৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৮:০২

১২ দিনেও মেলেনি আমদানির অনুমতি

ডিমের দাম ক্রেতার নাগালে রাখতে সরকার হাঁকডাক দিয়ে আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে অনুমতি দেওয়ার ১২ দিন পরও অনুমতিপত্র পাননি আমদানিকারকরা। বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে এই খাদ্যপণ্য।

আমদানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, অনুমতিপত্র না পেলে এলসি খোলা যাবে না। তা ছাড়া কোন এইচএস কোডের অধীন অর্থাৎ আমদানি শুল্ক কত হবে– সে বিষয়ে তাদের স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। সে জন্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এ পরিস্থিতিতে আগামীকাল রোববার দিকনির্দেশনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন তারা।

বাজারে ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর এসব পণ্যের দর নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দর নির্ধারণ করা হয় ১২ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি ডজনের দর ১৪৪ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু বেঁধে দেওয়া এ দর কার্যকর না হওয়ায় প্রথমবারের মতো গত ১৮ সেপ্টেম্বর চারটি প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ২১ সেপ্টেম্বর আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক প্রায় চার কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে ১০ কোটি ডিম দিয়ে দুই থেকে তিন দিনের চাহিদা মিটবে। আমদানিকারকদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তাদের কেউই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক দপ্তর (সিসিআইই) থেকে অনুমতিপত্র পাননি। এ বিষয়ে মীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. পিয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও অন্যান্য প্রক্রিয়ার জটিলতায় আমদানি করা যাচ্ছে না। এখনও সিসিআইই থেকে অনুমতিপত্র পাইনি। সে জন্য ব্যাংকে এলসি খোলা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া ডিম আমদানি করলে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোন এইচএস কোডের অধীনে আমদানি করতে হবে, অর্থাৎ আমদানিতে কী পরিমাণ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে, সেসব বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।’

টাইগার ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান সমকালকে বলেন, গত রোববার সিসিআইই থেকে অনুমতিপত্র পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পাইনি। আশা করি, রোববার (আগামীকাল) পাব। অনুমতিপত্র বন্দরে পাঠাতে হবে। তার পর এলসি খোলা হবে। আমদানির অনুমতিপত্রেই এইচএস কোড তথা আমদানি শুল্কের হার উল্লেখ থাকবে বলে জানান তিনি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বনানী, মহাখালী ও হাতিরপুল কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৮ থেকে ১৫০ টাকা দরে। তবে তুলনামূলক কিছুটা কমে কারওয়ান বাজারে বাদামি ডিম ১৪৫ থেকে ১৪৮ এবং সাদা ডিম ১৪৪ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বনানী ডিএনসিসি কাঁচাবাজারের কলি স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. রায়হান সমকালকে বলেন, পাইকারিতে সম্প্রতি প্রতি ১০০ ডিমে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছিল। তবে এখন আবার বেড়েছে। ১০০ ডিম কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া আছে। পরিবহনের সময় কিছু ডিম ভেঙে যায়। সব মিলিয়ে হিসাব করলে প্রতিটি ডিমের কেনা দর পড়ে সাড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকার মতো। তাই ১২ টাকায় বিক্রি হবে কীভাবে?

তবে বড় ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারিতে দাম কমেছে। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ সমকালকে বলেন, বর্তমানে ১ হাজার ৯০ টাকায় পাইকারিতে ডিম বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় প্রভাব পড়ার কথা। তবে আমদানি হলে দাম আরও কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

https://samakal.com/economics/article/2309198761