১০ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৩:৫১

ভয়াবহ বন্যায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে লাখো মানুষ

চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজার বান্দরবানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

তিন জেলায় চারজনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ২

ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার মানুষ। দ্বিতীয় দিনের মতো বুধবারও চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন রয়েছে কক্সবাজার ও বান্দরবানের। বন্যার পানিতে তলিয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রামের রাউজানে ব্যবসায়ী, লোহাগাড়ায় বৃদ্ধ, কক্সবাজারের চকরিয়ায় কিশোর এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে কৃষক। নিখোঁজ রয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়ায় কিশোর ও রাঙামাটির বরকলে এক যুবক। পেকুয়ায় সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কোমরসমান পানিতে ডুবে আছে অনেক এলাকার বাড়িঘর ও প্রশাসনিক ভবন। টিউবওয়েল ডুবে থাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব তিব্রতর হয়েছে। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। অনেক এলাকায় সরকারি বরাদ্দ এখনো পৌঁছেনি। আর যেসব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেছে, তাও অপ্রতুল। গবাদি পশু নিয়ে গোখাদ্যের সংকটে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। বন্যায় বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষক ও মৎস্যজীবীদের। পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ভেসে উঠছে ক্ষত। অনেক সড়ক ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত বাড়িঘর, ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের ক্ষতি দেখা যাচ্ছে। বুধবারও অনেক এলাকা বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন ছিল। দুর্গত মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম, রাউজান, লোহাগাড়া ও কর্ণফুলী : টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার ও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় সকালে সড়কের ওপর থেকে পানি কিছুটা কমলেও দুপুরের পর বৃষ্টিতে তা আবারও বেড়ে যায়। এ কারণে সড়ক যোগাযোগ চালু হয়নি। তবে আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যান চলাচল করছে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বেশকিছু উপজেলার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া। এ দুই উপজেলায় দুর্গত মানুষের পাশে থেকে কাজ করছে সেনাবাহিনী। বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের সাতকানিয়ার মৌলভীর দোকান থেকে সাতকানিয়া রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় কয়েক কিলোমিটার সড়কের ওপর অন্তত পাঁচ ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও বুক আবার কোথায় কোমরসমান পানিতে ভাসছে সাতকানিয়ার কেরানীহাট, সাতকানিয়া সদর। কোমরসমান পানিতে ডুবে গেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া থানা ভবন। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। অন্যান্য উপজেলার মানুষও অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এদিকে পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। টাকার অঙ্কে যা শতকোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের। খেতের ফসল, পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়া, ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে যাওয়া ছাড়াও গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আকস্মিকভাবে সৃষ্ট এ বন্যায়।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎবিহীন এবং বিশুদ্ধ পানির সংকটে সেখানে বিরাজ করে হাহাকার অবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে যতই পানি নামছে, ততই ক্ষতের চিহ্ন ভেসে উঠছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর বিটুমিন, ইট, বালি ওঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এসব গর্তের অধিকাংশে আবার জমে আছে পানি। দূর থেকে মনে হয় মিনি পুকুর। এসব গর্তে আটকে যাচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনও। এতে যান চলাচলে বাড়াচ্ছে ভোগান্তি। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে।

রাউজানে হালদা নদীর শাখা খালে বন্যার পানির প্রবল স্রোতে ডিঙি উলটে নিখোঁজ হওয়ার ৩৪ ঘণ্টা পর তরুণ ব্যবসায়ী শাহেদ হোসেন বাবু নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৪টায় লাশটি উপজেলার মোকামীপাড়া হালদা নদীর ছায়াচরে স্থানীয়রা দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে সেখান থেকে এলাকার লোকজন লাশ শনাক্ত করে নিয়ে আসেন। তিনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের উজির আলী মিয়াজীর বাড়ির এসএম ইউসুফ সিআইপির বড় ছেলে।

এছাড়া বুধবার সকালে লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের চুনতিপাড়া খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় কৃষক আসহাব মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চট্টলা পাড়ার কালু মিয়ার ছেলে।

কর্ণফুলী উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাড়ির বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে উপজেলার শিকলবাহা, চরপাথরঘাটা, জুলধা এবং চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সোমবার বিকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ ইউনিয়নে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। জরুরি মুহূর্তে যোগাযোগের জন্য কন্ট্রোল রুমও খুলেছে প্রশাসন।

কক্সবাজার, চরিয়া ও পেকুয়া : মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির মাত্রা কমে এসেছে। বুধবার ভোরে হালকা বৃষ্টি হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। এ পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। স্রোতের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, মহাসড়ক, কালভার্ট ভেসে উঠছে। এছাড়া বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, বসতঘর যেন সে ক্ষতের চিহ্ন বহন করছে। তবে পানি নামতে শুরু করায় যারা ঘরে ফিরেছেন, তারা পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। রান্না করে খাওয়ার কোনো পরিবেশ নেই। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। বুধবার সকালে চকরিয়া উপজেলার কয়েকটি সড়কে দেখা মেলে ভাঙনের তীব্রতা। এর মধ্যে কাঁকড়া-মিনাবাজার সড়কটির ৩ কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি ভাঙন সড়কটিকে চলাচল অনুপযোগী করে দিয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, ‘চার দিন ধরে কমপক্ষে ৪-৫ ফুট পানিতে বন্দি অবস্থায় ছিলাম। এখন পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে সড়কের ভাঙন, বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের ক্ষতি দেখা যাচ্ছে।

