২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ৭:১৮

পতাকা বৈঠক হলেও বিএসএফ ২ বাংলাদেশীর লাশ ফেরত দেয়নি

 

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার বাড়াদি সীমান্তে ভারত অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী দুই নাগরিক সাজেদুর রহমান ওরফে সাইদুল ও খাজা মঈনুদ্দিনের লাশ গত ১২ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

ঘটনার ১২ দিন পর গত বুধবার বিকেলে দর্শনা বাড়াদি সীমান্তে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও লাশ ফেরত পেলেন না নিহতদের পরিবার। বৈঠকে আইনি জটিলতার কারণে নিহতের লাশ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান বিজিবি। নিহত সাইদুল চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের বেকারাস্তা পাড়ার হায়দার আলীর ছেলে ও খাজা মঈনুদ্দিন একই এলাকার শরিয়ত উল্লার ছেলে।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের বেকারাস্তা পাড়ার সাজেদুর রহমান ওরফে সাইদুল ও একই পাড়ার খাজা মঈনুদ্দিনসহ ৫-৬ জন সঙ্ঘবদ্ধ গরু চোরাকারবারি গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর দর্শনার কামারপাড়া-বাড়াদি সীমান্তের ৮২ মেইন পিলারের কাছ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। ওই দিন দিবাগত গভীর রাতে চোরাকারবারিরা ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানাধীন ৩২ গোবিন্দপুর বিএসএফ ক্যাম্পের একটি টহল দলের মুখোমুখি হয়। এ সময় বিএসএফ দল চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন সাইদুল ও খাজা মইনুদ্দিন নামে দুই গরু

চোরাকারবারি। ঘটনার পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সকালে ভারতের গোবিন্দপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা লাশ দু’টি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর লাশ ফেরত চেয়ে বিজিবি-বিএসএফকে পত্র দিলেও বিএসএফ তাতে সাড়া না দেয়ায় লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি।

দীর্ঘ ১২ দিন পর বিএসএফ লাশ দু’টি ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে বিজিবিকে পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায়। বিএসএফের আমন্ত্রণে পতাকা বৈঠকে সাড়া দেয় বিজিবি।

এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার বিকেলে সীমান্তের ৮২/২ এস মেইন পিলার সংলগ্ন শূন্য রেখায় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইনি জটিলতার কারণে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়ন বিজিবির উপসহকারী পরিচালক মেজর হায়দার, বাড়াদি বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার, দর্শনা থানার এসআই সোহেল আহম্মেদ, স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুর রহমান এবং ভারতের পক্ষে গোবিন্দপুর বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার শ্রী বাপ্পিন মজুমদার ও কেষ্টগঞ্জ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আইনি জটিলতা (লাশ ফেরতের সঠিক কাগজপত্র বিএসএফ আনেনি) থাকায় অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক থেকে লাশ ফেরত নিয়ে গেছে বিএসএফ।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/802188