৩ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:১৭

ক্রয় ও বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান অস্বাভাবিক

২৫ পয়সা কমানোয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা ও বিক্রি ১১০ টাকা, আজ থেকে কার্যকর

 

ডলারের নির্ধারিত দামের সঙ্গে বাজার দরের মিল নেই। ব্যাংক ও খোলা বাজারে ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যকার ব্যবধানও অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যাচ্ছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে রেমিট্যান্সের ডলার কোনো কোনো ব্যাংক কিনছে ৬ থেকে ৮ টাকা বেশি দামে। ব্যাংক ও খোলা বাজারে নগদ ডলারের দামে ব্যবধান হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টাকা। ব্যাংকে আমদানির ডলার বিক্রির দরের সঙ্গে নগদ ডলারের ব্যবধান হচ্ছে ৪ থেকে ৭ টাকা। এভাবে সব খাতেই ডলারের দামে ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের ব্যবধান মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে।

এদিকে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)। এই দুই সংগঠনের যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ডলারের দাম নির্ধারণ হলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। বাজারে নিজস্ব গতিতে ঠিক করা দরেই ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে ডলারের নতুন দর কার্যকর হচ্ছে। আজ থেকে প্রতি ডলার ব্যাংকগুলো কিনবে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা করে। এ হিসাবে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ডলারও ওই দামে কিনতে হবে। বিক্রি করবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা করে। প্রতি ডলারের বিপরীতে আগের চেয়ে ২৫ পয়সা কমানো হয়েছে।

তবে নগদ ডলার বেচাকেনার দামে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। ব্যাংকগুলোই এর দর ঠিক করবে। ফলে ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা দরে। এছাড়া কোনো কোনো ব্যাংক ১১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে শুরু করে ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা দরেও ডলার বিক্রি করছে। ফলে ব্যাংকে ডলার বেচাকেনায় ব্যবধান দাঁড়াচ্ছে ৫ থেকে ৭ টাকা। আগে এ খাতে ব্যবধান থাকত সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা থেকে দেড় টাকা। এখন ব্যবধান বেড়েছে কয়েকগুণ।

এদিকে ওয়ান ব্যাংক ১১৬ টাকা করে নগদ ডলার কিনে বিক্রি করছে ১১৭ টাকা করে। আলা আরাফাহ ব্যাংক ১১৪ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে ১১৬ টাকায় বিক্রি করছে। এনসিসি ব্যাংক ১১৫ টাকা ২৫ পয়সায় কিনে ১১৬ টাকা ২৫ পয়সায় বিক্রি করছে। যমুনা ব্যাংক ১১৪ টাকা ৭৫ পয়সায় কিনে ১১৫ টাকা ৭৫ পয়সায় বিক্রি করছে। এনআরবি ব্যাংক ১১৫ টাকায় কিনে ১১৬ টাকায় বিক্রি করছে। সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ১১৫ টাকায় কিনে ১১৬ টাকায় বিক্রি করছে।

এদিকে বাফেদার তথ্য অনুযায়ী, নগদ ডলারের গড় ক্রয় মূল্য হচ্ছে ১১৩ টাকা ৬৩ পয়সা, বিক্রির দর হচ্ছে ১১৪ টাকা ৭২ পয়সা। নগদ ডলারের দাম যাই হোক, বেশিরভাগ ব্যাংকেই নগদ ডলার পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।

রেমিট্যান্সের ডলারের দাম রোববার থেকে ১০৯ টাকা ২৫ পয়সা হবে। এর সঙ্গে সরকারের প্রণোদনা আড়াই শতাংশ ও ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনা আড়াই শতাংশ মিলে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা। ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার এলেই এই প্রণোদনা পাওয়া পাওয়া যাবে। তবে সব ব্যাংক এখনো আড়াই শতাংশ করে প্রণোদনা দিচ্ছে না। তবে অনেক ব্যাংক প্রণোদনার চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনছে।

পাঁচ শতাংশ প্রণোদনাসহ প্রতি ডলারের দাম পড়বে ১১৫ টাকা ২৪ পয়সা। কিন্তু কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্সে ডলার সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা করে কিনছে। তারা ওইসব ডলার আমদানির জন্য সর্বোচ্চ ১২৪ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি করছে। আমদানিতে ডলার সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় বিক্রি করার কথা। এ খাতে ১৪ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতি ডলার বিক্রি হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা ৭৫ পয়সা দরে। কিন্তু ওই দামে ডলার মিলছে না। খোলা বাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২২ থেকে ১২৩ টাকা করে।

তবে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দামের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। আন্তঃব্যাংকে এখন আমদানি খাতের ডলারের দামেই বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি ডলার ১১০ টাকা করে বেচাকেনা হচ্ছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/746909