ঘরবাড়িতে রান্না করার সুযোগ নেই। বাড়ির ভেতরে পানি বের করার চেষ্টা করছি। খাবার পানিও পাওয়া যাচ্ছে না।’ বন্যাকবলিত কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশে ভাঙন রয়েছে। মাতামুহুরী নদী নিকটবর্তী গ্রামের বসতঘরগুলো স্রোতের তোড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। চকরিয়া ও পেকুয়ায় বেশ কয়েকটি বেঁড়িবাধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকেছে পানি। চকরিয়ার পৌর শহরের শপিং কমপ্লেক্স, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়া পানি বের করার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বুধবার সকালে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এলাকায় মাতামুহুরি নদী থেকে বৃদ্ধ আনোয়ার হোসেনের লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। তার বাড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড নয়াপাড়ায়। একই দিন দুপুরে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউপির ৩নং ওয়ার্ড হাজী রওশন আলীপাড়াসংলগ্ন রেললাইনের কালভার্টের নিচে স্থানীয় আবদুল মালেক মানিকের ছেলে মোহাম্মদ আসিফ (১২) বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। পেকুয়া সদরের আনর আলী মাতব্বরপাড়ায় সাপের কামড়ে নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন।

অনেকে সড়ক বা উঁচু কোনো স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বহু মানুষ ঘরের ভেতরে মাচা বেঁধে বসবাস করছেন। কোনো ঘরের চুলায় আগুন জ্বলছে না। এতে খাওয়াদাওয়ার সমস্যায় পড়েছে এলাকার মানুষ। টিউবওয়েলগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান ও নাইক্ষ্যংছড়ি : বৃষ্টিপাত কমায় চার দিন পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে সব উপজেলা এবং সারা দেশের সঙ্গে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। চার দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন জেলায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ প্লাবিত এলাকা ও সড়কের বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে বান্দরবান-কেরানীহাট-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হলুদিয়া, বায়তুলইজ্জত এলাকায় সড়কে পানি ওঠায় সারা দেশের সঙ্গে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তিন দিন ধরে। পাহাড়ধসে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলা সদরের মেম্বারপাড়া, আর্মিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, ওয়াপদা ব্রিজ এলাকা এবং লামা, আলীকদম উপজেলায় এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। জেলায় দুই শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। বুধবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়িতে বন্যার পানির স্রোতে নিখোঁজ ফংছা মার্মা নামে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি সোনাইছড়ির ঠাকুরপাড়ার ৪নং ওয়ার্ডের মংক্য মার্মার ছেলে।

রাঙামাটি : ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্গত লোকজনের দুর্ভোগ এখন চরমে। যদিও প্রশাসন দুর্গত লোকজনের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে। জেলায় টানা বর্ষণে পাহাড়ধসে সড়ক ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। এতে বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে বিস্তর ফসলি জমি ও অসংখ্য বাড়িঘর তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। দুর্গত মানুষের সহায়তায় জরুরি ত্রাণ বিতরণসহ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সদরসহ জেলায় ২০৫ স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৪৭টি বাড়িঘর। বিভিন্ন সড়কে ভাঙন হয়েছে ৪৯ স্থানে। কালভার্ট ক্ষতি হয়েছে ৯টি। এসব কারণে বিভিন্ন সড়কে সাময়িকভাবে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। ফলে বাঘাইছড়ির সাজেকে আটকা পড়েন তিন শতাধিক পর্যটক। এছাড়া পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর ফসলি জমি। বিদ্যুতের খুঁটি হেলে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ সংযোগ।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলায় প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। এতে তলিয়ে গেছে ২ হাজার ৩২৪টি বাড়িঘর, ৭টি বাজারসহ বিস্তর ফসলি জমি। বরকলে প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন এক যুবক।

খাগড়াছড়ি : বন্যা পরিস্থিতির কিছু উন্নতি হলেও এখনো প্লাবিত নিচু এলাকা। সদর উপজেলার পানি কমলেও এখনো পানিবন্দি দীঘিনালা উপজেলার ৩ ইউনিয়ন। এতে বন্দি হয়ে আছে অন্তত ৯শ পরিবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে মেরুং ইউনিয়ন।

ইউনিয়নের সাত আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় মাইনী নদীর পানি নিচু এলাকার দিকে প্রবাহিত। এতে মাইনীর উজানে পানি কমলেও তুলনামূলক নিচু এলাকা মেরুংয়ের বন্যার পানি স্থির রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে আছে আমনের মাঠ। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে উপজেলার শতাধিক পুকুর। মেরুং ইউনিয়নের চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক মাস আগে তিন কানি জমিতে আমনের চারা রোপণ করেছি। এখন তা পানির নিচে। চারদিন ধরে এ অবস্থা। পানি কমার কোনো লক্ষণ নেই। প্রতি কানিতে ৪ হাজার টাকা করে তিন কানিতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হবে। সময়ও কম। কৃষি বিভাগ যদি সহায়তা করে ভালো হয়।’

এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোন। দুপুরে কবাখালি ও মেরুংয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর নাফিজ জানান, ‘যতদিন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, ততদিন সেনাবাহিনীর পক্ষে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/705291