈরি পাউডারের দামও বেড়েছে গত বছরের চেয়ে।

ট্যাং ব্র্যান্ডের শরবত তৈরির পাউডার ৭৫০ গ্রামের প্যাকেটে দাম বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আগে ৩৫০ টাকা বিক্রি হতো ৫০০ গ্রামের কৌটা। এটিতে দাম না বাড়লেও পাউডারের পরিমাণ ১৫০ গ্রাম কমিয়ে দেয়া হয়েছে। খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের প্রথম দিকেও ইসুবগুলের ভুসি ১৪শ’ টাকা কেজিতে কেনা গেলেও এখন তা দুই হাজার টাকা কেজি পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। শেওড়াপাড়াস্থ শাহ আলম স্টোরের স্বত্বাধিকারী শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন, অন্যান্য বছরের থেকে মানুষ এ বছরে কিনছে কম।

শাহ আলম আরও বলেন, এক বছরের ব্যবধানে এসব পানীয় সামগ্রীর দাম এত বাড়ানো উচিত হয়নি। আমরা তো এগুলো সবসময় বেচি না। রমজান উপলক্ষে এগুলো আমরা দোকানে তুলি। গত রমজানে নিয়েছিলাম, আবার এখন নিতে গিয়ে দেখছি- সবগুলো পণ্যের দামই বাড়তি। এ সময় বাজারে আসা ক্রেতা মাসুমবিল্লাহ বলেন, গত বছরের তুলনায় এই বছরে খেজুরসহ শরবতে ব্যবহৃত পানীয় ও ইসুবগুলের দাম অনেক বেশি। শুধু চিনির শরবত দিয়েই হয়তো ইফতার করতে হবে। শরবত তৈরির অন্যতম উপকরণ চিনির দামও এবার বাড়তি। বাজারে এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে চিনি। গত বছরের এই সময়ে চিনির কেজি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।

এ ছাড়া শরবতে ব্যবহৃত লেবুর দামও বেড়েছে গত কয়েকদিন থেকে। গতকাল বাজারে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ক্যাব’র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, রমজান মানে ব্যবসায়ীদের জন্য মুনাফার মওসুম। তারা ভাবে- আমরা এক মাস ব্যবসা করবো, অন্য মাস বসে কাটাবো। এভাবে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে। শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত পানীয় দ্রব্যের দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রমজানের আগেই কেন পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। আরও তো অনেক সময় আছে। সারা বছর তারা কি করেছিল। এই সময়ে মুনাফা করতে হবে- এটাই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। বাজারে পণ্যের কোনো সংকট নেই। চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট পণ্য মজুত রয়েছে তাদের। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটছে তারা।

https://mzamin.com/news.php?news=101191