উচ্চমূল্যের বাজারের লাগাম টানতে সম্প্রতি আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে জোরালো পদক্ষেপ নেবার কথাও জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী।
নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের প্রভাবে মানুষ বহুদিন ধরেই হাঁসফাঁস করছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষ আশা করেছিল, নতুন এ উদ্যোগ কার্যকর করতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। কিন্তু সারাদেশে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের নির্ধারিত মূল্য কার্যকর হয়নি। বেধে দেয়া দাম খোদ টিসিবি-ও কার্যকর করেনি।
পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অসাধুদের অতি মুনাফা রোধে সরকারিভাবে একাধিকবার একাধিক পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই দাম কার্যকর করা যায়নি। বাড়তি দামেই পণ্য কিনতে হয় জনগণকে। এবারও অবস্থা তথৈবচ। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বহু ছাড় দেয়া হয়েছে। আর ছাড় দেয়া অনুচিত। আলু, ডিম, পেঁয়াজ নিয়ে কারা অসাধু পন্থায় অতি মুনাফা করছে সেতথ্য কর্তৃপক্ষের জানা। কাজেই সরকারের উচিত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, দেশে আলুর যথেষ্ট ভালো ফলন হয়েছে। এরপরও কেন আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সবাই মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তিনি বলেছেন পেঁয়াজ, আলু, ডিমের বেধে দেয়া দাম জোরালোভাবে মনিটরিং হচ্ছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা যোগসাজশের মাধ্যমে কীভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয় তা বহুল আলোচিত। সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধ করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জনগণ জোরালো ভূমিকা দেখতে চায়। প্রকৃতপক্ষে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণেই মধ্যস্বত্বভোগী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া। এ দুর্বলতা কাটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকার কর্তৃক পণ্যের দাম বেধে দেয়া হলেও কেন তা কার্যকর হয় না, সেরহস্য উদ্ঘাটনে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। অতীতে দেখা গেছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাঝেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা আরও বেড়েছে। কেন এমনটি ঘটে? বাজার তদারকি সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাতের বিষয়টিও ভেবে দেখতে হবে। কাজেই সর্ষের ভূত তাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় এ ভূত জনগণের ঘাড়ে আরও চেপে বসবে। সাধারণ মানুষকে আরও বেশি দামে পণ্য কিনতে হবে।
