২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ১২:০৯

লিবিয়ায় বাংলাদেশি বন্দিদের ৭৯ শতাংশই নির্যাতনের শিকার

ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় গিয়ে ৬৩ শতাংশ বাংলাদেশি বন্দি হয়েছে। এই বন্দিদের ৭৯ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার। ৫৪ শতাংশ কখনো তিনবেলা খাবার পায়নি। আর ২২ শতাংশ দিনে মাত্র একবেলা খাবার পেয়েছে।

সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।

লিবিয়া থেকে ফেরত আসা ৫৫৭ জন বাংলাদেশির যাত্রা, গন্তব্য, অর্থ, নিপীড়ন, উদ্ধার থেকে শুরু করে প্রত্যেকের ৫০ ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী লোক সবচেয়ে বেশি ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছে।

তাদের মধ্যে ৩১ থেকে ৩৫ বছরের লোক সবচেয়ে বেশি। তাদের বেশির ভাগেরই বাড়ি মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা এলাকায়।

ব্র্যাক আরো জানায়, যাত্রাপথ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে দুবাই-মিসর হয়ে লিবিয়া গেছে সবচেয়ে বেশি মানুষ। এ ছাড়া ঢাকা থেকে ইস্তাম্বুল-দুবাই হয়ে লিবিয়া, ঢাকা থেকে কাতার হয়ে লিবিয়া, ঢাকা থেকে দুবাই-সিরিয়া হয়ে লিবিয়া এবং অল্প কিছু লোক ঢাকা থেকে সরাসরি লিবিয়ায় গেছে।

এভাবে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার জন্য অর্থ কোথায় পেয়েছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে ৫৬ শতাংশ বলেছে, তারা নিজেরাই এই টাকা জোগাড় করেছে। ২৩ শতাংশ বলেছে, তারা পরিবারের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছে।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান (মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফরম) বলেন, ‘বাংলাদেশের সব জেলার লোক কিন্তু এভাবে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করে না। মূলত সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকার লোকজন এভাবে ইউরোপে যায়। আমাদের গবেষণায় এটি উঠে এসেছে যে, দালালরা এসব এলাকার অভিভাবক ও তরুণদের ভালো চাকরি আর ইউরোপের প্রলোভন দেখাচ্ছে, যেটি বাস্তব নয়।

কাজেই সাধারণ মানুষ ও বিদেশগামীদের সবার আগে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি এলাকার স্থানীয় দালাল ও মানব পাচারচক্রকে চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সমন্বিত অভিযান চালাতে হবে।’

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2024/02/24/1366299