২৩ জুলাই ২০২৩, রবিবার, ৩:১৩

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার মানুষের রয়েছে : জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেছেন, মানুষের কথা বলার, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। আর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব মানুষের এসব অধিকার রক্ষায় সহায়তা করা।

গতকাল নিউ ইয়র্কে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে সরকারবিরোধী হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এতে অন্তত দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশ’ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চান। জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আপনি কি মনে করেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ রয়েছে?

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আশরাফুল আলমের (হিরো আলম) ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের টুইটের পর বিশ্বসংস্থার প্রতিনিধিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠিয়ে সরকারের অসন্তোষ প্রকাশের বিষয়টি ব্রিফিংয়ে উঠে আসে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একজন সাংবাদিক জানতে চান, কোনো ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করার প্রতিক্রিয়ায় অসন্তোষ জানাতে কোনো সদস্যরাষ্ট্র জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে তলব করতে পারে কি না? বিষয়টি সম্পর্কে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অবগত কি না?

জবাবে স্টিফেন দুজারিক বলেন, বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের যে দলটি কাজ করছে, তাদের ওপর মহাসচিবের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। সদস্য দেশের সরকার পক্ষ থেকে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে তলব করাটা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। সমন্বয়কারীর বলা কোনো কথার সাথে কোনো দেশের দ্বিমত থাকলে সংশ্লিষ্ট সরকার তলব করতেই পারে। এটাই যথাযথ প্রক্রিয়া। যখন কোনো বিষয় নিয়ে অসন্তোষ থাকে, তখন জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশগুলো এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। তবে বাংলাদেশে কমর্রত জাতিসঙ্ঘের দলের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

হিরো আলমের ওপর হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাকায় জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কের কার্যালয় গত মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় বলেছিল, সহিংসতা ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নেয়ার মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সুরক্ষা দিতে হবে। একই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে সাক্ষাতে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস ঘটনাটি নিয়ে আলাপ করেন।

পরদিন হিরো আলমের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১৩টি বিদেশী মিশন যৌথ বিবৃতি দেয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিবৃতিদাতাদের ‘অ্যাক্টিভিস্ট ডিপ্লোমেট’ হিসাবে আখ্যায়িত করে সাংবাদিকদের প্রতি তাদের বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আসাদ আলম সিয়াম জাতিসঙ্ঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে তলব করে টুইটের ব্যাপারে সরকারের অসন্তোষের কথা জানান। একইসাথে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য তাকে সতর্ক করা হয়।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/764326