২৭ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৬:০১

মুগদা হাসপাতালে ডাক্তারের সাথে হাতাহাতি

ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুসন্তানকে ভর্তি করাতে গিয়ে বাবা গ্রেফতার

রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুসন্তানকে ভর্তি করতে গিয়ে চিকিৎসকদের সাথে হাতাহাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন এক বাবা। তার নাম হাবিবুর রহমান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাবি করছেন ওই রোগীর বাবা ডিউটিরত ডাক্তারকে মারধর করলে তারা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। রোগীর স্বজনরা দাবি করছেন, চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে ওই রোগীর বাবাকে রুমে আটকে বেধড়ক মারধর করেছে। এর পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ বলছে, হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে মুগদা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আহমেদুল কবীর বলেছেন, মুগদা হাসপাতালে একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।

রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুসন্তানকে দুপুরে মুগদা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান হাবিব। কিন্তু জায়গা খালি না থাকায় তার সন্তানকে ভর্তি না করে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে বলেন জরুরি বিভাগ থেকে। তখন হাবিব ডিউটিরত ডাক্তারকে ডেকে তার সন্তানের শারীরিক অবস্থাটা দেখতে বলেন। কিন্তু ডাক্তার বিশ্রাম নিচ্ছে বলে তাকে চলে যেতে বলা হয়। এর পর হাবিব সেখানে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ডাক্তার আসলে তার সাথে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। পরে হাবিব উত্তেজিত হয়ে উঠলে তাকে ডাক্তার ওয়ার্ডবয়সহ অন্যরা টেনে-হিঁচড়ে একটি রুমে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ প্রথমে আটক দেখালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করায় তাকে গ্রেফতার দেখায়।

এ দিকে ডা: আহমেদুল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, যতটুকু জেনেছি একটি শিশু নিয়ে তার বাবা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু ইতোমধ্যে হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুইজন শিশুকে একটি বিছানায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নতুন করে শয্যা ফাঁকা না হওয়ায় শিশুর বাবাকে পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করা হয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে শিশুটির বাবা চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন।

আহমেদুল কবির বলেন, এক পর্যায়ে শিশুটির বাবা চিকিৎসকের কলার ধরেন এবং কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মুগদা হাসপাতালে ইতোমধ্যে ৬ শতাধিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এখন আর নতুন করে কোনো রোগী ভর্তিতে মুগদা ক্যাপাবল নয়। চিকিৎসকরা রাত-দিন রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় যদি রোগীর স্বজনরা এভাবে চিকিৎসকদের ওপর হামলা করেন, তাহলে চিকিৎসকরা সব সময় হাইপার হয়ে থাকবেন এবং সেবা দিতে চাইবেন না।

মুগদা থানার ডিউটি অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রথমে হাবিবুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/765370