২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১০:০৫

সাড়া নেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে

সাড়া নেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এ খাতে বিনিয়োগ করার মানুষ কাক্সিক্ষত হারে এগিয়ে আসছে না। গতকাল পর্যন্ত এই স্কিমে বিনিয়োগ করেছেন ১৬ হাজারের কিছু বেশি মানুষ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম মাসে যে হারে এই খাতে বিনিয়োগ হয়েছিল, পরের দুই মাসেই এই বিনিয়োগ অনেক কমে গেছে। মূলত আস্থাহীনতার কারণে এ খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে জানা গেছে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে গ্রাহকের মোট চাঁদা জমা পড়েছে প্রায় ১৬ কোটি চার লাখ ২০ হাজার টাকা।

গত ১৭ আগস্ট এ স্কিম উদ্বোধনের পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম এক মাসে চাঁদা পরিশোধ করেছিলেন ১২ হাজার ৮৮৯ জন। পরের এক মাসে নতুন করে এক হাজার ৮৩১ জন যুক্ত হওয়ায় মোট চাঁদাদাতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৪ হাজার ৭২০। তার পরের মাসে ১৮ অক্টোবর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত পেনশন স্কিমে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন আরো এক হাজার ১৩৪ জন। সব মিলিয়ে তিন মাসে মোট চাঁদা দিয়েছেন ১৫ হাজার ৯০৫ জন। চার স্কিমের মধ্যে প্রগতিতে সাত হাজার ২১ জন আট কোটি ৬০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, সুরক্ষায় ছয় হাজার ৫২৮ জন পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা, প্রবাসে ৪৭৪ জন এক কোটি ৪১ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সমতায় এক হাজার ৮২২ জন ৪৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা চাঁদা জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রবাস স্কিম, প্রগতি স্কিম, সুরক্ষা স্কিম এবং সমতা স্কিম- এ চার স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে সরকার। চালুর প্রথম দিনে বেশ ভালোই সাড়া মেলে। যারা মাসিক ৫০০ টাকা জমাবেন, তাদের জন্য শুরু থেকেই থাকবে সরকারের আরো ৫০০ টাকার ভর্তুকি। সব মিলিয়ে সবার জন্যই থাকছে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বাড়তি কয়েকগুণ মুনাফা। অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পৃথিবীর বহু দেশেই চালু আছে জাতীয় পেনশন ব্যবস্থা। যেগুলো চলছে ঠিকঠাক। বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন খাতে জমা হওয়া অর্থ যাবে লাভজনক বিনিয়োগে, তা থেকে প্রাপ্ত মুনাফাই জমা হবে স্কিমের খাতায়। আর পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়ার যোগ্য হবেন এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে, যা সর্বজনীন পেনশন আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ কর্তৃক ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস করা হয়। বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) ১৭ আগস্ট সকালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত করা হয়।

সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আপাতত চার ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি স্কিম, অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম আর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রয়েছে সমতা স্কিম।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/792820