২১ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৯

বই উৎসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অষ্টম নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা

 

বই উৎসবে শামিল হতে পারছে না অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। সময়মতো বই ছাপা না হওয়ায় এবং পয়লা জানুয়ারির আগে জেলা উপজেলায় বই পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় অন্যান্য বছরের মতো বছরের প্রথম দিনে দেশব্যাপী বই উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারবে না তারা। তবে পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণ কাজে নিয়োজিত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি বলছে অন্যান্য শ্রেণীর বই যথাসময়েই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে। তবে নতুন শিক্ষাক্রমের বই বিশেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ের অষ্টম এবং নবম শ্রেণীর বই যেহেতু এবারই প্রথম নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে লেখা হয়েছে তাই এই দুই শ্রেণীর বই শিক্ষার্থীদের হাতে একটু দেরিতে পৌঁছবে।

যদিও আগে থেকেই প্রচার করা হচ্ছে যে, প্রতি বছরের মতো এবারই আগামী ১ জানুয়ারি সারা দেশেই অনুষ্ঠিত হবে বই উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এজন্য বই উৎসব আয়োজনের জোর প্রস্তুতিও চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রাথমিকের সব বই ইতোমধ্যে দেশের ৪৯৫টি উপজেলায় পৌঁছেছে। মাধ্যমিকেরও অধিকাংশ পৌঁছে গেছে। এসব বই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। তবে নতুন বছরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অপেক্ষায় থাকা অষ্টম ও নবম শ্রেণীর কিছু বই ছাপার কাজ এখনো চলছে।

এ দিকে পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণ তদারকির দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: ফরহাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এবারের বই বিতরণের প্রস্তুতি গত কয়েক বছরের তুলনায় ভালো। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। বছরের প্রথম দিনই বই পাবে শিক্ষার্থী। তবে অষ্টম ও নবমের কিছু বই হয়তো ৩০ ডিসেম্বরের আগে উপজেলাগুলোতে পাঠানো সম্ভব হবে না। সেগুলো বছরের শুরুতে পাঠানো হতে পারে।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপা হওয়ার কথা। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের মোট বই ১৮ কোটি ৬১ লাখ ১ হাজার ২০৬টি। আর প্রাথমিক স্তরের প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লাখ। এগুলোর মধ্যে প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই আছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৪২৩। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৬ লাখ ১ হাজার ২৭৪। আর প্রাক-প্রাথমিকের ৬১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৮। এ ছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণীতে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৮ কপি, সপ্তম শ্রেণীর ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার কপি, অষ্টম শ্রেণীর জন্য ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৭১ কপি এবং নবম শ্রেণীর ৫ কোটি ছয় লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩ কপি বই ছাপানোর কথা।

এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিকের সব বই এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আর নতুন শিক্ষাক্রমের অষ্টম শ্রেণীর ৬০ শতাংশ ও নবম শ্রেণীর ৩৫ শতাংশ বই পাঠানো সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম, নবম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে।

বছরের প্রথম দিন সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো প্রসঙ্গে, জানতে চাইলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: ফরহাদুল ইসলাম বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে অষ্টম ও নবম শ্রেণীর কিছু বই ছাপার কাজ এখনো চলছে, যা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। যে প্রেসগুলো ওই দুই শ্রেণীর বই ছাপাচ্ছে তাদের সক্ষমতা ব্যাপক। বছরের শুরুতে সময় মতো বই পাবেন শিক্ষার্থীরা।

আগামী ১ জানুয়ারি বই উৎসবের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকায় মাধ্যমিকের বই উৎসব হচ্ছে না। এবার এই উৎসব হবে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সোয়াগঞ্জ তোফাজ্জল আহমেদ চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ওই দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকের বই উৎসব হবে রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/800252