১১ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৩:৪৭

নতুন ভ্যাট আইন

টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে ৭ হাজার টাকা

লৌহ শিল্পের তিন সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন

নতুন আইনের অধীনে লৌহ শিল্পে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এতে আবাসন খাত ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নির্মাণ ব্যয় বাড়বে। চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। যার বিরূপ প্রভাব পড়বে এ খাতে। তাই শিল্পের স্বার্থে ভ্যাট হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা উচিত।


জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার লৌহ শিল্পের ৩টি সংগঠনের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পর এ খাতে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুর রহমান বকুল ও রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুবুর রশিদ জুয়েল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শহীদুল্লাহ বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে স্টিলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতি টন রডে ৯০০ টাকা ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এ করারোপের ফলে লৌহ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও আবাসন নির্মাণ ব্যয় বাড়বে, যা প্রধানমন্ত্রী ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। শিল্পের স্বার্থে ক্রয় পর্যায়ে স্ক্র্যাপের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার ও রড বিক্রি পর্যায়ে ভ্যাট ৩ থেকে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা উচিত। সংগঠনটির সাবেক চেয়ারম্যান মাসাদুল আলম মাসুদ বলেন, সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটি গ্রুপ ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে বেশি উৎসাহী। ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে লৌহ খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। সরকারকে বোঝানো হচ্ছে, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব আয় বাড়বে। কিন্তু এ উন্নয়ন ব্যয় বাড়লে তা আবার খরচও হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের সহায়তার কারণে গত ১০ বছরে লৌহ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ ২০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। ভ্যাটে ছাড় দেয়ার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। নতুন আইনের অধীনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করলে রডের দাম বেড়ে যাবে। ক্রেতারা নিরুৎসাহিত হবেন। যার প্রভাব পড়বে শিল্পের ওপর। তিনি আরও বলেন, এ বিষয় নিয়ে এক বছর ধরে আলোচনা করে আসছি। কোনো ফল পাইনি। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব হুমায়ন কবির ভূঁইয়া বলেন, ভোক্তারা ভ্যাট দিতে চায়। তবে সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্যের দাম বাড়বে। এতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। হাওরে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। তার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট জনগণের গোদের ওপর বিষফোড়া হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা উচিত নয়। পরের সরকার ক্ষমতায় এসে শুরু থেকেই আইন বাস্তবায়ন করতে পারবে।

রিহ্যাবের সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. তামিম বলেন, গত কয়েক বছর আবাসন খাতে স্থবিরতা চলছে। ৫০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে। এ অবস্থায় রডের দাম টনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা বাড়লে ফ্ল্যাটের দাম আরও বাড়বে, যা বহন করতে ক্রেতারা প্রস্তুত না। আর আবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর সঙ্গে জড়িত ২৫টি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই নির্বাচনের আগে এ ধরনের কোনো নতুন পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে না।

http://www.jugantor.com/industry-trade/2017/05/11/123999/