২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ১০:১০

পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এনআইডি সেবা বন্ধ, ভোগান্তিতে সেবাগ্রহীতারা

আজ মঙ্গলবার সারা দিন জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেবা বন্ধ রাখা হয়। বুধবার বেলা ২টার পর থেকে পুনরায় সেবাটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এনআইডি সেবা বন্ধের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি কমিশন। গণমাধ্যমেও বিষয়টি পরিষ্কার করতে মুখ খোলেনি ইসির কেউ। শুধু নিজেদের ইন্টারনাল সার্ভারে নিজস্ব কর্মকর্তাদের একটি মেসেজ দিয়ে দায় সেরেছে কমিশন।

ইসির ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবস্থাপনা অধিশাখার (এনআইডি) সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলামের পাঠানো এক বার্তায় উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার সকাল থেকে সার্ভারের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলমান বিধায়, এনআইডিসংক্রান্ত সকল সেবা বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

এনআইডি সেবা বন্ধের বিষয়ে ইসি সূত্র জানায়, বর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকার কাজ চলছে। এই জন্য মাঝে মাঝে সার্ভারে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে সার্ভারে জায়গা বাড়ানোর কাজ চলছে। সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বুধবার চালু করা হলেও এনআইডি সেবা কার্যক্রম আরও বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে বলেও জানা গেছে।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এনআইডি সেবা হুট করে বারবার বন্ধ রাখার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ইসি কর্মকর্তাও। তাদের মতে, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেবা বন্ধের আগে জনসাধারণের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা প্রয়োজন। অনেকেরই এনআইডিসংক্রান্ত কাজ থাকে। এ ছাড়া ইসি থেকে ১৭১টি প্রতিষ্ঠান এনআইডি যাচাইসংক্রান্ত সেবা নেন। সাধারণ মানুষসহ এসব প্রতিষ্ঠানও পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এই সেবা বন্ধ থাকায় নানান ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই কমিশনের উচিত এই সেবা বন্ধ করার আগে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা।

জানা যায়, এর আগে সাইবার হামলা ঠেকাতে গত ১৪ আগস্ট রাত ১২টা থেকে প্রায় ৩৮ ঘণ্টা এনআইডির সার্ভার বন্ধ রাখার পর গত ১৬ আগস্ট বেলা ২টার দিকে চালু করে ইসি। সম্প্রতি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নাগরিকের তথ্য বেহাতের ঘটনা প্রকাশ হয়। এরপর আইসিটি বিভাগের নির্দেশনায় বিষয়টি আমলে নিয়ে এনআইডি সার্ভারের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজস্ব সার্টও গঠন করেছে ইসি।

এদিকে ‘ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্স’ নামে হ্যাকার গ্রুপ আগেই ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছিল। এই বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার বিজিডি ই-গভ সার্ট প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাইবার হামলা যেকোনো সময় হতে পারে। এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সাইবার হামলার খবর পাইনি।’

সাইবার হামলার বিষয়ে সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
এর আগে গত ৩১ জুলাই সাইবার হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে সার্ট জানায়, ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ। সেই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ৯ আগস্ট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর ২৯টি সংস্থাসহ অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করে আইসিটি বিভাগ। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইটি দুর্বলতা নিরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সিআইআইভুক্ত ২৯ প্রতিষ্ঠানকে সার্ট গঠন করতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়ন করেনি বলে জানা গেছে।

ওই সাইবার হামলার হুমকি আসার পর গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে ১১ দফা নির্দেশনা দেয়। এরপর বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কিছু হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এগুলো বড় ধরনের হামলা না হলেও এসব হামলা হুমকির অংশ কি না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

https://www.ajkerpatrika.com/292988