১৯ আগস্ট ২০২৩, শনিবার, ৮:১১

ডেঙ্গুতে শিশু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঢাকা শহরে

ঢাকাসহ সারা দেশেই শিশুরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে দেশের অন্য সব এলাকার চেয়ে ঢাকা শহরে শিশু ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এর সঠিক কারণ এখনো জানা যাচ্ছে না।

গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত সারা দেশে নতুন করে আরও ১ হাজার ৫৬৫ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে এই বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগী ৯৫ হাজার ৮৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা শহরের শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করার সুযোগ বেশি। এ ছাড়া আক্রান্ত শিশুদের ঢাকার হাসপাতালগুলোতে পাঠানোর (রেফার্ড) প্রবণতাও বেশি। তবে এসবই ধারণা, সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা

কন্ট্রোল রুম ঢাকা শহরের এবং বাইরের রোগীর তথ্য পৃথকভাবে দেয়। তাতে রোগীদের বয়সভিত্তিক বিভাজনও থাকে। তাতে দেখা যায়, ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৬ হাজার ৯৩৩ জন। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু ১১ হাজার ৮৬১ জন। অর্থাৎ ঢাকা শহরে মোট রোগীর ২৫ শতাংশই শিশু।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঢাকা শহরের বাইরে সারা দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ৯৪৪। তাতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা শহরের বাইরে রোগীর সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী ৭ হাজার ৫ জন। সে হিসাবে এই বয়সী শিশু ডেঙ্গু রোগী সেখানকার মোট রোগীর ১৫ শতাংশ।

এখানেই পার্থক্যটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ঢাকা শহরে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের আক্রান্তের হার ঢাকা শহরের বাইরে আক্রান্ত শিশুদের হারের চেয়ে ১০ শতাংশ বিন্দু (পার্সেন্টেজ পয়েন্ট) বেশি।কিন্তু কেন এই হার ঢাকা শহরে বেশি?

এর কারণ কী হতে পারে, তা জানতে একাধিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ববিদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার জন্য রোগতাত্ত্বিক গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, এর পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, পরিসংখ্যান বলছে সারা দেশের তুলনায় ঢাকা মহানগরের জনসংখ্যায় শিশুদের হার বেশি, সে কারণে আক্রান্তের ঝুঁকি শিশুদের বেশি। দ্বিতীয়ত, ঢাকা শহরের বাইরের বয়স্ক রোগীদের অনেকেরই ভ্রমণ ইতিহাস আছে, তাঁরা ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। সেই ইতিহাস শিশুদের ক্ষেত্রে কম। ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া রোগীদের সংখ্যা বাদ দেওয়া সম্ভব হলে দেখা যাবে বয়স্ক রোগীদের অনুপাত কম এবং শিশুদের অনুপাত বেশি।

এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা শহরের শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করার সুযোগ বেশি। এ ছাড়া আক্রান্ত শিশুদের ঢাকার হাসপাতালগুলোতে পাঠানোর (রেফার্ড) প্রবণতাও বেশি। তবে এসবই ধারণা, সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

গতকাল ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৪৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে ৫৯ জনের বয়স ১৫ বছরের নিচে।

https://www.prothomalo.com/bangladesh/tmmz2qpkct