২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৫৯

ডেঙ্গুতে প্রাণহানি ৬০০ ছুঁই ছুঁই

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিলে প্রায় ৬০০ জনের নাম যোগ হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল ততই দীর্ঘ হচ্ছে। একদিনে আরও ৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯৭ জনে। দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগী মৃত্যু ও শনাক্তে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৩৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানীতে ৫৮ হাজার ৬১০ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৬ হাজার ৭৩২ জন। মৃত ৫৯৭ জনের মধ্যে নারী ৩৪৭ জন এবং পুরুষ ২৫০ জন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ১৫৮ জন এবং রাজধানীতে ৪৩৯ জন।

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ৬৪ শতাংশই শক সিনড্রোমে হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায় নেই।

ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে গতকাল বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ৫৩৪ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৫৮৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৯৪৫ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ১ হাজার ৫৩৪ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৪৮ জনে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৮১৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ৫৩০ জন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাইতে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২০৪ জন। আগস্টে ৭১ হাজার ৯৭৬ জন শনাক্ত এবং প্রাণহানি ৩৪২ জন।

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ৬৪ শতাংশই শক সিনড্রোমে: এ বছরে ডেঙ্গুতে ৬৪ শতাংশ রোগীরই মৃত্যু হয়েছে শক সিনড্রোমে। এই শক সিনড্রোমে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের বাইরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়।

প্রতিবেদনটি করা হয় বাংলাদেশের ডেঙ্গুর সার্বিক অবস্থা নিয়ে। এতে বলা হয়, ৬৪ শতাংশ মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এছাড়া মৃত্যুর অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোমে ২৩ শতাংশ, হেমোরোজিক ফিবারে ৯ শতাংশ ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোমরবিডিটি রোগী ৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা সিটির বাইরে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ ঢাকার বাইরে ৭৩ শতাংশ মৃত্যুই হয়েছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে। অন্যদিকে ঢাকায় শক সিনড্রোমে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ শতাংশের।

https://mzamin.com/news.php?news=72057