৫ আগস্ট ২০২৩, শনিবার, ১:২৭

বেড়েছে মুরগির দাম ॥ মাছের বাজারেও অস্থিরতা

দফায় দফায় বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। কখনো পেয়াঁজ, কখনো মাছ, কখনো সবজি। একেক সময় একেকটি পণ্যের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হয়ে উঠে। সে দাম কমার আর কোন লক্ষন দেয়া যায় না। এবার দাম বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগীর। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। মাছের বাজারেও নেই স্বস্তি। এতে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজারে দেখা যায়, মাছ ও মুরগির পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাজারে ক্রেতার সমাগমও আছে বেশ। কিন্তু মাছ ও মুরগির দাম নিয়ে স্বস্তি নেই তাদের মনে।

মুরগি বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়, সোনালি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় ও লেয়ার ৩৫০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এ বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়, সোনালি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় ও লেয়ার ৩৩০ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এদিকে গত সপ্তাহে আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতিপিস হাঁস এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। কবুতর বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা প্রতিপিস।

এদিকে আগের মতোই আছে গরু ও খাসির গোশতের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি গরুর গোশত ৭৫০ টাকা, খাসির গোশত এক হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের গোশত এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ৪০০ টাকার নিচে খুব কম মাছই পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রত্যেক ধরনের মাছের দামই আকাশছোঁয়া। বাজারে প্রতিকেজি ইলিশ মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, পুঁটি ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ৩০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা ১ হাজার টাকা, বাইলা ১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ৩০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬৫০ টাকা, হরিনা চিংড়ি ৬৫০ টাকা, টাটকিনি ৮০০ টাকা, বাতাসি ১ হাজার ২০০ টাকা, কাজলী ১ হাজার ২০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় ৭৫০ টাকা, কোরাল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পোয়া ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, ফলি ১ হাজার ২০০ টাকা, চাপিলা ৬০০ টাকা, শিং ৪৫০ টাকা, মাগুর ৮০০ টাকা, শোল ৬০০ টাকা, কাইক্কা ৪০০ টাকা, লইট্টা ২০০ টাকা ও কই ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দাম সর্ম্পকে মাছ বিক্রেতারা জানান, মাছের তো সরবরাহই কম। তাই দাম বেশি। বর্ষাকালে নদ-নদীতে পানি আসছে। মাছেরা নতুন ডিম ছাড়ছে। কিছুদিন পর বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম কিছুটা কমবে।

এদিকে মাছ ও মুরগির আকাশছোঁয়া দামের কারণে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের। বাজারে তাদের দীর্ঘক্ষণ বিক্রেতাদের সঙ্গে পণ্যের দাম নিয়ে দর কষাকষি করতে দেখা গেছে। দরাদরি করে কেউ বাধ্য হয়ে বাড়তি দামেই কিনছেন, কেউবা আবার পণ্য না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার করছেন।

এদেিক কাঁচা মরিচ নিয়ে বেশ লঙ্কাকা- হয়েছিল, সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায় এবার। পরে আমদানি ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফলন ভালো হওয়া দাম কমে ১৬০ টাকায় আসে। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন সবজি বাজারে দেখা যায়, বাজারে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ঢ়্যাঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর (দেশি) ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল-চিচিংগা ৫০ টাকা, আলু ৪০ টাকা কেজিতে। জালি ৪০ টাকা পিস, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে।

বাজারে দেখা যায়, হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি ৭০ টাকা, ডজন ২১০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা, ডজন ২৪০ টাকা। ব্রয়লার সাদা হালি ৪৫ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা, ব্রয়লার লাল হালি ৫০ টাকা, ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মুদি পণ্যের তেল, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য বৃদ্ধি পাওয়া জিনিসপত্রের দাম এখনো কমেনি।

https://dailysangram.info/post/531800