৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৫৪

নারায়ণগঞ্জে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি

রাতভর ভারী বর্ষণে নারায়ণগঞ্জ সিটি, সদর উপজেলা ও ডিএনডি’র ভেতর বিভিন্ন এলাকার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কসহ পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের এলাকা। সেইসঙ্গে সড়কের দুইপাশে থাকা মার্কেটগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। এতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত সরতে না পারায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

অপরদিকে ডিএনডি বাঁধের ভেতর নারায়ণগঞ্জ অংশের সিংহভাগ এলাকার বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে জনদুর্ভোগ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা-সড়ক হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ডিএনডি’র ভেতর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেই ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের ভেতর হাঁটুপানি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার ভোররাতেই নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান এ সড়ক পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে যায়। আর এই পানি মাড়িয়েই সকালে কর্মজীবী লোকজনকে কর্মস্থলে ছুটতে হয়। এতে করে যানবাহন চলাচলও কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল।

তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কিছুটা কমতে শুরু করলে যানবাহন চলাচল শুরু করে। ভারী বর্ষণের কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল করেছে।

এদিকে, সকালে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানে এসে দেখেন বিভিন্ন মালামাল পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। তাদের অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। শহরের সায়েম প্লাজা মার্কেটের বেবি শপের মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সকালে মার্কেটে এসে দেখি আমার দোকানে পানি। প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকার মালামাল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখান থেকে বেছে বেছে যেগুলো ভালো আছে সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছি।

নারায়ণগঞ্জ দোকান মালিক কমিটির সহ-সভাপতি আস সাফী বলেন, রাতের বৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু সড়কের দুইপাশে প্রত্যেকটি মার্কেটেই পানি প্রবেশ করে। দোকানগুলোতে পানি প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।

নাসিক’র ১৩নং ওয়ার্ডের জামতলা ধোপাপট্টি এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ জানান, প্রতিবছরই বৃষ্টির মৌসুমে ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যায়। হাঁটুপানির মধ্যে সবকিছু ফেলে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি পরিবার নিয়ে।

পথচারী আমির হোসেন (৫০) ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, রাতে বৃষ্টি হয়েছে, এখন সোমবার সন্ধ্যা ৬টা বাজে, অথচ বঙ্গবন্ধু সড়কের পানি পুরোপুরি সরেনি। সিটি করপোরেশন কি করে? ট্যাক্স বাড়ানোর বেলায় কাউকে জিগায় না, কিন্তু নগরবাসীর র্দুভোগ লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নেই।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, সারারাত অতিবৃষ্টির কারণে শহরের সব মহল্লা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আমরা ভোর থেকেই কাজ শুরু করেছি। আর যদি বৃষ্টি না হয় পানি নিষ্কাশন সম্পন্ন হয়ে যাবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য অহেতুক আমাদের গালমন্দ না করে একটু ধৈর্য্য ধরুন। সাময়িক কষ্টের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

ওদিকে ডিএনডি’র ভেতর ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ অংশের অবস্থা ভয়াবহ। শিল্পকারখানার কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত ও ময়লা পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

https://mzamin.com/news.php?news=68367